মনমেজাজের আবার খাবার দাবার কী?
আছে। কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলো পেলে মনমেজাজ ভাল থাকে। এগুলোই মনমেজাজের খাবার দাবার ধরে নেয়া হয়। অর্থ্যাৎ শরীর ও মন ভালো রাখতে নেয়া যায় নানা পদক্ষেপ যেমন:-
হাসুন প্রাণ খুলে। হাসলে ‘এনডরফিন’ নিঃসরণ হয়, যা আপনার মস্তিষ্কে জাগাবে ভাল লাগার অনুভূতি। হাসিখুশি মানুষ সুস্থ থাকে দীর্ঘদিন। আপনার প্রিয় কৌতুক পড়ুন, কৌতুক শুনুন, কমেডি দেখুন, আর হাসুন প্রাণ খুলে।
ব্যায়াম করুন নিয়মিত। ব্যায়ামে, এমন কি কেবল উঠ বস করলে, যৌবনের হরমোন ‘গ্রোথ হরমোন’ এর নিঃসরণ বাড়ে। আর এই হরমোনের জন্যই মন ভাল হতে পারে। ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে নিঃসরণ হয় মন ভাল লাগার মত কিছু নিউরোট্রান্সমিটারও।
হাতের পরশও ভাল করতে পারে মন। পরশেও নিঃসরণ হয় ‘এনডরফিন’ ‘গ্রোথ হরমোন’। এগুলো স্ট্রেসের ক্ষতিকর দিক কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসকের নিয়মিত হাতের পরশ পাওয়া রোগীরা পরশ না পাওয়া রোগীদের চেয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
ধীর লয়ে গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাস টানলে ছাড়লে মন ভাল হতে পারে। গভীর ভাবে শ্বাস প্রশ্বাসের ফলে মস্তিষ্কে কিছু নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণ হয়। ফলে ভাল লাগা বোধ হয়। যোগ ব্যায়াম কিংবা মেডিটেশন- যে কোনটাকে বেছে নিতে পারেন ধীর লয়ে গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাসের উপায় হিসাবে।
সুগন্ধি ব্যবহার করলেও পাওয়া যেতে পারে উপকার। সুগন্ধিতে নাকের স্নায়ু খুশি হয়, খুশি হয় মস্তিষ্কও। সুতরাং ভাল হয় মনের অবস্থা। ২০ মিনিট পরে হয়ত পারফিউমের গন্ধটা থাকবেনা কিন্তু মন তখনও ভাল থাকবে।
‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা, খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি,। কিন্তু যদি জোটে দু’টি, তাহলে ? দ্বিতীয়টি দিয়ে ফুল কিনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফুল মনের খাদ্য, মন ভাল করতে পারে। রঙিন ফুল রাঙাবে আপনার মন। কমাবে স্ট্রেস।
নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন। ইতিবাচক চিন্তা করুন।
গান শুনুন। গান মসি-ষ্কের আনন্দদায়ক কেন্দ্রকে উজ্জীবিত করে। সখের কাজ করা যেমন বাগান করা, বই পড়া, প্রাণী পোষা ইত্যাদিও আপনার মন মেজাজ ভাল রাখায় সহায়ক হতে পারে।
খাবারে চাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। চাই ভিটামিন বি-১২, ফলিক এসিড, ভিটামিন-ডি। এগুলোতে মন ভাল থাকে। পাওয়া যাবে মাছ, শাক-সবজি, দুধ ইত্যাদিতে। সূর্যালোক থেকেও পাওয়া যাবে ভিটামিন-ডি। সূর্যালোক মসি-ষ্কে সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। এতে মনমেজাজ ভাল হয়। পানিশূন্যতাও মনমেজাজ খারাপ করতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
অতীতের দুশ্চিন্তা পরিহার করুন। অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করুন। কৃতজ্ঞচিত্ত হোন মানুষের প্রতি, কৃতজ্ঞচিত্ত হোন স্রষ্টার প্রতি। মন মেজাজ ভাল থাকবে।
ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ
সহযোগী অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ
কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ,ময়মনসিংহ।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ১৫, ২০০৯
Leave a Reply