১. বিংশ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত লবণের পাউন্ড বার ছিল আবিসিনিয়া (বর্তমানে যার নাম ইথিওপিয়া)-এর মূল মুদ্রা।
২. বলিভিয়ায় অবস্থিত অত্যন্ত চমকপ্রদ ঝধষধৎ ফব টুঁহর-(বিশ্বের বৃহত্তম লবণের ফ্ল্যাট, যার বিস্তার ৪ হাজার বর্গমাইল) আয়নাসদৃশ হয়ে ওঠে যখন এর ওপর পানির একটা পাতলা স্তর জমে উঠে। এই প্রতিবিম্বন এটাকে অত্যন্ত উপযোগী বৈজ্ঞানিক যন্ত্রে পরিণত করে। এই চমকপ্রদ লবণ ফ্ল্যাটে আরো আছে বিশ্বের অর্ধেক লিথিয়ামের সরবরাহ।
৩. দেহের জন্য লবণ খুবই আবশ্যক। আপনি যদি খুব বেশি পানি পান করেন তাহলে তা সেই লবণ ধূয়ে দিয়ে প্রাণঘাতী নাতিউষ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে।
৪. মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাওয়া প্রাণঘাতী হতে পারে। দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের হিসাবে ১ গ্রাম করে লবণ খেলে মৃত্যু অনিবার্য। একসময় এভাবে লবণ খেয়ে চীনে আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল।
৫. ভাল মানের সামুদ্রিক লবণে দেহের জন্য উপযোগী অনেক খনিজ আছে। সর্বোত্তম মানের সামুদ্রিক লবণ আংশিক ভেজা থাকে।
৬. মধ্যযুগের লবণ এত মহার্ঘ্য ছিল যে কখনো কখনো এটাকে ‘সাদা সোনা’ বলে অভিহিত করা হতো। লবণ পরিবহনের একটি প্রাচীন পথ এখনও জার্মানীতে বর্তমান। এটি খঁহবনঁৎম স্থলপথ থেকে জার্মান বাল্টিক কোস্ট পর্যন্ত বিস্তৃত।
৭. লবণ জলের সঙ্গে এক ধরনের বীজ মিশিয়ে ভারতে কালো লবণ তৈরি হয়। এই মিশ্রণটি বাষ্পায়নের জন্য কালো লবণের পাশে রেখে দেয়া হয়। যখন লবণ তৈরি হয় তখন পাউডারের রঙ হয় গোলাপী।
৮. ফ্রান্সের এঁবৎধহফব-এ এখনও প্রাচীনকালের মত করে লবণ আহরণ করা হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের বাক্স ব্যবহার করে সামুদ্রিক জল সেঁচে নেয়া হয়। এজন্য এ লবণের দাম খুব বেশি। এই মিহি লবণ বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং এটি খাবারে উপরি প্রয়োগের জন্য ব্যবহার করা হয়- রান্নার কাজে কখনো নয়।
৯. সাধারণত একটি ভুল ধারণা আছে যে, রোমের সৈন্যদের লবণের মাধ্যমে বেতন (যা থেকে ঝধষধৎু শব্দের উৎপত্তি) দেয়া হতো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রচলিত মুদ্রার মাধ্যমেই তাদের বেতন পরিশোধ করা হতো। ভুল ধারণাটা সৃষ্টি হয়েছে সম্ভবত এ কারণে যে, রোমান সৈন্যরা রোমের লবণ পথগুলি পাহাড়া দিত। রোমের সৈন্যরা রাষ্ট্রীয় চাকুরে ছিল না বরং প্রাইভেট বাহিনী হিসেবে কাজ করতো।
১০. বিমানের জ্বালানি পরিশ্রুত করার পর এর সঙ্গে লবণ মেশানো হয় যেন জ্বালানিতে সামান্যতম পানির অসি-ত্ব না থাকে।
১১. সোডিয়াম ক্লোরাইড (লবণ) তখনই গঠিত হয় যখন অবস্থিত সোডিয়াম ধাতু ক্লোরিন গ্যাসের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। পাথর পরিবারের মধ্যে এটিই একমাত্র যা মানুষ খেয়ে থাকে। ১২. ১৮০০ শতকে লবণের মূল্য ছিল গরুর মাংসের মূল্যের চারগুণ। মানুষ ও গবাদি পশুকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য লবণ ছিল অত্যাবশ্যক।
১৩. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত লবণের ৬% ব্যবহৃত হয় খাদ্যে; ১৭% ব্যবহৃত হয় শীতকালে রাস্তা ও আন্ত: রাজ্যের হাইওয়ে বরফমুক্ত করার জন্য।
১৪. ১৭ শতক পর্যন্ত ক্যারিবিয়া থেকে উত্তর আমেরিকায় চলাচলকারী মালবাহী জাহাজে লবণ ছিল প্রধান কার্গো। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকা থেকে ক্যারিবিয়ার বহন করে আনা হতো ঝধষঃ ঈড়ফ-যা আখ চাষীদের খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, মে ০৮, ২০১০
Leave a Reply