আমাদের জানা ভালো, দিনে রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বেলার খাবার তাহলো প্রাত:রাশ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তো বটেই।
নিউইউর্ক সিটির নিউইউর্ক প্রেসবাইটেরিয়ান হাসপাতালে সেন্টার ফর ডায়াবেটিসের ডায়াবেটিস এডুকেটার ও ডায়েটিশিয়ান এরিকাত্ররাসিস বলেন, “বিপাকীয় বিচারে ও পুষ্টির বিচারে প্রাত:রাস রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণের বড় ভূমিকা নিতে পারে। শরীরকে এটি এমন পুষ্টি যোগায়, যাতে সারাদিন শরীরে বলশক্তি পাওয়া যায়।”
নিউইউর্ক সিটির বাথ ইসরায়েল মেডিকেল সেন্টারের ফ্রিডম্যান ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটের অন্য এক ডায়াবেটিশিয়ান জেনিফার রেজেস্টার বলেন, ডায়াবেটিক অনেক রোগী রক্তের সুগার মান নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রাত:রাশ এড়িয়ে যান। যা ঘটে তা হলো, তাদের রক্তের সুগার মান অনেক নিচে নেমে আসে। ফলে তাঁরা খুবই ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে আর এজন্য মধ্যহ্নে অতিভোজ করে, অতিভোজন করে রাতের বেলাতেও। এতে ঘটে রক্তের সুগার মানে চড়াই উৎরাই। অথচ সেব্যক্তি ভালো করে প্রাত:রাশ খেলে এমন বিপত্তি ঘটতোনা।
যদি কোনো লোক সকালবেলা উঠে দেখেন রক্তের সুগার মান উচুতে যেমন ৩০০ মিলিগ্রাম তবু প্রাত:রাশ খেতে হবে, তবে এতে প্রোটিনের প্রাধান্য থাকবে। শর্করা সামান্য খেলে হয়, যেহেতু রক্তের শর্করা উচুতে। আর সেজন্য একে আর বাড়ানোর প্রয়োজন নাই। তবে পরের বেলার খাবারে যখন রক্তের সুগার নেমে আসবে, তখন আবার শর্করাকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঢোকাতে পারবো খাবারে।
কি খেতে হবে ?
প্রাত:রাশে চাই সুষম খাবার। ভালো প্রাত:রাশে থাকবে প্রোটিন, মেদ ও জটিল শর্করা যেমন আটার রুটি বা ঢেঁকিছাটা লাল চাল বা ওটমিল্ । ফল খেতে হয়। জার ফলের জুসের চেয়ে গোটা ফল অনেক ভালো। ফলের জুস খেলে রক্তের সুগার মানের যে উঠানামা হয়, গোটা ফল খেলে তা হয়না। তাই কমলার রসের চেয়ে গোটা কমলা, নাসপাতি বা আপেল অনেক ভালো। প্রাত:রাশের জন্য অনেকগুলো ভালো বিকল্প আছে যেমন-
০ ১ টি ডিমের শ্বেত অংশের ওমলেট, একস্লাইস আটার রুটি, এক টুকরো ফল।
০ একটি ডিমের স্যান্ডউইচ, আটার রুটি আর এক টুকরা ফল।
০ প্রতিসপ্তায় ৪টি ডিমের বেশি খাওয়া ঠিক হবেনা সেজন্য ডিমের শ্বেত অংশের স্যান্ডউইচ নিলে ভালো, অথবা একটি ডিমের সঙ্গে দুটো বা তিনটি ডিমের শ্বেতঅংশের ক্্রাম্বল করে খেতে পারেন।
০ এক বাটি ওটমিল তৈরি করুন। অর্ধেক বাটি ওট বাজইচূর্ণ নিয়ে। শস্যখাদ্য বেশি খাওয়া হয়ে যায় সহজেই, তাই কতখানি নিলেন তা বেশি গুরত্বিপূর্ণ।
০ দুই স্লাইস গমের রুটি এবং পিনাট মাখন দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ খাওয়া যায়।
০ দধি, বাদাম ও ফল। টকদই, বাদাম এবং ফল।
০ খই/মুড়ি/পপকর্ন এবং ননীহীন দুধ।
০ আশযুক্ত শস্য খেলে রক্তের সুগার থাকে সুনিয়ন্ত্রণে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেস, বারডেম, ঢাকা।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ১৫, ২০০৯
Leave a Reply