খুবই পরিচিত সবজি হলো বাঁধাকপি। দামে সস্তা, অথচ পুষ্টিগুণে এর জুড়ি মেলা ভার। কতভাবেই না খাওয়া যায় একে। কাঁচাও খাওয়া যায়। টাটকা সবজিকে ভাপে সেদ্ধ করে জিরার ফোড়ন ও আলু দিয়ে খেলে ওম! মজা! বাঁধাকপি যে সবজি-পরিবারের সদস্য, এর নাম হলো ক্রুসিফেবা পরিবার বা ব্রাসিকা পরিবার। ব্রাসেলস ও ব্রকোলিও এ পরিবারের। নামকরা একজন পুষ্টিবিদ জনি বাওডেন বাঁধাকপি সম্পর্কে বলেন, পুষ্টি হিতকরী ও ক্যানসাররোধী ক্ষমতার বিচারে বাঁধাকপি হলো বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সবজি। বাঁধাকপিতে রয়েছে সালফোরাফেনসহ অন্য অনেক ফাইটোকেমিক্যালস। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ফাইটোকেমিক্যালগুলো শরীরকে ক্যানসারের জনক ফ্রি রেডিকেলের বিধ্বংসী প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এতে রয়েছে ইনডোল, যা স্ত্রী হরমোন ইস্ট্রোজেনের বিপাকে সহায়ক। বাঁধাকপি হলো ভিটামিন কে ও সির ভালো উত্স। এতে আছে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন বিড, ফলেট, ম্যাঙ্গানিজ ও ওমেগা-৩ মেদ-অম্ল। ক্রুসিফেরাস সবজির গন্ধকদ্রব্যে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ, তবে এ সবজিকে বেশি রান্না করলে দুর্গন্ধ হয়। তবে ঠিকভাবে রান্না করলে বাঁধাকপির তরকারির সুবাস মনকে মোহিত করে। বাঁধাকপি রান্নার একটি রেসিপি দিচ্ছি ভয়ে ভয়ে। আমি রাঁধতে জানি না, তবে ভালো খাবার খেতে ভালোবাসি। রেসিপিটা ধার করা বিদেশি বই থেকে, তবে ভালো লাগল, তাই দিলাম।
স্টু করা ডাল ও বাঁধাকপি
এই নম্র ও হূদয়হরা সম্মিলন আপনাদের কাছে একটি তৃপ্তিকর, স্বাদু, প্রধান ডিশ হিসেবে পরিবেশিত হওয়ার যোগ্য। ডালজাতীয় শস্যে রয়েছে প্রচুর ফলেট ও খনিজ মলিবডেনাম; আছে আঁশ, প্রোটিন ও ম্যাঙ্গানিজ। মসুর ডাল হলে ভালো, তবে যেকোনো ডাল হলেও চলবে।
দুই টেবিল-চামচ ভার্জিন জলপাই তেল। একটি মাঝারি পেঁয়াজ, অর্ধেকটি কুচি কুচি করে কাটা, অর্ধেকটি ফালি ফালি করা। তিনটি রসুনের কোয়া পিষে নেবেন।
আধা পাউন্ড ডাল। সাড়ে তিন কাপ পানি। একটি শুকনো মরিচ। ধনেপাতা। লবণ স্বাদমতো।
ছয় আউন্স ছোট আলু, ফালি করা অর্ধ ইঞ্চি পুরু।
এক টেবিল-চামচ জলপাই তেল (সয়াবিন তেলেও করতে পারেন, তবে জলপাই তেল হলে ভালো) সসপ্যানে গরম করবেন, মাঝারি আঁচে। টুকরো করা পেঁয়াজ দেবেন, নাড়বেন, পাঁচ মিনিট মাত্র, সামান্য লাল হবে। এতে দেবেন মসুর ডাল, পানি, মরিচ ও ধনেপাতা। অল্প আঁচে রান্না করুন। এর আগে দুটি রসুনের কোয়া, রসুনবাটা দিয়ে নাড়বেন মিনিটখানেক, গন্ধ বের হবে। এরপর ডাল, পানি, ধনেপাতা দেবেন। আঁচ এবার খুব কমিয়ে দিন, পাত্রটি ঢেকে অল্প আঁচে ভাপে সেদ্ধ করুন ১৫ মিনিট। এক চা-চামচ লবণ ও আলু দিন। এরপর অল্প আঁচে রাখুন আধঘণ্টা, ডাল ও আলু নরম হবে এরই মধ্যে। এরপর গোলমরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিতে পারেন। ভালোই লাগবে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৯, ২০০৯
Leave a Reply