জানা অজানা : পুরুষ কি বেশী শক্তিশালী?
উত্তর: নারী-পুরুষের শারীরিক এবং প্রবৃত্তিগত প্রভেদের মূলে আছে নারী ও পুরুষের শারীরিক মিলন হরমোন। নারীদের শারীরিক মিলন হরমোনের নাম ইস্ট্রোজেন ও প্রাজেস্টেরন এবং পুরুষের শারীরিক মিলন হরমোনের নাম এন্ড্রোজেন। পুরুষ এবং নারী উভয়ের শরীরেই (রক্তে) ইস্ট্রোজেন এবং এন্ড্রোজেন বর্তমান। পুরুষদের ক্ষেত্রে এন্ড্রোজেনের পরিমাণ ইস্ট্রোজেনের তুলনায় অনেকগুণ বেশি এবং নারীদের বেলায় ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ এন্ড্রোজেনের তুলনায় অকেন বেশি থাকে স্বাভাবিক অবস্থায়। কয়েক ধরনের অসুখে (অথবা ওষুধ ব্যবহারের ফলে) এই পরিমাণ (অনুপাত) কমে-বেড়ে যেতে পারে অর্থাৎ পুরুষদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে অথবা নারীদের শরীরে এন্ড্রোজেনের আধিক্য হতে পারে। এই অবস্থায় পুরুষদের বেলায় নারীদেহের লক্ষণসমূহ এবং নারীদেহে পুরুষালী লক্ষণসমূহ দেখা দিতে পারে।
ইস্ট্রোজেন বা এন্ড্রোজেনের প্রধান ভূমিকা হলো শারীরিক মিলনজীবনকে প্রভাবিত এবং নিয়ন্ত্রণ করা। তাছাড়া এরা শরীরের কোষকলার (বিশেষ করে মাংসপেশী এবং হাড়) বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। এই ক্ষমতাকে এনাবোলিক গুণ বলা হয়। এন্ড্রোজেনের (প্রধানত টেস্টোস্টেরন)-এর এনাবোলিক গুণ ইস্ট্রোজেনের তুলনায় অনেক বেশি। এই কারণে সাধারণত নারীদেহের তুলনায় পুরুষের দেহের কাঠামো (হাড়) বেশি বড়সড় এবং পেশীবহুল হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পেশীর গড়নের সঙ্গে শক্তির সম্পর্ক প্রত্যক্ষ। পেশীবহুল নারীর তুলনায় অল্প পেশীযুক্ত পুরুষ বেশি শক্তিশালী হবে, শুধু সে পুরুষ বলে-এ রকম ধারণা করা ঠিক হবে না। সারা বিশ্বের মহিলা ক্রীড়াবিদ বা জিমন্যাস্টদের দৃষ্টান- তো আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল ১৭, ২০১০
Leave a Reply