হঠাৎ করে মাথা ধরা, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, পেট নামা: তখন ঘরে থাকুক ‘খাদ্য দাওয়াই’। যেমন কলা। বড় হিতকরী। উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় খুব উপকারী। বলেন মলি কিম্ব্যাল, স্নোটস-ডায়েট বিশেষজ্ঞ, নিউ অরলিয়েনস। মাত্র ১০৫ ক্যালরি ও ১৪ গ্রাম শর্করা থাকে একটি মাঝারি আকারের কলায়। পেট ভরে, রক্তের সুগারও একটু বাড়ে, ভিটামিন ‘ডি’-এর দৈনিক চাহিদার ৩০ শতাংশ আসে। মগজের ‘সেরোটনিন’ সংকট শতভাবে মোকাবিলার জন্য এ বড় সহায়
রজন: এতে আছে আঁশ ও পটাশিয়াম। DASH (Dietary Approaches to Stop Hypertension) ডায়েটে প্রস্তাবিত দুটোই—উচ্চরক্তচাপে সফল। আঙুর থেকে আহরিত খাবারে যে পলিফেনোল তা হূদস্বাস্থ্যের জন্য বড় হিতকরী।
দই: কোষ্ঠবদ্ধতা বা গ্যাসে বড় উপকারী। দেড় কাপ টকদই (ঘরে পাতা কাঁচা দই) মলকে সচল করে, সুগম করে মলদ্বার। এতে আছে হিতকরী জীবাণু, পাচক নলের বড় মিত্র, ল্যাকটোজ ও বিনস, যা গ্যাস উৎপন্ন করে; এদেরও দমন করতে সাহায্য করে পাচক নলকে।
খোবানি: কুলজাতীয় ফল। খোবানিতে আছে ২ গ্রাম আঁশ, ৩২৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ইত্যাদি। এরা কিডনিতে স্টোন হওয়া প্রতিরোধ করে।
মাছ: টুনা মাছের কথা বলা হয়। অন্য মাছও হবে। টুনা মাছে প্রচুর ওমেগা-৩ আছে। বিষণ্নতা তাড়ায়। সি ফুড খেলে ভালো হয়।
আদা-চা: বমি ভাব, মোশন সিকনেস, গর্ভ—সব ক্ষেত্রে আদা-চা খুব ভালো।
তুলসী: তুলসীতে আছে ‘ইউজেনল’। এটা পেটে ব্যথা, বমি ভাব, পেট মোচড়ানোতে কাজ দেয়। তুলসীর রস পেট মোচড়ানোতে ভালো কাজ দেয় ইউজেনলের জন্য। সালমোনেলা ও লিস্টার জীবাণুকে বেশ প্রতিহত করে।
নাসপাতি: একটি মাঝারি আকারের নাসপাতিতে আছে ৫ গ্রাম আঁশ। পেকটিনরূপে মন্দ কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে এই আঁশ বেশ কার্যকর।
গাঢ় বাদামি মধু: কাশে বড় কার্যকর। এর মধ্যে যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও জীবাণুরোধী গুণাগুণ আছে, তা গলার প্রদাহে বেশ কাজ দেয়।
বাঁধাকপি: আলসারে উপযোগী। জন হপকিনস স্কুলের ২০০২ সালের গবেষণা। বাঁধাকপিতে সালফোরাকেন আছে। হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামের যে ব্যাকটেরিয়া আলসার তৈরি করে, একে অন্ত্রে পৌঁছে কাজ করার আগেই প্রতিহত করে দেয়। এক কাপ বাঁধাকপি সেদ্ধতে আছে ৩৪ ক্যালরি, ৩ গ্রাম আঁশ এবং দিনের ভিটামিন ‘সি’-এর ৭৫ শতাংশ।
হাঁস বা মোরগের মাংস: নির্ঘুম রাতের জন্য বেশ কার্যকর। ৩ আউন্স খেলে এতে যে ট্রিপটোক্যান আছে, তা থেকে সেরোটনিন ও মেলাটনিন তৈরি হয়—এটা ঘুম আকর্ষণ করে। ট্রিপটোযান হলো অ্যামিনো এসিড, তা থেকে তৈরি হয় নিদ্রা-আকর্ষী হরমোন সেবোটনিন ও মেলাটনিন।
ডুমুর: অর্শ-গেজ রোগে উপকারী। চারটি শুষ্ক ডুমুরে আছে ৩ গ্রাম আঁশ। এতে তৈরি হয় নরম সচল মল এবং নিয়মিত মল চলনের ব্যবস্থা। অর্শ হওয়া প্রতিরোধ করে।
ঘন ফলের রস: এতে যে ফ্রুকটোজ, তা তাড়ায় ক্লান্তি।
রসুন: রসুন ছত্রাক প্রতিরোধে উপকারী। এতে আবশ্যকীয় তেল আছে। ক্যানডিডা অ্যালবিক্যানস ছত্রাক ব্যথা বেদনা ও জননাঙ্গস্রাবের কারণ। রসুন এর বাড়-বাড়ন ব্যাহত করে।
চা: পেট ব্যথা, গ্যাস হলে কাজ হয়। চ্যামমাইল চা আরও ভালো। বুক জ্বলাতে।
আলু: মাথা ধরায় ভালো কাজ দেয়। মাঝারি আকারের আলুতে ৩৭ গ্রাম শর্করা আছে। এটাতে টেনশন ও মাথা ধরা কমে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৫, ২০১১
Leave a Reply