মানব ত্বকের প্রধান কর্মযজ্ঞ হলো:
শরীরে পানি ও ইলেকট্রো লাইটের ভারসাম্যতা রক্ষা করা
দেহ তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা
অণুজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রাচীর
আঘাত, পরিবেশে থাকা নানা বিষ পদার্থ ও ক্ষতিকর আলট্রা ভায়োলেট সূর্যরশ্মি হতে সুরক্ষা বন্দোবস্ত
ভিটামিন উৎপন্ন করা
ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধী সংস্থার প্রাথমিক নিরীক্ষা যন্ত্র
‘সুন্দর বটে তবে অঙ্গদখানি’—কসমেটিক সৌন্দর্য
স্পর্শ ইন্দ্রিয়
মা ও সন্তানের মাঝে প্রগাঢ় আত্মিক বন্ধন স্থাপনা
নবজাতকের স্নান
গোসল নবজাতক শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রধান পথ। গর্ভ হতে লেপ্টে থাকা রক্ত, ভারনিস্ক, এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ভাইরাসর মতো জীবাণু সংক্রমণের হাত কমাতে।
স্বল্প জন্ম ওজনের নবজাতকে গোসল নাড়ি ঝরে না পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা শ্রেয়।
নবজাতক গোসলের সময় পাঁচ মিনিটের বেশি হওয়া উচিত না। গোসলের জল যেন পরিশুদ্ধ থাকে।
সাবান কিংবা ক্লিনারস জীবনের প্রথম কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার না করা।
গরম রুমে স্নান করিয়ে সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে শুষ্ক তোয়ালে দিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ভালোভাবে মুছে নিন এবং মায়ের বুকে দিয়ে দিন।
বেবি পাউডারের ব্যবহার
তপ্ত কিংবা ভ্যাপসা আবহাওয়া কাজ দিলেও নবজাতকের বয়সে এর ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত না।
বেশি ব্যবহারে শিশুর ত্বকের গ্রন্থিগুলো শ্বাসপ্রশ্বাসে ছিদ্র বন্ধ করে দেয়—ঘামাচি তৈরি করে।
বেবি পাউডার শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে ফুসফুসে পৌঁছালে মারাত্মক অসুখ ডেকে আনে।
ডায়াপার এরিয়ার যত্ন
শিশুর এ স্থান প্রায়শ ভেজা থাকে। মলমূত্র এক সঙ্গে মিশে পিএইচ মাত্রা বাড়ায়—ক্ষতি হয় ত্বকের।
ঘরে ব্যবহূত ন্যাপকিন বা বাজারের ডায়াপার ঘন ঘন পাল্টানোই উত্তম।
শিশুর ন্যাপকিনের স্থান সামান্য গরম জল ও কটন তুলায় পরিচ্ছন্ন রাখা যায়।
নাভি, নাক, চোখের যত্ন
ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নাড়ি শুকিয়ে যায় এবং ৫-১০ দিনের মাথায় ঝরে পড়ে। নাভিতে কোনো কিছু লাগানোর প্রয়োজন নেই।
নখ কেটে ছোট ও পরিষ্কার রাখা যায়।
গরম জলে কটন সোয়াব ভিজিয়ে খুব আলতোভাবে চোখ পরিষ্কার করতে হবে।
শিশু ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে নারকেল তেল অন্যান্য কেমিক্যালস এজেন্টের তুলনায় বেশি গ্রহণযোগ্য।
প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০১১
Leave a Reply