বিজ্ঞানের সত্যগুলো জেনে নেয়া উচিত সবারই
ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্টগুলো আবার সক্রিয় হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বিষয়ক আইনটি পাস হয়েছে। এটি অত্যন্ত ভাল একটি উদ্যোগ। এ রকম একটি আইন অনেক আগেই প্রয়োজন ছিল। এটি পাস করার জন্য সরকারকে অভিনন্দন। আশাকরি এখন এই আইনটি হয়ে যাওয়ার ফলে খাদ্যে ভেজালবিরোধী সরকারের কর্মকাণ্ড যথেষ্ট গতি পাবে।
মানুষ মিডিয়া থেকে জানতে পারছে আমাদের খাদ্যগুলোতে কী মারাত্মক পরিমাণ প্রাণঘাতি ভেজাল মেশানো হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ সরকার ও মোবাইল কোর্টের এই তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। তবে মানুষ আশা করছে মোবাইল কোর্টগুলো আরো অর্থবহ হোক।
মোবাইল কোর্টগুলো খাদ্যে মেশানো বিভিন্ন ধরনের ভেজালগুলোকে আটক করছে। এদের হোতাদেরকে জরিমানা করছে। কিন্তু খাদ্যে যে সব ক্ষতিকর রং মেশানো হচ্ছে এর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টগুলোর তৎপরতার তেমন খবর মিডিয়াতে আসছে না। কিন্তু জনস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যে ক্ষতিকর রংয়ের উপস্থিতি মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। সরকার ও মোবাইল কোর্টগুলোর এ-বিষয়ে মনোযোগ প্রদান অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
মানুষ রঙিন খাদ্য পছন্দ করে। প্রকৃতিতে যে সব খাদ্য পাওয়া যায় যেমন শাক-সবজি ফলমূল ইত্যাদি সবই রঙিন। কিন্তু এগুলো সমস্যা নয়। কারণ প্রাকৃতিক রং স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। ফলে এগুলো যত খুশি খাওয়া যায়। সমস্যা হলো কৃত্রিম বা সিনথেটিক রংগুলোকে নিয়ে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এমনকি অনেক সময় প্রাণঘাতী। তেলেভাজা প্রায় সবগুলো সামগ্রী যেমন পেঁয়াজু, ছোলা, বেগুনি, আলুর চপ, মাংসের চপ, কাবাব, কাটলেট, তেহারি, হালিম, জিলাপি ইত্যাদির যে স্বাভাবিক রঙ তা দীর্ঘক্ষণ তেলে ভাজার কারণে হওয়ার কথা। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা তা করে না। তারা এগুলোতে কৃত্রিম রং মেশায় এগুলোকে আকর্ষণীয় করার জন্য। বিভিন্ন সিরাপ বা পাউডার দিয়ে ঘরে তৈরি শরবত, বাজারে বিক্রিত প্যাকেটজাত হরেক নামের তথাকথিত আমের বা কমলার রস, কিংবা কোল্ড ড্রিংকস নামের অজস্র রঙিন পানীয় ইত্যাদি সবকিছুতেই থাকে কৃত্রিম বিষাক্ত রংয়ের উপস্থিতি। বেকারী বা কনফেকশনারির বিস্কুট, কেক, পেস্ট্রি থেকে শুরু করে পটেটো চিপস্, চানাচুর, আইসক্রিম, লজেন্স, টফি, চকলেট, সস, জেলি, মারমালেড, আচার, নুডলস্, সেমাই, লাচ্ছা সেমাই, পোলাও, বিরিয়ানী, জর্দা ইত্যাদিতেও হচ্ছে ক্ষতিকর কৃত্রিম রংয়ের ব্যবহার।
এখন প্রশ্ন হলো বিভিন্ন খাবার ও পানীয়কে আকর্ষণীয় করতে হলুদ, কমলা, লাল, সবুজ ইত্যাদি রংয়ের এই যে ব্যবহার তা নিরাপদ কিনা। এর উত্তর হচ্ছে না, এগুলো মোটেও নিরাপদ নয়। বিজ্ঞানীরা কিছু কৃত্রিম রংকে খাদ্য ও পানীয়তে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। এগুলোকে বলে ‘পারমিটেড ফুড কালার’। খাদ্য ও পানীয়ে ব্যবহৃত কৃত্রিম রংগুলো বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। পারমিটেড কালারগুলোও এ দোষ থেকে একেবারে মুক্ত নয়, তবে তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর। কিন্তু যেহেতু কৃত্রিম রংগুলো স্বাস্থ্যের নানাবিধ ক্ষতি করলেও খাদ্য ও পানীয়ে রং ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ প্রবল, তাই তুলনামূলকভাবে নিরাপদ রংগুলোকে পারমিটেড ফুড কালার হিসাবে বিজ্ঞানীরা তালিকাভুক্ত করেছেন। কিন্তু আমাদের বাজারের খাদ্য ও পানীয়তে আমরা যে সব রং পাচ্ছি সেগুলো পারমিটেড ফুড কালার নয়।
পারমিটেড ফুড কালারগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। রং যেহেতু সব দেখতে এক রকমই, অসাধু ব্যবসায়ীরা তাই অতি মুনাফার লোভে পারমিটেড ফুড কালারের বদলে একই রকম দেখতে, সস্তা কিন্তু অত্যন্ত ক্ষতিকর ‘টেক্সটাইল কালার’ সেখানে বসিয়ে দেয়। বিজ্ঞাপনের কারণে সরল বিশ্বাসে নিরাপদ মনে করে আপনি সে ক্ষতিকর টেক্সটাইল রং মেশানো খাবার নিজে কিনে খাচ্ছেন, বাচ্চাদেরও মুখে তুলে দিচ্ছেন। অথচ এই টেক্সটাইল কালার আপনার পাকস্থলিতে প্রবেশের কথা ছিল না। কথা ছিল এগুলো কাপড়ের কারখানায় থাকার, সেভাবেই এদেশে এগুলোকে আমদানির জন্য সরকার থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভ ক্ষতিকর এসব রং কাপড়ের কারখানা থেকে আপনার খাবারে নিয়ে এসেছে।
আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, কাপড়ের কারখানার আশেপাশে নদী-খাল বা অন্য জলাশয়গুলোর পানি রঙিন। এসব রং প্রকৃতিতে গিয়েও দীর্ঘদিন সহজে পরিবর্তিত হয় না অর্থাৎ এগুলোর অধিকাংশই বায়ো-ডিগ্রেডেবল নয়। ফলে কাপড়ের কারখানার রঙিন বর্জ্য যে সব নদী খাল বা জলাশয়ে নির্গত হয় সেগুলোর মাছ ও অন্যান্য কীট-পতঙ্গ মরে যায়, মরে যায় শৈবালসহ সব ধরনের জলজ উদ্ভিদ, অর্থাৎ জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ক্ষতি হয় মারাত্মক ও দীর্ঘস্থায়ী। এই টেক্সটাইল কালারগুলো খাদ্য ও পানীয়ের সঙ্গে মিশে শরীরে প্রবেশের পর এমন কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেই যার ক্ষতি করে না। তবে সবচেয়ে বেশি ও দৃশ্যমান ক্ষতিগুলো হয় আমাদের লিভার, কিডনী, হৃদপিণ্ড ও অস্থিমজ্জার। ধীরে-ধীরে এগুলো নষ্ট হয়ে যায়। বাচ্চা ও বৃদ্ধদের বেলায় নষ্ট হয় তাড়াতাড়ি, তরুণ-তরুণীদের কিছুটা দেরিতে। আজকাল আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনী ফেলিউর, হৃদযন্ত্রের অসুখ, হাঁপানী এগুলো অত্যন্ত বেড়ে গেছে। সব বয়সী লোকজনই এতে আক্রান্ত হস্তে, তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বাচ্চারা। আমাদের বিশ্বাস এর প্রধান কারণ আমাদের দেশের খাদ্যে ব্যাপক পরিমাণে বিভিন্ন নকল-ভেজাল উপাদান ও ক্ষতিকর রংয়ের ব্যবহার। বায়ো-ডিগ্রেডেবল নয় বলে এসব টেক্সটাইল কালার আমাদের দেহে প্রবেশের পর শরীরের মেটাবোলিজম বা বিপাক ক্রিয়াতেও নষ্ট না হয়ে দীর্ঘদিন শরীরে থেকে ক্রমাগত প্রাণঘাতী ক্ষতি করতেই থাকে।
আমাদের বাজারে আই সি আই, বায়ার, মার্ক, ডোলডার ইত্যাদি কোম্পানীর পাশাপাশি ভারতীয় বেশ কিছু কোম্পানীর টেক্সটাইল কালার দেদার বিক্রি হয়। রং বিক্রির ওপরে এদেশে কোন বিধিনিষেধ নেই বলে এই টেক্সটাইল কালারগুলো কোন না কোন কাপড়ের কারখানা থেকে কালো পথে খোলা বাজারে চলে আসে এবং তা আসছে যুগের পর যুগ ধরে। ফলে এ অন্যায়টিকে মানুষ আর অন্যায় বলেই মনে করছে না।
বাংলাদেশে যে সব টেক্সটাইল কালার বিক্রি হয় তার তালিকা দীর্ঘ। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃতগুলো হলো অরামিন, অরেঞ্জ টু, মেটানিল ইয়েলো, রোডামিন বি, ব্লু ভিআরএস ইত্যাদি। মিষ্টির দোকানগুলোর দই-মিষ্টি, কনফেকশনারীর কেক-বিস্কুট-পেস্ট্রি-টফি-লজেন্স, কিংবা খাদ্য উৎপাদকদের চানাচুর-জ্যাম-জেলী-জুস-আচারে হলুদ রংয়ের জন্য মেটানিল ইয়েলো এবং লাল রংয়ের জন্য রোডামিন বি বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আরো যে টেক্সটাইল কালারগুলো ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্ল্যাক এসবি, সান ইয়েলো আরসিএইচ, স্কাই ইয়েলো এফবি, ইয়েলো ৩জিএক্স, অরেঞ্জ এসই, অরেঞ্জ জিআর পিওপি, স্কারলেট ৪বিএস, গ্রিন পিএলএস, বরদু বিডব্লিউ, ফাস্ট রেড ৫বি, টুর্ক ব্লু জিএল, ব্রাউন সিএন ইত্যাদি।
টেক্সটাইল কালার খাওয়ার পর শরীরে বিভিন্ন রকম এলার্জিক প্রতিক্রিয়া, হাঁপানীর তীব্রতা বেড়ে যাওয়া, যাদের হাঁপানী নেই তাদের হাঁপানী হওয়া, পাকস্থলিতে হজমের গোলযোগ, পেটে তীব্র গ্যাস, পেপটিক আলসার, অস্থিমজ্জায় গোলযোগের কারণে রক্তকণিকার অস্বাভাবিকতা, লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার, কিডনীর অকার্যকারিতাসহ নানাবিধ দুরারোগ্য অসুখ ও জীবনহানী ঘটতে পারে।
দুঃসংবাদ আরো আছে। ইদানিং কোন কোন মিষ্টিতে টেক্সটাইল কালারের বদলে ‘লেদার কালার’ ব্যবহার করা হচ্ছে কারণ লেদার কালার বা জুতা বেল্ট ব্যাগ ইত্যাদিতে ব্যবহৃত রং মিষ্টিকে অনেক চক্চকে করে। লেদার কালারগুলোর ক্ষতি টেক্সটাইল কালারগুলোর চাইতেও বেশি। টেক্সটাইল কালার ও লেদার কালার কোন কারখানা ব্যবহার করছে কিনা তা এসব কারণেই মোবাইল কোর্টগুলোর অবশ্যই দেখা উচিত।
এমনকি বিজ্ঞানীদের অনুমোদিত রং বা পারমিটেড ফুড কালারগুলো নিয়েও সমস্যা আছে। আমাদের দেশে তহবিলের অভাবে সম্ভব না হলেও উন্নত দেশগুলোতে বিজ্ঞানীরা সব সময় বাজারের ওপর নজরদারি রাখেন। অনুমোদিত রংগুলো দিয়ে তৈরি পণ্য সে জন্য তারা নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করে থাকেন। বিজ্ঞান দিনকে দিন এগিয়ে যাচ্ছে, নতুন নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হচ্ছে। ফলে এক সময় যে রংগুলোকে স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ মনে করে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল সেগুলোর কোন কোনটাতে এখন স্বাস্থ্যহানীকর বিরূপ-প্রতিক্রিয়া বা ঝুঁকি ধরা পড়ছে। ফলে সেগুলো এখন নিরাপদ বা অনুমোদিত তালিকা থেকে বাদ পড়ছে। অর্থাৎ মানুষ নিরাপদ মনে করে দীর্ঘদিন যে অনুমোদিত ফুড কালারগুলো ব্যবহার করে আসছিল, হঠাৎ আবিষ্কৃত হলো তার অনেকগুলোর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া। হয়তো ইতোমধ্যে অনেকের শরীরেই এ ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করেছে। এর জন্য যে বিজ্ঞানীরা আগে কিছু রংকে নিরাপদ ঘোষণা করেছিলেন তাদেরকে দোষারোপ করে লাভ নেই। তখন ধরা পড়েনি যে এটি ক্ষতিকর তাই তখন এটি অনুমোদন করা হয়েছিল, এখন ক্ষতি ধরা পড়েছে তাই এখন এটি বাদ দিতে হবে। এই হলো নিয়ম। কিন্তু যে মানুষের শরীরে ক্ষতি হয়ে গেল সে তো আর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারছে না।
তাহলে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয়ে ব্যবহৃত কৃত্রিম রংগুলো নিয়ে অর্থাৎ ফুড কালার, টেক্সটাইল কালার ও লেদার কালারগুলো নিয়ে যথেষ্ট স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে ফুড কালারগুলো নিরাপদ হলেও চূড়ান্ত বিচারে এগুলোও ঝুঁকিমুক্ত নয়। এর আরো কারণ আছে। ফুড কালারগুলোর সর্বোচ্চ নিরাপদ মাত্রা-সীমা রয়েছে। অর্থাৎ এ নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি ব্যবহার করলে শরীরের ক্ষতি হবে। একেক দেশে এ মাত্রা-সীমা একেক রকম। তুলনামূলকভাবে কম প্রযুক্তিগত দক্ষতাসম্পন্ন দেশগুলোতে এ মাত্রা-সীমা বেশি, কিন্তু উন্নত প্রযুক্তিগত দক্ষতার দেশগুলোতে মাত্রাটি কম। আমাদের মতো গরিব দেশে কোন খাদ্য ও পানীয় উৎপাদক এ মাত্রা-সীমা মেনে অনুমোদিত রং মেশাচ্ছে কিনা তা দেখার কোন সংস্থা বা পরীক্ষা করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এখনো নেই। যে দেশে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ দেখার জন্য এখনো কোন কেন্দ্রীয় সংস্থা বা ল্যাব সুবিধা নেই, সে দেশে কোন খাদ্য বা পানীয়তে ব্যবসায়ীর কথা অনুযায়ী অননুমোদিত রংয়ের বদলে অনুমোদিত রং মেশানো হয়েছে এটা জেনে তাই আশ্বস্ত হওয়ার কোন কারণও নেই।
উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, প্রথমত, খাদ্য বা পানীয়ে অনুমোদিত রং ছাড়া অন্য কোন রং থাকা অত্যন্ত ক্ষতিকর; দ্বিতীয়ত, খাদ্য বা পানীয়ের অনুমোদিত রংগুলোও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে বলে এগুলোর ব্যবহারও ঝুঁকিপূর্ণ। অতএব সবচেয়ে ভাল হলো আমাদের খাদ্য ও পানীয়ে রং একবারেই ব্যবহার না করা এবং কৃত্রিম রং দিয়ে রাঙানো যে কোন খাদ্য ও পানীয় পরিহার করা। নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরা রক্ষার এটি সবচেয়ে ভাল পথ।
যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন যে তাহলে নিরাপদ রং কোন্টি? এর পরিষ্কার উত্তর হলো বিজ্ঞানীরা এখনো এমন কোন রংয়ের দেখা পাননি। তাছাড়া খাদ্য ও পানীয়ে রং ব্যবহারে খাদ্যের স্বাদ বা পুষ্টিমান কোনটাই বাড়ে না। তবে বাড়ে এর আকর্ষণ অর্থাৎ বাণিজ্যিক মূল্য। উৎপাদকরা রং মিশিয়ে খাদ্য ও পানীয়ের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে ব্যবহারকারীর। রঙিন খাবারের প্রতি আমাদের আকর্ষণের এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার স্বার্থেই।
তাই আসুন সিদ্ধান্ত নেই, আমাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা রঙিন খাদ্য ও পানীয় পরিহার করবো। এমনকি নিজেরাও ঘরে খাবার তৈরির সময় কোন কৃত্রিম রং মেশাবো না। যেমন শরবত, জর্দা, পোলাও ইত্যাদি তৈরির সময় আমরা খাবারের প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক রঙ ছাড়া অন্য কোন রং মেশাবো না। আসুন বিষাক্ত রংবিরোধী এই নিরাপদ খাদ্যের আন্দোলনটি নিজেরা যার যার বাড়ি থেকে শুরু করি। বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ না হয়ে বিজ্ঞানের সত্যগুলোকে গ্রহণ করে সতর্ক হই। কারণ শরীরটা আপনার, এর ভালমন্দ দেখার দায়িত্বও আপনার।
প্রফেসর আ ব ম ফারুক
লেখক: ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সভাপতি, বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল সোসাইটি
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, অক্টোবর ১০, ২০০৯
Leave a Reply