সমস্যাঃ আমার বয়স ২৩। বছরখানেক কিডনির সমস্যায় ভুগছি। অবহেলার কারণে তীব্র পেটব্যথার তিন মাসের মাথায় চিকিৎসক বলেন, ইউরিন ইনফেকশন। প্রথমে একটি ওষুধ দেন। এরপর ঘন ঘন ব্যথার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় আরেকটি ওষুধ খেতে পরামর্শ দেন। ব্যথা উঠলে বাঁ পাশে পেটে ক্রমাগত সুচের মতো বিঁধে। আমি প্রচুর পানি খাই। প্রস্রাবের বেগ কখনোই ২০ মিনিটের বেশি সহ্য করা সম্ভব হয় না। বেশিক্ষণ হয়ে গেলে আমার পায়ের শিরায় তীব্র টান পড়ে, মাংসপেশি শক্ত হয়ে আসে। এখন আমি চিরতার জল খাই। রোগ নির্ণয়ে দেরি হওয়ার কারণে আমার কিডনির কি স্থায়ী কোনো ক্ষতি হয়ে গেছে? পরে কি বড় কোনো সমস্যা হতে পারে?
প্রাণেশা
ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শঃ সম্ভবত প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করার কারণেই আপনার সমস্যাটি হচ্ছে। তাই পানি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পান করবেন না। আমাদের শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করলে মূত্রাশয়ে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কখনোই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পানি পান করবেন না। সাধারণভাবে দিনে দেড়-দুই লিটার পানি পান করাই যথেষ্ট। আপনি আরও কিছুদিন অপেক্ষা করুন এবং নিজেকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন।
হয়তো সমস্যাগুলো আস্তে আস্তে চলে যাবে। শরীরে যদি রোগই না থাকে তাহলে রোগ নির্ণয়ের প্রশ্নও থাকছে না। তাই চিন্তার কিছু নেই। প্রয়োজন মনে করলে পরে কিডনি অথবা মূত্ররোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
সমস্যাঃ আমার বয়স ১৭ বছর। ওজন ৪৮ কেজি। এক বছর আগে থেকে আমার কোমরের বাঁ পাশে প্রচণ্ড ব্যথা। আমি একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ দেখাই। তাঁর পরামর্শে আলট্রাসনোগ্রাম করাই। পরীক্ষা করে দেখা গেল, আমার কিডনিতে সিস্ট হয়েছে। চিকিৎসক আমাকে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওষুধগুলো খাওয়ার পরও কোনো উপকার পাইনি। আমার প্রশ্ন, এই রোগের জন্য অপারেশন করার প্রয়োজন আছে কি? অপারেশন ছাড়া ওষুধের মাধ্যমে ভালো হওয়া কি সম্ভব?
মুক্তা আক্তার
মধুপুর, ফেনী।
পরামর্শঃ শুধু ওষুধ সেবনের মাধ্যমে কিডনির সিস্টের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন হলে শল্যচিকিৎসা নিতে হবে। তবে শতকরা ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো রকম চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। যদি অ্যাডাল্ট পলিসিস্টিক ডিজিজেস অব দ্য কিডনি (যা দুটি কিডনিতেই একসঙ্গে হয়) হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে। এটি হলে অভিজ্ঞ নেফ্রোলজি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সাধারণ পর্যবেক্ষণে থাকাই যথেষ্ট।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা· এম এ সালাম
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৫, ২০০৮
Leave a Reply