‘কিপ ইয়োর আইস অন দ্য রোড/ ইয়োর হ্যান্ডস আপন দ্য হুইল/ ইয়েহ, উই আর গোয়িন টু দ্য রোডহাউস…’
জিম মরিসনের সেই বিখ্যাত গানের রোডহাউসে যাওয়া সবার পক্ষে বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে হাল আমলের খাবারের দোকান রোডহাউস কিন্তু আপনার জন্য ঠিক তৈরি হয়ে অপেক্ষা করছে ঢাকার গুলশানে। গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে যাওয়ার পথে ৭১ নম্বর রোডের ৭/২ নম্বর লাল ইটের বাড়িটিই রোডহাউস।
শজনেগাছে ছাওয়া
রাস্তার পাশেই দুটো বড় শজনেগাছকে সঙ্গ দিচ্ছে একটি কাঁঠালগাছ। তার নিচ দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই রোডহাউস। এল আকৃতির বিশাল বাড়ি। মাঝখানটায় খোলা জায়গা। ছোট্ট একটা মঞ্চ, অল্প কিছুটা বসার জায়গা। এই চত্বরেই খোলা আকাশের নিচে সন্ধ্যায় বসে গানের আসর। গান শুনতে শুনতে চত্বরে বসেই খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে পারবেন। দোতলা রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে খেতে খেতেও উপভোগ করতে পারবেন গান। রোডহাউসের পরিবেশটাই এমন। আটজন উদ্যোক্তার পরিশ্রমের ফল এই রেস্তোঁরা। এঁদের একজন গাজী আবুল হাসনাত বলেন, ‘এই খোলা জায়গাটা কাজে লাগিয়ে আমরা রেস্টুরেন্টে তিন গুণ লোক বসাতে পারতাম। তা না করে একটু খোলা হাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
ছাদের ফুটো দিয়ে চাঁদ
একটু কল্পনা করুন তো, প্রিয় মানুষকে নিয়ে কোথাও খেতে বসেছেন। মাথার ওপরে ছাদটা গোল করে কাটা। সেখান দিয়ে চাঁদের আলো এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে আপনাদের। রোডহাউসে ঠিক এ রকম ব্যবস্থাই করা আছে আপনার জন্য। চাইলে আগে থেকেই জায়গাটা রিজার্ভ করে রাখতে পারেন কোনো বিশেষ মুহূর্তের জন্য। ছাদের ফুটো দিয়ে আসা চাঁদের আলোয় খাওয়াদাওয়া। ব্যাপারটাই অন্য রকম!
খাওয়াদাওয়ার কথা
আপনি চাহিদা জানানোর পর রান্না শুরু করেন রোডহাউসের শেফরা। তাই খাবার দিতে দেরি হলে অধৈর্য হবেন না। উপভোগ করতে থাকুন চারপাশের পরিবেশ। কন্টিনেন্টাল, চায়নিজ থেকে তন্দুরি, কাবাব—বিভিন্ন স্বাদের খাবার পাওয়া যাবে এখানে। আছে হরেক রকমের জুস ও পানীয়। বাচ্চা থেকে বুড়ো—সবার কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছে মেন্যু চার্ট, যাতে পুরো পরিবার একসঙ্গে এক জায়গায় উপভোগ করতে পারে সময়টুকু।
শুধু পরিবার নয়, এখানে খেতে আসতে পারেন বিভিন্ন উৎসবে দল বেঁধে, কিংবা কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজনে। দেড় শ জনের অনুষ্ঠান অনায়াসে করতে পারবেন এখানে। গানের আয়োজনটাও করে নিতে পারবেন নিজের মতো করে।
শোনার এবং গাওয়ার সুযোগ
নতুন শিল্পীদের জন্য রোডহাউসে থাকছে বিশেষ সুযোগ। অনুমতি নিয়ে নিজেদের মতো করে তাঁরা এখানে আয়োজন করতে পারেন বিভিন্ন কনসার্ট। সে জন্য বাড়তি কোনো চার্জ নেই। তবে গানটা অবশ্যই গাইতে জানতে হবে। এ ছাড়া জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে নিয়মিতই রোডহাউসে কনসার্ট হচ্ছে। যাঁরাই গান না কেন, রোডহাউসে আসা সবাই এমনিতেই তা উপভোগ করতে পারবেন।
সিঙ্গাপুর স্টেক
উপকরণ: গরুর মাংস ২৫০-৩০০ গ্রাম, আনারস এক ফালি, বারবি কিউ সস, বিশেষ মেয়নেজ (তৈরি করতে হয় পেঁপে পেস্ট, মাস্টার্ড পেস্ট, গোলমরিচ, তেল, তেজপাতা, টমেটো সস দিয়ে)। ব্রাউন সস (তৈরি করতে হয় গরুর হাড়, গরুর ঝুরা মাংস, ময়দা, গোলমরিচ, টমেটো কেচাপ, মাখন, তেজপাতা দিয়ে), সবজি, আলু
প্রণালি: প্রথমে বিভিন্ন মসলা দিয়ে বিশেষ মেয়নেজ তৈরি করতে হবে।
এবার মাংসের কিমাটা নিয়ে মেয়নেজে ভিজিয়ে রাখতে হবে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট। যত বেশি সময় মেয়নেজে ভিজিয়ে রাখা হবে, স্টেকের স্বাদ ততই বাড়বে।
ভেজানো মাংসের কিমা নিয়ে গ্রিল করতে হবে ১৫-২০ মিনিট। এরপর বারবি কিউ সস দিয়ে গ্রিল প্রস্তুত করতে হবে। আনারস গোল করে এক ফালি কেটে নিতে হবে। এবার প্লেটে আগে থেকে তৈরি করা সবজি দিয়ে সাজাতে হবে। সঙ্গে বাড়তি হিসেবে থাকবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই অথবা ম্যাশ পটেটো।
পার্থ সরকার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৮, ২০১০
Leave a Reply