বার্ষিক পরীক্ষা শেষে স্কুল ছুটির সময় এগিয়ে আসছে। হয়তো আপনিও করছেন শীতকালীন ভ্রমণ পরিকল্পনা। শিশুকে নিয়ে কোথাও ভ্রমণের আগে তার সুস্থতা নিশ্চিত রাখতে বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হয়।
টিকাদান
শিশুর টিকাদান সম্পন্ন করা হয়েছে কি না, যে বিশেষ স্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, ওই এলাকার অসুখ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া এবং প্রতিরোধমূলক কোনো টিকা থাকলে শিশু পেয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা।
বেড়াতে যাওয়ার জন্য শিশুকে যেসব প্রতিরোধমূলক টিকা দেওয়া জরুরি সেগুলো হলো—
হেপাটাইটিস-এ
হেপাটাইটিস-বি
ডিপথেরিয়া ও টিটেনাস (ধনুষ্টংকার)
হাম বা মিজেলস ভ্যাকসিন
অন্যান্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
অ্যান্টিরেবিস (কুকুর বা বন্য প্রাণীর কামড়ের প্রতিষেধক)
টাইফয়েড
ইয়েলো ফিভার (দেশভেদে)
মেনে চলুন সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি
সাবান ও পরিষ্কার পানিতে বারবার হাত ধোয়া।
বিশুদ্ধ পানি পান ও ব্যবহার করা। বোতলের বা ফোটানো পানি। বোথ ফিল্টারে পরিশোধিত বা আয়োডিন ট্যাবলেট দ্বারা পরিশোধিত। ট্যাপের পানি, ঝরনার পানি, বরফ বাক্সের পানি ব্যবহার না করা।
যেকোনো খাবার যেন ভালোমতো জ্বাল দেওয়া হয়। ফল-শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিজের হাতে খোসা ছাড়িয়ে রান্না করে তবেই খেতে হবে। নয়তো সেসবের কথা রসনা বা জিবকে জানতে না দেওয়াই উত্তম।
ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় যাওয়ার আগে থেকে ও ফিরে আসার পরে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক ওষুধ পরামর্শমতো গ্রহণ করা।
মশক ও জীবাণুনাশক স্প্রে দৈনিক চার ঘণ্টা অন্তর ব্যবহার করে মশক ও পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া।
শোয়ার সময় ওষুধে চুবানো মশারির ব্যবহার।
খালি পায়ে চলাফেরা না করা। ফান্যাল ও পেরাসাইট সংক্রমণমুক্ত রাখতে দুই পা পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে।
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ফুলহাতা শার্ট ও প্যান্ট শিশুকে পরিধান করানো।
অসুস্থতা ঠেকাতে যা করবেন
পথঘাটের দোকান থেকে খাবার কিনে না খাওয়া।
কোমল পানীয়, বরফ পানীয় না খাওয়ানো।
পাস্তুরায়ণ ছাড়া দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া।
শিশুকে কোনো প্রাণী বা জন্তুর কাছাকাছি না নেওয়া।
সাঁতার না জানা থাকলে পুকুর বা দিঘি, জলাশয় সম্পর্কে সচেতন থাকা।
যা কিছু সঙ্গে রাখবেন
ফুলহাতা শার্ট, প্যান্ট, মোজা ও জুতা।
মশার স্প্রে, মশারি।
চিকিত্সকের পরামর্শমতো ডায়রিয়ার ওষুধ, যেমন—ওআরএস।
আয়োডিন ট্যাবলেট, পানির ফিল্টার, নিরাপদ খাওয়ার পানি।
মাথার টুপি ও রোদচশমা।
চিকিত্সকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র (যদি থাকে) মোতাবেক ওষুধ, অনুলিপি।
প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৯, ২০০৯
Leave a Reply