মাঝবয়সী মোশারফ সাহেব সকালে ঘুম থেকে উঠলেন শরীরে ব্যথা নিয়ে। বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুলের গোড়ায় প্রচণ্ড ব্যথা। সেই সঙ্গে জায়গাটা ফুলে গেছে এবং লাল বর্ণ ধারণ করেছে ওই অংশের চামড়া। মেঝেতে পা ফেলে চাপ দিতেই ব্যথা আরও বেড়েছে, হাঁটা প্রায় অসম্ভব। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিনি মনেই করতে পারছেন না গতকাল কোনো আঘাত পেয়েছেন কি না। প্রকৃতপক্ষে কোনো আঘাত নয়, এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় গেঁটে বাত বা গাউট। এটা এক ধরনের বাতজনিত সমস্যা, যা মনোসোডিয়াম ইউরেট মনোহাইড্রেট নামের ক্রিস্টাল জয়েন্টে জমা হওয়ার ফলে হয়ে থাকে।
এ রোগের কারণ: বাত বা গাউট জয়েন্টে ক্রিস্টাল জমা হওয়া থেকে সৃষ্টি হয়। এ জাতীয় ক্রিস্টাল যেমন কিডনি সমস্যা থেকে হতে পারে, তেমনি কিছু কিছু খাদ্য যা পিউরিন বিপাক বৃদ্ধিকে সহায়তা করে, সে কারণেও হতে পারে। এ ছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও এ রোগ হয়। যেমন স্বল্পমাত্রার অ্যাসপিরিন, ল্যাসিক্স, থায়াজাইডস, কিছু অ্যান্টিক্যানসার ড্রাগস, সাইক্লোস্প্রোরিন প্রভৃতি। শরীর থেকে ইউরিয়া নামের বর্জ্য অপসারিত না হওয়াই মূলত এ রকম ক্রিস্টাল জমার কারণ, যা থেকে গেঁটে বাত হয়।
লক্ষণ: যেকোনো একটি বা দুটি জয়েন্টে হঠাত্ প্রচণ্ড ব্যথা হয়। সংশ্লিষ্ট জয়েন্ট ফুলে যায় এবং নড়াচড়া করলে ব্যথা তীব্র হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। জ্বর আসতে পারে, শরীর অবসাদগ্রস্ত হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা: আক্রান্ত জয়েন্ট থেকে সাইনোভিয়াল ফ্লুইড বের করে পরীক্ষা করলে ক্রিস্টাল পাওয়া যায় যা এ রোগ শনাক্তকরণের মূল উপায়। এ ছাড়া রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ এবং ২৪ ঘণ্টার প্রস্রাবের পরিমাণ থেকেও এ রোগের ধারণা পাওয়া যায়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট জয়েন্টের এক্স-রে ও রুটিন পরীক্ষা করানো ভালো। ডায়াবেটিস ও কিডনির অসুখে ভুগছেন এমন রোগীদের বাতরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে, তাই এ সংক্রান্ত প্যাথলজি পরীক্ষা করানো প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিত্সা: যেহেতু এ ব্যথা তীব্র হয়, তাই ব্যথা কমানো খুব জরুরি। এ জন্য NSAID বিশেষত ইনডোমেথাসিন বা আইব্রোপ্রোফেন খুব কার্যকরী। সঙ্গে অবশ্যই অ্যান্টি আলসার ড্রাগস, যেমন ওমিপ্রাজল দিতে হয়। এ ছাড়া কলচিসিন, অ্যালোপিউরিনল, সালফিনপাইরাজন এবং প্রবিন এসিড জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। জয়েন্টে স্টেরয়েড ইনজেকশন ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী।
ফিজিওথেরাপি: ব্যথা কমানোর ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব গেঁটে বাত নিয়ন্ত্রণে অপরিসীম। প্রাথমিকভাবে আইস বা বরফ থেরাপি ব্যথা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পরবর্তী সময়ে আল্ট্রাসাউন্ড বা ফনোফরেসিস করা যায়। অতিরিক্ত ব্যথায় বা ব্যথার প্রথম দিকে কোনো ব্যায়াম না করাই ভালো। শরীরের ওজন কমাতে হবে এবং কিছু নির্দিষ্ট খাবার না খাওয়ার জন্য চিকিত্সকের পরামর্শ প্রয়োজন।
সুনাম কুমার বড়ুয়া
বাত, ব্যথা, প্যারালাইসিস বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৭, ২০১০
sohel
এটা কি যে কোন বয়সে হতে পারে ? এবং এটা কি ভালো ভাবে সারিয়ে তোলা যায় যাতে করে পরে আর এই রোগটা না হয় ! আমাকে একটু জানালে খুশী হব
Bangla Health
মূলত রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে এটা হয়। এটা যে কোন বয়সেই হতে পারে। তবে উচ্চতা অনুসারে যাদের ওজন বেশি, তাদের এটা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। একবার হলে পরীক্ষা করে এর মাত্রা নির্ণয় করে সেই অনুসারে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা নেয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এটা কমতে থাকে। যদি বার বার এমন হয়, তাহলে অনেকের বেলায় এই ইউরিক এসিডের মাত্রা সঠিক রাখার জন্য হয়তো সারাজীবনই ঔষধ খেয়ে যেতে হয়।
শরীরের ওজন যাতে বেশি হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। এলকোহল, বিশেষ করে বিয়ার, এড়িয়ে চলতে হবে।
Ayub
Assalamu alaikum….. Onek kosto r betha niye apnader likhchi..2011 er 29 november ghum theke uthar por ami amar hatur joint a ebong payer guralir joint a tibro betha onuvov kori….ami bichana theke uthte parcilam na…ami pray 1 maas alopathik medicine kheyechi(without any lab test )… tate obosthar temon unnoti hoy ni, kichudin betha uthle clofenac gel use korechi,,next time a 2012 year er may maas theke homeopathik khacchi…ete obosthar kichuta unnoti hoyeche…..kuthao ektana dariye thakle sobcheye besi betha hoy nd hatleo betha kore….amar boyos 18….weight 75….plz advice me what can i do
Bangla Health
শরীরের অতিরিক্ত ওজনে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আপনার উচ্চতা বলেন নাই। উচ্চতা অনুসারে ওজন ঠিক আছে কিনা, দেখে নিন। নইলে ওজন কমিয়ে ফেলুন। বাজে অভ্যাস থাকলে, বাদ দিন।