প্রথম আলো গোলটেবিল বৈঠক – হৃদরোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার
গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোর উদ্যোগে ‘হৃদরোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তাঁরা খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করেন। বৈঠকের আলোচনা সংক্ষেপ করে ছাপা হলো এই ক্রোড়পত্রে।
যাঁরা অংশ নিলেন
ব্রিগে. (অব.) আবদুলমালিক
জাতীয় অধ্যাপক ও মহাসচিব
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন
অধ্যাপক এ কে এম মহিবুল্লাহ
পরিচালক
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিস বারডেম
ও স্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক
অধ্যাপক আবদুল্লা আলসাফি মজুমদার
অধ্যাপক
জাতীয়হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
ডা. মোমেনুজ্জামান
চিফ কনসালট্যান্ট
হৃদরোগ বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল
ডা. এম এইচ মিল্লাত
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টার
ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য
চিফ অপারেটিং অফিসার
পপুলার ফার্মা
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম: যুগ্ম সম্পাদক, প্রথম আলো
ডা. ইকবাল কবীর: স্বাস্থ্যকুশল
ইকবাল কবীর
বাংলাদেশে হৃদরোগের প্রকোপ বাড়ছে।প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখ লোক মারা যায়। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ আমাদের এ অঞ্চলের। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে ৫০ বছর বয়সের কম বয়সী মানুষ বিশেষ করে ৩৫-৫০ বছর বয়সের মানুষ বেশি মারা যাচ্ছে। একে প্রতিরোধ ও প্রতিকার করার বিষয়ে আলোচনাই আমাদের আজকের গোলটেবিলের উদ্দেশ্য। প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম কিছু বলবেন।
আব্দুল কাইয়ুম
আজকের বৈঠক প্রচলিত গোলটেবিলের মতো করিনি, একটু বিস্তারিত আলোচনা করার জন্যআপনাদের কাছথেকে শুনে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যএ আয়োজন। হৃদরোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে আমাদের দেশের মানুষের সচেতনতার অভাব আছে। আগে থেকে এর প্রতিরোধ কীভাবে করতে পারব, আবার হঠাৎ আক্রান্ত হলে আমরা কী করতে পারব, কোথায় কী করতে হবে সেটা জানতে হবে। ৫২ বছর বয়সে আমি দেখলাম হাঁটতে গেলে আমার কষ্ট হয়। আমি প্রতিদিন সকালে হাঁটতাম এবং ১০-১২ মিনিট হাঁটার পর দেখতাম আমার আঙুলের মাথাগুলো হঠাৎ ব্যথা করত। হাঁটা বন্ধ করলে আমার ব্যথা কমে যেত। সেখান থেকে আমার ধারণা হলো, রক্তের সাপ্লাইয়ে কোনো সমস্যার কারণে আমার এ সমস্যা। সেখান থেকে আমি চিকিৎসকের কাছে গেলাম। হয়তো আমি চিকিৎসকের কাছে গেছি বলে আমার জীবন রক্ষা পেয়েছে। অনেকে ভয়ের কারণে চিকিৎসকের কাছে যায় না। এ ভয়টা কাটাতে হবে। আর এটা সত্যি, যেটা আমি জানি না, যেটা ইকবাল কবীর বললেন, ৩৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রোগী মারা যায়। আমি সেটা জেনেছিলাম ৫০ বছর পর। আরেকটি শুনেছি, হার্ট অ্যাটাক হলে এক ঘণ্টার মধ্যে একটি ইনজেকশন দিতে পারলে আক্রান্ত রোগীর জীবন রক্ষা পেতে পারে। তার জীবন রক্ষার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু ওই ওষুধটি কোথায় পাওয়া যাবে। এসব বিষয়, এর প্রতিকার ও প্রতিরোধের কথা থাকতে পারে। আমরা চাইছি আমাদের পত্রিকার মাধ্যমে পাঠকেরা এ বিষয়ে একটা মোটামুটি স্বচ্ছ ধারণা পাবে এবং এ ধারণাও পাবে যে হৃদরোগের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন ও এর চিকিৎসার ব্যাপারে কী কী করা যেতে পারে। আমরা আলোচনা শুরু করি প্রথমে ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিককে দিয়ে।
আবদুল মালিক
আজকে প্রথমেই আপনারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। হৃদরোগ আমাদের দেশে সত্যি সত্যিই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেটা বলছে, এ রোগটির কথা যদি আমরা আগে থেকে ধরতে না পারি, তবে ১৫-২০ বছরে এই রোগ মহামারি আকার ধারণ করবে। আমরা এখনো দেখতে পাই, অনেক কম বয়সী লোকের এ রোগ হচ্ছে। কিছু দিন আগে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে একটি ছেলে ভর্তি হয়েছে, ১৩ বছরের কম। ১২ বছর নয় মাস। এই বয়সে হার্ট অ্যাটাকে ভর্তি হয়েছে। এবং আমাদের যে অবস্থায় জীবনপদ্ধতি চলছে, এ রকম যদি চলতে থাকে, তবে আজকে যেসব ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে, তাদের অবস্থাও এমন হবে। এর পেছনে খাদ্যাভ্যাস ও আমাদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিস অনেকাংশে দায়ী। এ দুটি প্রধান কারণ। এ দুটি যদি আমরা প্রতিরোধ করি, তবে অনেকটা আস্তে আস্তে কমাতে পারব। দ্বিতীয়ত, ধূমপান না করা, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করাসহ শারীরিক পরিশ্রম করা। শারীরিক পরিশ্রমের জন্য রিকশায় চলা, গাড়িতে চলা—এগুলো পরিবর্তন করা। আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে এবং এ অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করার পেছনে শুধু চিকিৎসকেরা বললে হবে না, আপনাদের মিডিয়ার বিরাট ভূমিকা আছে। আপনারা যদি বারবার কথা বলেন, তাহলে জনগণ শুনবে। আমাদের শিক্ষকদের বলতে হবে, মসজিদের ইমামদের বলতে হবে এবং এর সঙ্গে জড়িত মানুষজনকে এ কথা বলতে হবে। তারা যদি বলে মসজিদে, ক্লাসে তাহলে লোকে শুনবে।
আমি আরেকটি কথা বলতে চাই, আল্লাহর রহমতে আমাদের দেশে হৃদরোগের যে চিকিৎসা, সেটা সরকারি পর্যায়ে, বেসরকারি পর্যায়ে। এখন আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু সত্যি কথা বলতে হয় যে চাহিদার তুলনায় এটা অনেক কম। ঢাকার কয়েকটি সেন্টারে কি ১৫ কোটি লোক দেখাতে পারবে। সেটা কখনোই দেখানো যাবে না। বিভাগীয় পর্যায়ে এটার কোনো সুবিধা নেই। কাজেই আমাদের দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে হবে, চিকিৎসাসুবিধা আরও বাড়াতে হবে। এবং আগে আমাদের প্রতিকার ও প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এটা বারবার বলতে হবে। আমাদের টেলিভিশন, বেতার, সংবাদপত্রের মাধ্যমে বলতে হবে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো চিকিৎসার পরের সময়টুকু। আমাদের সমস্যা হলো অনেকেই উচ্চরক্তচাপে আছে, ওষুধ খেল, ভালো হলো, চলে গেল। এবং তাকে বলতে হবে, এটাকে তাড়াতে হবে চিরদিনের জন্য। অপারেশন করার পর তাকে ওষুধ খেতে হবে এবং আমি আরেকটা জিনিস বলি, বাতজ্বর। এই একটি কথা আমি বলি, আমি যখন ১৯৬০ সালের দিকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউশনে, তখন ৭০ শতাংশ অপারেশন ছিল বাতজ্বরের। সেটা এখন প্রতিরোধ করা হয়েছে, সেটা এখন অনেক কমে গেছে।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ আপনাকে, এটাকে আমরা সূচনা বক্তব্য হিসেবে ধরে নিলাম। বিস্তারিত আলোচনার মধ্যে আরও কিছু এলে সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এখন বলবেন হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এ কে এম মহিবুল্লাহ।
এ কে এম মহিবুল্লাহ
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শুরু করছি। আমরা জানি, হৃদরোগ ক্রমেই সারা বিশ্বে বাড়ছে। সারা বিশ্বে প্রায় দুই কোটি লোক হৃদরোগে মারা যাচ্ছে এবং এটা সব রকম হৃদরোগ মিলিয়ে। তার মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ লোক মারা যায় করোনারি হৃদরোগে। করোনারি হৃদরোগে ৩০ শতাংশ লোক মারা যায় অর্থাৎ দেখা গেল যে সারা বিশ্বে ৭০ থেকে ৮০ লাখ রোগী মারা যায় করোনারি হৃদরোগে। বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও একই প্রবণতা। সেই প্রবণতার একটি দিকের কথা আমি বলতে চাই। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্তের হার ছিল এক হাজারে তিনজন। তারপর ১৯৮৬ সালে দেখা গেল এক হাজারে আক্রান্ত হচ্ছে ১৭ জন। ঠিক এভাবে যদি এগোতে থাকি, তবে ২০১০ সালে দেখা যাবে হাজারে বাংলাদেশে হৃদরোগে আরও বেশি লোক আক্রান্ত হচ্ছে। এই যে হৃদরোগ হওয়ার প্রবণতা আমরা দেখছি, ইসকিমিক হৃদরোগ বা উচ্চরক্তচাপজনিত হৃদরোগের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরেকটা ব্যাপারও আসছে একটু আগের আলোচনা থেকে। সব হৃদরোগই কিন্তু মানুষকে আস্তে আস্তে আক্রান্ত করে এবং একটা পর্যায়ে গিয়ে আমরা যেটা হার্টফেইলিওর বা হার্টফেল হয়। কিন্তু করোনারি হৃদরোগ যেটা, সেটা হঠাৎ আক্রান্ত হয়, হঠাৎ মরে যায় এমন। এ রোগের প্রতিক্রিয়াটা শুরু হয় অনেক দিন থেকে। সুপ্ত অবস্থায় থাকে এ হৃদরোগটা। আক্রান্তের বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয় এবং দেখা যায়, আক্রান্ত হওয়া শতকরা ১৮-২০ ভাগ লোক তখনই মারা যায় এবং হাসপাতালে যত রোগী আসে তার মধ্যে শতকরা ১০-১২ ভাগ লোক সেখানেই মারা যায়। গত তিন বছরের একটা উদাহরণ দিতে পারি: আমি যখন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে আসি, তখন দৈনিক হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা ছিল গড়ে ৫০-৬০ জন। কিন্তু বর্তমানে ভর্তি হয় ১২৭ জন। গত মাসে ১২৭ জন ভর্তি হয়েছে এবং এর শতকরা ৩০ ভাগ রোগী হলো করোনারি হৃদরোগের। যে প্রশ্নটা এখানে এসেছে, হৃদরোগে আক্রান্তের এক ঘণ্টার মধ্যে যদি রোগী হাসপাতালে যেতে পারে এবং তখন যদি আমরা জমাট বাঁধা রক্ত তরলীকরণে ইনজেকশন দিতে পারি, তবে এর মধ্যে শতকরা ৪০ থেকে ৫০ জন রোগীর নালির মধ্যে জমাট বাঁধা রক্ত ইনজেকশন দেওয়ার মাধ্যমে তরলীকরণ করে জীবন বাঁচাতে পারি। হার্ট ফাউন্ডেশন আছে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে এক ঘণ্টা পরও এমনকি ১২ ঘণ্টা পরেও যদি যায়, আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ইনজেকশন দেওয়া যায়। লক্ষ রাখতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। তার আগে যদি ৩০০ মিলিগ্রামের এসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়ানো যায়, তাহলে ভালো হয়। এটা যদি খাওয়ানো হয়, তবে রোগীর হার্ট অ্যাটাক হলেও ক্ষতি হবে না; কিছুটা হলেও ভালো হবে। হৃদরোগের আধুনিক যে চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তার সব চিকিৎসা বাংলাদেশে পাওয়া যায় এবং অত্যন্ত স্বল্প খরচে এটা করার ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশ হৃদরোগ ইনস্টিটিউট সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেক কম খরচে এখানে চিকিৎসা করা হয়। হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে ১২ ঘণ্টা পর ইনজেকশন দেওয়া বা না-দেওয়া একই কথা। তাই যত তাড়াতাড়ি এটা দেওয়া যাবে, যত তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেওয়া যাবে, ততই রোগীর লাভ। ১২ ঘণ্টার মধ্যে যদি কোনো কারণে রক্ত জমাট বাঁধা তরলীকরণ ইনজেকশন না দেওয়া হয়, তবে তাত্ক্ষণিকভাবে এনজিওগ্রাম করে রিং লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন তাত্ক্ষণিকভাবে এনজিওপ্লাস্টি ও রিং লাগানো। এর সব ব্যবস্থাই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে বিদ্যমান। হৃদরোগ প্রতিরোধে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের ফলমূল বেশি খেতে হবে। ফলমূল বলতে শুধু বিদেশি আপেল, আঙুর নয়, দেশি ফলমূলও খেতে হবে। যেমন—পেয়ারা, জাম্বুরা, জলপাই প্রভৃতি। শাকসবজি বেশি করে খান। ফাস্টফুড খাবেন না। প্রতিদিন ব্যায়াম করবেন অথবা হাঁটবেন। ধূমপান বন্ধ করে দিতে হবে। একেবারে নির্ভেজাল জীবন যাপন করতে হবে। দুশ্চিন্তামুক্ত, চাপমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। এ নিয়মগুলো মেনে চললে আমরা অনেক ভালো থাকতে পারব।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তিনি। সমস্যামুক্ত জীবন অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাল আমি পড়েছিলাম মালয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহাথিরের বই। ওই বইয়ে অনেক কথাই বলা হয়েছে। তার মধ্যে একটি কথা আছে, তিনি প্রতিদিন দুপুরে খাওয়ার পর ১৫ মিনিট ঘুমোতেন। যেটাকে ঘুম বা ন্যাপ বলে। তাঁর জীবনে অনেক কিছু ঘটেছে। তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়েছে। তিনি বলেছেন, মালয়েশিয়ায়ই চিকিৎসা করাবেন, বাইরে যাবেন না। এটি একটি উদাহরণ মাত্র। এখন আমি অনুরোধ করব শুভাগত চৌধুরীকে। আমরা একটা কথা শুনেছি, ডায়াবেটিস হলে হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়। আরেকটা কথাও শুনেছি, কমরেড মণি সিং বলেছেন, চিনি খাবেন না, খাবার নিয়ন্ত্রণ করবেন, তাহলে ডায়াবেটিস হবে না। তিনি ৮০ বছর বেঁচে ছিলেন, তাঁর কখনো ডায়াবেটিস হয়নি।
শুভাগত চৌধুরী
জীবনযাপনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় যদি পরিবর্তন করা যায়, তবে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। দুটি কৌশল আপনি নিতে পারেন। হৃদরোগ হওয়ার আগেই একে প্রতিরোধ করতে হবে। আরেকটি হলো, হৃদরোগ যেন কিছু পরে আসে, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একজন লোকের ৪০ বছরে হৃদরোগ হওয়ার কথা ছিল। তিনি যদি ৬০ বছরে হৃদরোগ নিয়ে যেতে পারেন, তবে তাঁর জীবনটি আরও সুন্দর হবে এবং অর্থনৈতিকভাবে তিনি একটু ভালো অবস্থানে থাকতে পারবেন। সবচেয়ে আতঙ্কের কথা হচ্ছে, আমি যেটা হৃদরোগ-বিশেষজ্ঞর কাছে জেনেছি সেটা হলো, তরুণ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে হৃদরোগের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেটা ইকবাল বললেন। একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যে হৃদরোগ হচ্ছে। যার কিছু কারণ রয়েছে। একটা কারণ হলো, আমাদের দেশের মানুষের ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা বেশি। কার্বোহাইড্রেট, চর্বি ইত্যাদির কারণে হতে পারে। আরেকটি কারণ হতে পারে ফাস্টফুড। ফাস্টফুডের অত্যন্ত বিরোধী আমি। ফাস্টফুড আমাদের দেশের তরুণদের পছন্দ হওয়ার কারণে কিন্তু অনেক রোগ হচ্ছে। এ বিষয়টি প্রতিরোধে কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া উচিত। রমনা পার্কে বয়স্করা হাঁটছেন। আমার বয়স ৬৪। এ বয়সের লোকজন হাঁটছেন। এমনকি তাঁদের জীবনসঙ্গী নিয়ে হাঁটছেন। কিন্তু তরুণেরা হাঁটছে না। তারা চিনাবাদাম খাচ্ছে। তারা অন্য চর্চা করছে, কিন্তু হাঁটছে না। এখানে হাঁটাহাঁটির ব্যাপারটা তরুণদের মধ্যে খুব বেশি হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না। গণমাধ্যমগুলো তরুণদের হাঁটাহাঁটি করতে প্রচারণা চালাতে পারে।
ধূমপান যদি বন্ধ করে দেওয়া যায়, তবে এটি একটি বড় কারণ হবে হৃদরোগ প্রতিরোধে। শরীরচর্চা বাড়ানো হবে আরেকটি ভালো উদ্যোগ। এখন আমরা বলতে পারি, হাঁটার অভ্যাস করুন। এখানে আরেকটি কথা, কেউ যদি ৩০ মিনিট একটানা হাঁটতে না পারে, ১০ মিনিট করে হাঁটুক। তিনবারে ১০ মিনিট করে হাঁটলে ৩০ মিনিট হাঁটা হয়ে যাবে। সকালে খাওয়ার পর ১০ মিনিট, দুপুরে খাওয়ার পর ১০ মিনিট এবং রাতে ১০ মিনিট হাঁটুন। আরেকটি কথা আপনাদের বলছি সেটা হলো, খাওয়ার পর যদি ১০ মিনিট হাঁটেন, তবে ব্লাড সুগারের হার অনেক কমে যাবে। খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা কিন্তু আপনার হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস দুই-ই কমাতে সাহায্য করবে।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ শুভাগত চৌধুরী। খুব চমত্কারভাবে এবং প্রাঞ্জলভাবে তিনি আমাদের সামনে কিছু কথা তুলে ধরেছেন। এখন ইউনাইটেড হাসপাতালের পরামর্শক মোমেনুজ্জামান কিছু বলবেন।
মোমেনুজ্জামান
যদিও আলোচনাটা হৃদরোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়ে। বিশেষ করে আমাদের আলোচনাটা করোনারি হৃদরোগ নিয়েই বেশি হচ্ছে। কারণ এটাই এখন বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আমাদের দেশে এনজিওগ্রাম সম্পর্কে একসময় ভীতিকর ধারণা ছিল।
এখন দেশে প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার, এবার আরও বেশি, সারা দেশে ২০ হাজার এনজিওগ্রাম করা হচ্ছে। তার মানে মানুষের কী পরিমাণ আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আমি বিশ্বাস করি, মানুষকে বোঝানোর কিছু নেই। খুব কমসংখ্যক পরিবার আছে, যাদের খারাপ অভিজ্ঞতা আছে। হয়তো বা শুনেছিল কোনো এক রোগী মারা গিয়েছিল। এখন যে জিনিসের কথা আসে সেটা হলো, এজনিওগ্রাম করার পরে প্রশ্ন আসে হার্টের ব্লক নিয়ে। ব্লকের ধরন অনুযায়ী আমরা চিকিৎসা করতে পারি। উদ্দেশ্য একটাই, তার যেন হার্ট অ্যাটাক না হয়।
যেমন যদি দু-একটা ব্লক থাকে, আমি বলি ঠিক আছে। যদি যুবক বয়সের হয়, তাহলে এনজিওপ্লাস্ট করা যেতে পারে। যদি মাল্টিপল থাকে, ৫০ বছরের থাকে, তাদের বলি বাইপাস খুব সহজ, সস্তা, সহজ ও নিরাপদ। এনজিওপ্লাস্ট কিন্তু ব্যয়বহুল। দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় বাইপাস করা যায়। প্রাইভেট সেক্টরে হাসপাতালে এক লাখ ১০-১৫ হাজার। সরকারি হাসপাতালে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় করা যায়। সরকারি হাসপাতালে অনেক সময় লাগে, অনেক বিষয় আছে। এই রোগী সাধারণত অপেক্ষা করতে চায় না। বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে হার্ট ফাউন্ডেশন এক লাখ ২০-২৫ হাজার টাকা লাগে। এর চেয়ে কমে কীভাবে করবে। এত কম মূল্যে আমি বিশ্বাস করতে পারি না যে মাত্র ২০০ ডলারে একটা এনজিওগ্রাম হয়। বিদেশে চিকিৎসকের পরামর্শ ফিই ২০০ ডলার, সেখানে এনজিওগ্রামের চার্জ ২০০ ডলার নিয়ে করি। সে জন্য বলি, আমাদের দেশে সবচেয়ে কম খরচে আমরা এনজিওগ্রাম করছি।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে স্ট্রেপটোকাইনেজ ইনজেকশনটা দেওয়া যায় কি না, এ ব্যবস্থা করা জরুরি। আমি মনে করি, এতে কোনো সমস্যা নেই, জেলা হাসপাতালেও দেওয়া সম্ভব নিরাপদভাবে। এই ইনজেকশনটা এখন উপজেলা পর্যায়েও পাওয়া সম্ভব। যদি না দেওয়া হয়, তবে ঝুঁকি আরও বেশি। বলা হয়, কোনো রোগীর যদি রাস্তায় হার্ট অ্যাটাক হয়, তার ৫০ শতাংশ রাস্তায় মারা যাবে। যারা বেঁচে থাকে, তাদের যদি স্ট্রেপটোকাইনেজ দিতে পারি, ৪০ থেকে ৬০ শতাংশের রক্তনালি সঙ্গে সঙ্গে খুলে যাবে। যখনই রোগীর বুকে হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা হয়, তখনই স্ট্রেপটোকাইনেজ দিয়ে স্থানান্তর করি। যত তাড়াতাড়ি করা যায়। এক ঘণ্টার মধ্যে দিলে ভালো হয়।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ মোমেনুজ্জামান। আপনি অনেক মূল্যবান কথা বলেছেন। এখন আমি কথা বলতে অনুরোধ করব জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আবদুল্লা আল সাফি মজুমদারকে।
আবদুল্লা আল সাফি মজুমদার
প্রথমে প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এত সুন্দর একটা আলোচনা আয়োজন করার জন্য। এখন এই পর্যায়ে আলোচনা চলছে, আমি যে কথাগুলো বলতে চাই, তার সব কথা বলা হয়ে গেছে। মূল কথাগুলো হয়ে গেছে। ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাকে সমানভাবে; আমি বলি, আপনি সবই খেতে পারবেন। তবে আপনারা যা-ই খাবেন, পরিমিতভাবে খাবেন। আমাদের কাজে একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমাদের গবেষণাকাজে কোনো আলাদা ব্যাপার ঘটে না। আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মোটামুটি ভালো সমস্যা। আমাদের স্বাস্থ্যশিক্ষা কিন্তু শিক্ষার একটি অংশ। আমাদের স্বাস্থ্যশিক্ষায় যেগুলো দরকার, সেগুলো স্বাস্থ্যশিক্ষায় নেই। উচ্চশিক্ষার জন্য তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য যেমন পিএইচডি করতে হচ্ছে, তেমনি আমাদের দেশের লোকজন স্বাস্থ্যশিক্ষায় যাচ্ছে না। আমাদের চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার যাচ্ছেন না। আমাদের দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে কোথায় কী হচ্ছে, সেটা কিন্তু অনেক চিকিৎসকও ভালোভাবে জানেন না। সাধারণ লোক কীভাবে জানবে। এক বিভাগের লোক জানে না অন্য বিভাগে কী হচ্ছে। সরকারি উচ্চপর্যায়ে অনেক কর্মকর্তা জানেন না, স্বাস্থ্যের জন্য কী কী হচ্ছে। উপজেলার স্ট্রেপটোকাইনেজ দেওয়া যাবে কি না? মনিরুজ্জামান বললেন, বিভিন্ন জেলায় দেওয়া হচ্ছে। কুমিল্লায় দেওয়া হচ্ছে, খুলনায় দেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে, কিছু কিছু উপজেলায় করা হচ্ছে। একটা হলো ওষুধ যদি থাকে, সবার কাছে নিয়ে যেতে হবে। যদি আমাদের দেশে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়, তাহলে খুব ভালো হয়। আমাদের দেশের কোম্পানিগুলোকে ওষুধ তৈরি করে গ্রাম এলাকায় পাঠাতে হবে। ভ্যাকসিন যেভাবে পাঠানো হয়। তাহলে কিন্তু এটা সম্ভব হবে।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ আপনাকেও এত সুন্দরভাবে বলার জন্য। এখন আমরা কথা শুনব এইচ এম মিল্লাতের। তিনি আমাদের বলবেন উপজেলা এবং জেলাপর্যায়ে হৃদরোগ চিকিৎসার কী রকম সুবিধা আছে বা পরিকল্পনা কী।
এম এইচ মিল্লাত
আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই প্রথম আলোকে আমাকে এখানে ডাকার জন্য। আমি ১৬ বছর ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডে কাটিয়ে এসেছি। সেখানে অন্য কথা। কিন্তু আমাদের দেশে যখন কোনো রোগী দেখি ৫০ বছর, ৪০ বছর, ৩৫ বছর পর্যন্ত অপারেশন করছে, তখন এটা ভাবনারই বিষয়। আমরা শেষ যে রোগীর অপারেশন করেছি, তার বয়স ছিল ৪০ বছর। কিছু দিন আগে একটা মেয়ের অপারেশন হয়েছে, তাঁর বয়স ২৮ বছর। আমি করতে চাইনি, কিন্তু আমাকে করতে হয়েছে। তাঁকে বাঁচানোর জন্য করতে হয়েছে। আমি জানি, এর ফলাফল ভালো না। আমাদের জন্য সরকার কী করতে পারে, আমরা প্রাইভেট সেক্টর থেকে কী করতে পারি। প্রতিবছর এ দেশে ৩০ হাজারেরও বেশি এনজিওগ্রাম হয়। ছয় হাজারেরও বেশি হার্ট সার্জারি হয়। আগে বাস ভরে, প্লেন ভরে রোগীরা ভারতে যেত, সেটা কিন্তু বন্ধ হয়েছে। সেই ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের বাংলাদেশে কার্ডিওলজিস্টের সংখ্যা ৪০৫। তার মধ্যে ১৫০-এর মতো ডিপ্লোমা, ১৫০ জন এমডি এমএস করা। আমরা ইচ্ছা করলেই ৪৮৪টা উপজেলায় দিতে পারব না। তার মধ্যে অনেকেই, প্রায় ৫০ শতাংশ প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করেন। শুধু ঢাকা শহরের বড় বড় হাসপাতালে রয়েছে ২০০-এর বেশি কার্ডিওলজিস্ট। আমরা ইচ্ছা করলেই সারা দেশে কার্ডিওলজি করাতে পারব না। উপজেলা থেকে কোথায় পাঠাবেন? আপনার খাগড়াছড়িতে, আপনার রংপুরে, লালমনিরহাটের ছিটমহলে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব কি না? আমাদের জনসংখ্যা অনেক। আমাদের জনসংখ্যার প্রতি এক কোটি লোকের জন্য একটি করে কার্ডিয়াক সেন্টার তৈরি করা যায়। সরকারি লেবেলে। তাহলে ১৫টি কার্ডিয়াক সেন্টার হবে। আমাদের কার্ডিয়াক সেন্টারের দরকার আছে পাঁচ গুণ। কার্ডিওলজি সেন্টার প্রয়োজন কমপক্ষে ৩১-৩২টি। কার্ডিয়াক সেন্টার সম্পর্কে বলা হয়েছে—আমরা চেষ্টা করব ধীরে ধীরে প্রতিটি মেডিকেল কলেজে ব্যবস্থা করতে। ঢাকা শহরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে কার্ডিওলজির ব্যবস্থা রয়েছে। সুতরাং আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে স্পেশালিটি নিয়ে যেতে পারব। এটা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মধ্যে আছে।
ইচ্ছা আছে আগামী চার বছরের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানে করার। এর সঙ্গে সঙ্গে আমি, আমরা যদি আমাদের যুবকদের কথা চিন্তা করি। ৩০-৪০ হাজার শিশু হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মায়। সে ব্যাপারে আমরা কি কোনো চিন্তাভাবনা করছি? করছি, আমরা কিছুটা চিন্তাভাবনা করছি। আমাদের দেশে তিন লাখ রোগী রয়েছে। বর্তমানে বাচ্চাদের অপারেশন হয় হার্ট ফাউন্ডেশনে, তো এটাই এখন আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এখানে একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে শিশু হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে, শিশু রোগীদের জন্য একটি করে হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হবে।
আব্দুল কাইয়ুম
ধন্যবাদ আপনাকে। সুন্দরভাবে আপনার মূল্যবান কথা আমাদের মধ্যে তুলে ধরার জন্য। এখন আমি হৃদরোগের ওষুধ নিয়ে কিছু বলার জন্য পিনাকী ভট্টাচার্যকে অনুরোধ করব।
পিনাকী ভট্টাচার্য
কার্ডিওলজিতে আসলে অনেক উন্নতি হয়েছে।
সাধারণত যেসব ওষুধ আমদানি হয়ে আসে, সেগুলো আবার কিছু কিছু প্যারালাল আমদানি হয়ে চলে আসে বর্ডার পার হয়ে। সে ক্ষেত্রে কোল্ড চেইনের বড় একটা সমস্যা থাকে। আমার মনে হয়, দেশীয় ওষুধের ক্ষেত্রের সমস্যা আমরা অনেকাংশ হ্রাস করতে পারি। স্ট্রেপটোকাইনেজ নিয়ে কাজ করতে যাওয়ার সময় সেটা মনে হয়েছে। আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, হার্ট অ্যাটাক প্রতিকারের জন্য স্ট্রেপটোকাইনেজ ইনজেকশন আমরাই বাংলাদেশে তৈরি করেছি। শিগগিরই পপুলার ফার্মার পক্ষ থেকে এটি বাজারে ছাড়া হবে।আপনারা এটি ব্যবহার করুন, মতামত দিন। বর্তমানে মাসে এক হাজার থেকে দেড় হাজারের মতো ব্যবহূত হচ্ছে। আমরা কোল্ড চেইনসহ কোয়ালিটি কন্ট্রোল করছি। গোটা দেশে কার্ডিওলজিস্টদের কাছে আমরা এটা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করব। আপনারা ব্যবহার করে আমাদের ফিডব্যাক দেবেন। এতে আমাদের দেশের জনগণের আস্থা আরও বাড়বে এবং আপনাদের কাছ থেকে যখন আস্থার কথা শুনতে পাবে, তখন একটা ভালো ফল পাওয়া যাবে এবং আমাদের পরিকল্পনায় আছে আরও বেশ কিছু পণ্য। আমাদের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা আছে। আমরা যদি এই ওষুধগুলো রপ্তানিও করতে পারি, তাহলে বিশাল রাজস্ব আসতে পারে। আমার মনে হয়, আমরা এ জায়গায়টার পাশে আছি। একটা বিষয় বলে রাখি, টেকনোলজিটা কিন্তু আমাদের নয়, বিদেশি টেকনোলজি। আমরা ব্যবহার করছি, বিদেশি একটা কোম্পানির প্রযুক্তি। কাজেই ওষুধ তৈরি হচ্ছে সর্বোচ্চ মানের।
এম এইচ মিল্লাত
বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর তৈরি ওষুধের গুণগত মান এখন খুব ভালো, উঁচুমানের। আমি সবগুলোর কথা বলব না, অনেকেই খুব সুনামের সঙ্গে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকায় ওষুধ রপ্তানি করছে।
আব্দুল মালিক
আমার মনে হয়, অনেক ভালো আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়গুলো বারবার মিডিয়ায় আনা উচিত, যেন মানুষএ রোগ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারে। প্রথম আলোকে আবার ধন্যবাদ জানাই।
আব্দুল কাইয়ুম
অনেক সুন্দর একটা আলোচনা আমরা উপভোগ করলাম। ধন্যবাদ সবাইকে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১০, ২০১০
kazi samrat
আমি Cox’s বাঁজার থেকে ||৪ দিন আগে আমার আব্বা হার্ড এর প্রব্লেম এর কারো নে Hospital এ ভর্তি হই|২০০৭ হার্ড attack যেই ভাবে হৈছিল এই রাখুম মনে হই ছিল।ECG তে ব্লক দেখা যায়। ENGEOGRAM করতে বলে|ডায়বেতিস বেশি ছিল|amra midolclas familyr manush. Engeogram kotai korte parbo. Ar koto taka lagbe? Koidin dhaka takte hobe? age:55. Wt:79
Bangla Health
টাকা-পয়সার ব্যাপারটা আপেক্ষিক। একেক জায়গায় একেক রকম লাগে। দুঃখিত, আপনাকে একেবারে নির্ভুল, সঠিক তথ্য দিতে পারা গেল না।