অনেক দিন পর কারও সঙ্গে দেখা হলে যখন চমকে উঠে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘একি, আপনাকে তো চেনাই যাচ্ছে না! চেহারাটা কেমন যেন হয়ে গেছে।’ আপনার মনটা নিশ্চয়ই একটা হোঁচট খায়। ঝরা পাতার কান্না শুনতে পান কি? নিশ্চয়ই শরীরে বার্ধক্যের শুষ্কতা ছুঁয়ে যাচ্ছে।
ক্যালেন্ডারের পাতা দ্রুত উল্টে যায় আর ঘড়ির কাঁটার নিরন্তর ছুটে চলার সঙ্গে বাড়তে থাকে বয়স। আসে জরা। তাই সময়কে জয় করতে চাই সঠিক সময়ে সচেতন পদক্ষেপ।
শরীরের বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী ফ্রি রেডিকেল ইনজুরি ঠেকাতে প্রয়োজন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হলুদ ফলমূল, বিশেষ করে আমলকী, পেয়ারা, সবুজ শাকসবজি ছাড়াও পাওয়া যায় ভিটামিন-এ, সি এবং ই কম্বিনেশন হিসেবে বিভিন্ন নামে। প্রতিদিন একটি করে এসব বড়ি খেতে পারেন।
নারীদের হাড়ে ক্ষয় শুরু হয় অনেক আগেই। তাই প্রতিদিন খেতে পারেন একটি করে ক্যালসিয়াম বড়ি। দুধ ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খেতে পারলে ভালো।
যাঁদের ওজন বাড়ার প্রবণতা আছে, তাঁদের খাদ্যতালিকা এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন কিছুতেই ওজন না বাড়ে। মুখরোচক ভাজাপোড়া বা চর্বিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।
শরীরটাকে ঝরঝরে আর কর্মক্ষম রাখতে প্রয়োজন প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করা। খাবারে থাকতে হবে যথেষ্ট পানি, শাকসবজি ও ছোট মাছ। মিষ্টি আর ভাত যতটুকু সম্ভব কমিয়ে খাবেন। আরও প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণে চিন্তামুক্ত নির্বিঘ্ন ঘুম। মেনোপজ অর্থাৎ মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে যাঁদের, তাঁরা প্রয়োজনে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট নিতে পারেন; তবে এখন খুব প্রয়োজন ছাড়া হরমোন রিপ্লেসমেন্ট না নিতেই পরামর্শ দেওয়া হয়-নিলেও তা স্বল্প মেয়াদে।
অপেক্ষাকৃত বয়স্ক নারীরা অবশ্যই প্রতিদিন একটি আপেল অথবা এক টুকরো পেঁপে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। জর্দা, সাদাপাতা খাবেন না; বরং খেতে পারেন সালাদ, টমেটো আর শসা, সঙ্গে লেটুসপাতা বা গাজর।
আজকাল ভালোই লাগে, যখন দেখি বিউটি পারলারগুলোতে বয়সী নারীরা তাঁদের হাত, পা ও মুখের যত্ন নিচ্ছেন, চুলে রং করছেন বয়সকে ধরে রাখার জন্য।
সারাটা জীবনই সংসারের কাজ করে কাটিয়েছেন যে নারীরা, তাঁরা যদি মন, শরীরের সুস্থতা ও সৌন্দর্যের জন্য কিছুটা সময় আর অর্থ ব্যয় করেন, তাহলেই বা দোষের কী। মা-বোনেরা
জয় করুন নিজের বয়স! তারুণ্য ধরে রাখুন আমৃত্যু-শরীর ও মনে।
লেখকঃ ডা· রওশন আরা খানম
উৎসঃ দৈনিক প্রথম আলো
Leave a Reply