১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় টিকাদান দিবসের দ্বিতীয় রাউন্ড
শিশুকে আবারও পোলিও টিকা কেন খাওয়াবেন?
১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় রাউন্ড। গত ৮ জানুয়ারি ছিল প্রথম রাউন্ড। অনেক বছর ধরে এই জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি চলছে। এই দিনে শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়, সঙ্গে ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং কৃমির ওষুধও খাওয়ানো হয়। প্রতিবার অসংখ্য মা-বাবা আমাদের কাছে জানতে চান পোলিও টিকা তো শিশুকে খাওয়ানো হয়েছে, তার পরও খাওয়াতে হবে কি না এবং কেন খাওয়াতে হবে? আমরা জানি, পোলিও একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগে শিশুর এক বা একাধিক অঙ্গ অবশ হয়ে যায়। ফলে আক্রান্ত অঙ্গ দিয়ে স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। আক্রান্ত অংশের মাংসপেশি শুকিয়ে যায় ধীরে ধীরে। শ্বাস-প্রশ্বাসের পেশি অবশ হলে শ্বাস বন্ধ হয়ে শিশু মারাও যেতে পারে।
প্রতিরোধ
চার ডোজ পোলিও টিকা দিলে শিশুকে এই মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করা যায়। শিশুর ছয় সপ্তাহ বয়স থেকে এক মাস অন্তর তিন ডোজ পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়। অথবা অন্যান্য টিকার সঙ্গে পোলিও টিকা ইনজেকশনের মাধ্যমেও দেওয়া যায়। হামের টিকার সঙ্গে চতুর্থ ডোজ পোলিও দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে পাঁচ বছরের নিচের সব শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়, যাতে করে দেশের সব শিশু সুরক্ষিত থাকে এবং দেশ থেকে পোলিও নির্মূল হয়ে যায়।
পোলিও একটি খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ। যদি একই দিনে দেশের সব শিশুকে পোলিও খাওয়ানো যায়, তাহলে যেসব শিশুর খাদ্যনালিতে পোলিও জীবাণু থাকে, সেগুলো পায়খানার সঙ্গে বের হয়ে যায়। এবং নতুন করে কোনো শিশুকে আক্রান্ত করতে পারে না। বাংলাদেশের সব মা-বাবাকে অনুরোধ করছি, এ কথাটি মনে রাখার জন্য যে আপনার শিশুকে দেড় মাস বয়স থেকে যে টিকা দিচ্ছেন, তার উদ্দেশ্য হলো আপনার শিশুর পোলিও রোগ প্রতিরোধ করা অর্থাৎ আপনার সোনামণির যেন পোলিও না হয়। এবং টিকাদান কর্মসূচিতে যে টিকা খাওয়ানো হয় তার উদ্দেশ্য দেশ থেকে পোলিও নির্মূল করা। সুতরাং যেদিন পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়, সেদিন অবশ্যই আপনার শিশুকে টিকা খাওয়াবেন। আমরা সবাই চাই দেশ থেকে পোলিও চিরতরে নির্মূল হোক। প্রতিটি শিশুই আমাদের মূল্যবান। এবং সব শিশুর সুস্থতাই আমাদের কাম্য। ভালো থাকুন।
অধ্যাপক তাহমীনা বেগম
শিশু বিভাগ
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০৯, ২০১০
Leave a Reply