মনে করুন, আপনি একজন ডাক্তারের চেম্বারে এসেছেন। কিন্তু আপনার আগের কোনো ব্যবস্থাপত্র ও রোগসংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ওই মুহূর্তে কাছে নেই; তাহলে কি ডাক্তারের সঙ্গে আপনার ওই সাক্ষাত্ অনেকটা মূল্যহীন হয়ে গেল না? এ ক্ষেত্রে অনেক সময় আপনাকে ওই মুহূর্তে ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর্বটি অসমাপ্ত রাখতে হয় অথবা আপনার মূল্যবান সময় ও অর্থের অপচয় করে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করতে হয়। এ ছাড়া আপনি শেষবারের মতো কবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছেন, তার তারিখ, স্বাস্থ্যসেবার বিবরণ ও তথ্য অনুসন্ধানপত্রের বিবরণসংবলিত কোনো কিছু অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মনে করাটা আপনার জন্য কষ্টসাধ্য নয় কি?
স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত খুব বেশি সময় ধরে বহনযোগ্য কোনো উপাদান নয়, যা কিনা বছরের পর বছর সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। বর্তমান উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এই মূল্যবান তথ্যসমূহ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সুরক্ষিত স্থানে সংরক্ষণ করা উচিত। একজন ব্যক্তির এই ইলেকট্রনিক-হেলথ রেকর্ড খুবই স্পর্শকাতর হয়ে থাকে এবং এগুলো সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যান্ত্রিকভাবে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণের পদ্ধতিকে ইলেকট্রনিক মেডিকেল হেলথ রেকর্ড বা ইএমএইচআর বলা হয়। স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার শুরু থেকেই অ্যাপোলো হসপিটালস ঢাকা ইলেকট্রনিক মেডিকেল হেলথ রেকর্ডের মাধ্যমে রোগীর যাবতীয় স্বাস্থ্য ও চিকিত্সার তথ্য সংরক্ষণ করে আসছে। এই ইলেকট্রনিক রেকর্ডের মধ্যে রোগীর জীবনবৃত্তান্ত, সময়ের সঙ্গে রোগের গতিপ্রকৃতি, রোগের বিবরণে উল্লেখযোগ্য লক্ষণসমূহ, অতীতের স্বাস্থ্যসেবার বিবরণ, ল্যাবরেটরি পরীক্ষার তথ্যসমূহ এবং এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, এমআরআইসহ বিভিন্ন রেডিওলজি রিপোর্টসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
এ ক্ষেত্রে এই হাসপাতালের পরামর্শকেরা একজন রোগীর বর্তমান ও আগের রিপোর্ট অনুযায়ী এবং প্রয়োজনে তুলনামূলক বিচার-বিবেচনার মাধ্যমে চিকিত্সাব্যবস্থা দিতে পারেন। এর ফলে রোগসম্পর্কিত তথ্যসমূহ একনজরে সহজবোধ্যভাবে এক জায়গায় সাজানো থাকায় রোগীর সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও চিকিত্সকেরা পর্যাপ্ত সময় নিয়ে চিন্তা করতে পারছেন। অন্য যেকোনো হাসপাতালের তুলনায় ক্লিনিক্যাল কাজের ক্ষেত্রে ডাক্তারেরা বেশি সময় ও মনোযোগ দিতে পারছেন, যাতে রোগীর উন্নততর চিকিত্সাসেবা নিশ্চিত হচ্ছে।
ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড-পদ্ধতি, বিশেষ করে জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ—যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য হার্টের রোগীর ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী ও চমকপ্রদ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসচেতন আধুনিক-মনস্ক জীবনধারায় বিশ্বাসী জনগোষ্ঠী, যারা সব সময়ের জন্য রোগমুক্ত থাকতে চায়, এটি তাদের জন্যও সর্বোত্কৃষ্ট পদ্ধতি। কেননা আপনি দেশ-বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন, স্থানকালভেদে অ্যাপোলো হসপিটালস ঢাকায় গৃহীত ও কম্পিউটারে নথিভুক্ত আপনার যেকোনো স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য ও চিকিত্সার বিবরণী আপনি জানতে পারবেন আপনার হসপিটাল আইডি নম্বর ব্যবহারের মাধ্যমে।
স্বাস্থ্যকুশল প্রতিবেদক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৬, ২০১০
Leave a Reply