সকালে ঘুম ভাঙতেই রাজ্যের কাজ এসে যেনো ঝাপিয়ে পড়ে কাধে। আমাদের শহুরে জীবনটাই এমন। বাড়িতে নানান কাজের ঝক্কি সামলে যখন আপনি নামবেন রাজপথে অফিস যাত্রা করতে, তখন আপনাকে আষ্টে-পিষ্ঠে জড়িয়ে ধরবে রাস্তার বেধড়ক ট্রাফিক জ্যাম আর অস্বস্তিকর গরম। গোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে জলবায়ু যেমন চরম ভাবাপন্ন তেমনি আপনার মেজাজটাও কিন্তু একই রকম উত্তপ্ত। আর এই উত্তাপ অনেকটাই ক্রমবর্ধমান। অফিসে ঢুকেই বসের ঝাড়ি। এরপর অগোছালো কাজগুলোকে গোছাতে গোছাতেই ২-৪টা মিটিং এসে হাজির হবে। সব কাজ শেষে যখন আপনি একটু একটু করে অফিস থেকে বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করেছেন তখনই বস ডেকে পাঠাকে আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করার জন্য। ব্যস! আপনার মেজাজটা আর একবার খিচড়ে গেলো। এরপর ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফেরার পরে নিজেকে সংসারের সুখ দুঃখের মাঝে গা ভাসানো কঠিন হয়ে পড়ে। এম সময় অস্থির মনকে বসে আনার জন্য কিছু প্রয়োজনিয় টিপস্ থাকছে এই সংখ্যা কড়চায়। মাথা ঠান্ডা করে একটু স্মরণ করে এই টিপসগুলো মেনে চললে সহজেই আপনি জীবনটাকে আর একটু সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারবেন।
০ সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই হুড়মুড়িয়ে কাজে ঝাপিয়ে পড়বেন না। নিজের জন্য একটু সময় বের করে নিন। অন্তত্য ১৫ মিনিট সময় রাখুন নিজের জন্য। এই সময়টাতে একটু শরীরচর্চা, জোগ আসন এসব করলে শরীরে প্রশান্তি আসবে। সমস্যার মোকাবেলা আরো সহজে করতে পারবেন। যদি শরীর চর্চায় খুব অনিহা থাকে তাহলে নিজের উপরে জোর খাটাতে যাবেন না। চেষ্টা করুন নিজের পছন্দের কোনো কাজ করতে। যেমন ধরুন ফুলের টবে পানি দেয়া, বারান্দায় একটু হাটা, একটু সময় নিয়ে পত্রিকা পড়া কিংবা পছন্দের কোনো গান শোনা। এমন কিছু টুকটাক কাজে আপনার মন হালকা থাকবে।
০ ঘরের কাজের সব দায়িত্ব নিজের হাতে নিবেন না। এতে অহেতুক চাপ বাড়বে পাশাপাশি কাজও অনেক এলোমেলো হয়ে যাবে। পরিবারের বাকি সদস্যদের মাঝে কাজগুলো ভাগ করে দিন। পুরুষরা অবশ্যই গৃহিনীর উপরে সব কাজের চাপ দিবেন না। আবার সব নিজে নিজেও করতে যাবেন না। পছন্দের কাজগুলো দুজন মিলে ভাগ করে নিন। আর গিন্নিরাও সব কাজ নিজে না করে চেষ্টা করুন স্বামীর সাথে কিছু কাজ ভাগ করে নিতে। নাস্তাটা আপনি তৈরি করতে ব্যস্ত থাকলে কর্তাকে বলুন ছেলেমেয়েদের স্কুলের জন্য তৈরি করে দিতে।
০ ধরুন আজ অফিসে যাওয়ার আগ মুহূর্তেই কোনো কারণে মেজাজ তিরিক্ষে হয়ে গেলো। সেক্ষেত্রে অফিস যাবার প্রস্তুতিটাকে একটু রাঙ্গিয়ে তুলুন। নিজের ঘরে একটু সময় নিয়ে সেজেগুজে তৈরি হন মেয়েরা। পছন্দের কোনো শাড়ি কিংবা কামিজ পড়ুন। একটু সাজুন। আর গায়ে মেখে নিন নিজের সবচেয়ে পছন্দের পারফিউমটি। ছেলের ক্ষেত্রেও তাই। মুডে পরিবর্তন আনতে আজ একটু কালারফুল একটা টাই ট্রাই করে দেখুন। শু-টা হয়তো ২-৩দিন কালি করা হয় না। আজ একটু কালি মাখিয়ে ঝকঝকে করে নিন। কচকচে ভাজ খোলা একটা শার্ট পড়ে রওনা দিন অফিসের দিকে। দেখবেন মুহুর্তে আপনার কালি মাখা মুডটা কেমন ঝকমক করে উঠে।
০ অফিস থেকে যাত্রা পথে মেজাজ ঠান্ডা রাখতে পছন্দের কোনো মিউজিক ট্রাই করতে পারেন। সঙ্গে চেষ্টা করুন পানির বোতল রাখতে। এক চুমুক খাবার পানিও কিন্তু অনেক সময় তেষ্টার সাথে সাথে মেজাজ ঠান্ডা করতেও সহায়ক হয়ে থাকে।
০ অফিস থেকে বের হবার শেষ সময়টাতেও মেজাজ গরম হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অফিস থেকে সোজা বাড়ি না গিয়ে একটু শপিংএ বেরুতে। আর কারো জন্য নয়, কেবল নিজের জন্য কিছু শপিং করুন বাড়ি ফিরবার সময়। দেখবেন মেজাজটা একেবারে চনমনে হয়ে যাবে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, অক্টোবর ২০, ২০০৯
Leave a Reply