ডাক্তারকে মনে করতে হবে শুধু রোগের চিকিৎসাই যথেষ্ট নয়, রোগীর চিকিৎসাও অত্যন্ত জরুরি।
ষ রোগ সম্পর্কে রোগীকে ভালো করে ধারণা দেয়া এবং নিয়মিত ওষুধ পূর্ণমাত্রায় খাওয়ার বর্ণনা ভালোভাবে দিন। রোগীকে বুঝাতে হবে রোগের ভালো-মন্দ নির্ভর করবে ওষুধ যথাযথভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে। ষ অনেক সময় প্রেসক্রিপশন ঠিকমতো লেখা হয় না প্রেসক্রিপশনে ওষুধের মাত্রা, কত দিন ব্যবহার করতে হবে, কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, খাবার আগে না পরে ইত্যাদি বিষয়ে চিকিৎসককে যথেষ্ট যত্নবান হতে হবেন। ষ যেহেতু টিবি রোগে অনেক ওষুধ একসাথে দিতে হয় সেজন্য অসম্পূর্ণ প্রেসক্রিপশন যেন না হয় সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন। ষ ওষুধ চলাকালে রোগীর উন্নতি না হলে যদি চিকিৎসক আর ওষুধ যোগ করতে চান তখন মনে রাখতে হবে কমপক্ষে যেন ২ বা ৩ টা ওষুধ যোগ করা হয়। ষ রোগী নিজে থেকে ওষুধ বাদ দিলে চলবে না। ষ রোগীকে নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। ষ রোগী ঠিকমতো ওষুধ খায় কি না দেখা উচিত। সম্ভব হলে ওষুধগুলোও দেখা যেতে পারে।
রোগীর কর্তব্যঃ ষ ওষুধ শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই অনেক রোগী ভালো বোধ করেন এবং মনে হবেই না বরং আরো মারাত্মক আকারে যেমন; মাল্ট্রি ড্রাগ রেজিসেন্ট টিবি হতে পারে। এর ফলে রোগী নিজেরও ক্ষতি করবেন এবং সমাজে মারাত্মক আকারে যক্ষা রোগ ছড়াতে সাহায্য করবেন। ষ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে অবশ্যই তা ডাক্তারকে জানাতে হবে। ষ অনেকে টাকা-পয়সার অভাবে ওষুধ কিনতে পারেন না, তাতে অনিয়ম হয়। প্রয়োজনে নিকটবর্তী যক্ষা নিরাময় কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যেতে পারে। ষ রোগীকে বুঝতে হবে যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে অনেক ওষুধ খেতে হয়, তাই ধৈর্যসহকারে নিয়মিত ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরি এবং রোগীকেও নিয়মিত ডাক্তারের কাছে গিয়ে ফলোআপ করাতে হবে।
যক্ষা নিরাময়যোগ্য ব্যাধি। অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রোগীকে পরিবার-পরিজন থেকে আলাদা করার দরকার নেই। স্পেশাল কোনো খাওয়া-দাওয়ার দরকার নেই। নিয়মিত, পরিমিত এবং পূর্ণমাত্রায় ও পূর্ণমেয়াদে ওষুধ সেবন করলে অবশ্যই যক্ষা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।
——————–
ডা. এ বি এম আবদুল্নাহ
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ৯ মার্চ ২০০৮
Leave a Reply