এমন অনেক সমস্যা আছে, যা কাউকে বলা যায় না। এ রকম প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন সারা যাকের। ১৫ দিন অন্তর সুবন্ধু সমীপেষু কলামে চিঠি লিখুন সাদা কাগজের এক পিঠে সংক্ষেপে, ঠিকানাসহ। চিঠি পাঠানোর ঠিকানা :
সুবন্ধু সমীপেষু, নকশা, প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
আমার বয়স ২৮। বিদেশে কাজ করি।কয়েক মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসার পর আমার এক মামাতো বোনের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছিল। এরপর পরিবারের সম্মতিতে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিই। সে এবং তার পরিবারও রাজি ছিল। এরপর তাকে অনেক উপহার দিয়েছি। বিয়ের কোনো কাবিননামা না করেই আমি ছুটি শেষে আবার বিদেশে চলে যাই। তখন মেয়েটি আমার কাছে ফোনে একটি সোনার গয়না চেয়েছিল। আমি যেকোনো সমস্যার কারণে দিতে পারিনি। ফলে মেয়েটি আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। আমি তাকে অনেক চেষ্টা করেও বোঝাতে পারছি না। সে এক কথাই বলে, আমি তোমাকে বিয়ে করব না। এখন আমি অনেক হতাশা ও কষ্টে আছি। এমনকি আমার পরিবারও এ ব্যাপারে হতাশ।
অরণ্য
কিশোরগঞ্জ
প্রবাসী পাত্রের সঙ্গে লেনদেনের ব্যাপারটা বোধহয় একটু বেশি প্রকট হয়। মেয়েটা এবং তার পরিবার হয়তো কিছু আশা করছিল—এক ধরনের ‘মুখ দর্শন’ হিসেবে। এটা হচ্ছে ভালো দিক। আবার মন্দও হতে পারে, তারা ভাবছে, প্রবাসী পাত্রের কাছে অনেক কিছু বাগাতে না পারলে বিয়ের সম্পর্কে যাওয়া বৃথা।
আপনিই ভালো বুঝবেন বিষয়টা আসলে কী। বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিন।
আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে আমি আমাদের শ্রেণীশিক্ষকের কাছে বাসায় পড়তে যাই না। তিনি অন্য ছাত্রদের শারীরিক শাস্তি বন্ধ না করলেও আমাকে কোনো দিন শারীরিক শাস্তি দেননি। কিন্তু আমাকে নানা হুমকি দেন। আবার কথায় কথায় ছাড়পত্র দেওয়ার ভয় দেখান। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করার মতো সাহস আমার নেই। আমার অভিভাবকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তাঁরা বলেন, তুমি মাস শেষে তাঁকে ৫০০ টাকা দিয়ে আসো। আমি এই পরিস্থিতিতে কী করতে পারি?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
তোমার অভিভাবক যা বলছেন সেটা প্রতিহিংসা ঠেকানোর সাময়িক অপকৌশল। নীতিগতভাবে এটা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমিও সে পরামর্শ দেব না। তবে এ মুহূর্তে কি তোমার স্কুল পাল্টানো সম্ভব এবং স্কুল পাল্টে এ রকম হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব!
ব্যাপারটা বুঝে দেখ।
আমি একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসি। তার সঙ্গে আমার বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো, আমি বর্তমানে বেকার। তাকে তার পরিবার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। সে আমাদের গোপন সম্পর্কের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে রেখেছে। এখন টাকা চায়। ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না। ইদানীং সে কিছু বখাটেদের সঙ্গেও মিশছে। শোনা যায় তাদের সঙ্গে একত্রে দেশের বাইরে ঘুরতেও যায়। কিন্তু ও নাকি মনে-প্রাণে আমাকেই ভালোবাসে। সম্প্রতি আমার অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক হয়েছে। এই মেয়েটি আমার সন্তানের মা হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমি আমার আগের প্রেমিকাকে নিয়ে সুখী হতে চাই। আমার কোনো চাকরি বা ব্যবসা নেই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বেশ কিছু মামলাও আমার নামে আছে। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী? আমি অসহায়।
ঠিকানা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
কোনো পরিস্থিতি শুনেই বোঝার উপায় নেই যে আপনি বিয়ের সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত। আপনার জীবনের নানা রকম জটিলতা আছে। আগে সেসব ঠিক করুন, তারপর সংসার-সন্তানের কথা চিন্তা করা যাবে।
আমার সমস্যা হলো, আমাদের পাশের বাড়িতে আমার আপন এক চাচি থাকেন। চাচা প্রবাসী। তাঁদের একটি সন্তান আছে। ২০০৭ সাল থেকে চাচির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতাম। মাঝেমধ্যে প্রায় সারা রাত কথা হতো। প্রয়োজন ছাড়া আমরা অপ্রাসঙ্গিক ও অনৈতিক কথাও বলতাম। একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়। ২০০৮ সালে আমার চাচা বিদেশ থেকে ফিরলে আমরা কিছুটা সংযত হই। সে সময় আমরা মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলতাম। ছয় মাস পর চাচা পুনরায় বিদেশ চলে গেলে আমাদের সম্পর্ক আগের মতো হয়ে যায়। চাচার বাসা আমাদের পাশে হওয়ায় এ সুযোগ পেয়ে যাই। আমরা জানি, আমাদের এটা ঠিক হচ্ছে না। দুই-তিন মাসের মধ্য চাচা বিদেশ থেকে আসবেন। তখন আমাদের ভীষণ কষ্ট হবে। আমরা কী করে আমাদের এই অবৈধ সম্পর্ক ত্যাগ করতে পারি?
মাহমুদুল হাসান
সাতক্ষীরা।
এ সম্পর্ক থেকে আপনার পরিত্রাণ পেতে হবে, এর কোনো অন্যথা নেই। আপনি অন্য কোনো শহরে চলে যান। দূরে সরে না গেলে এই সম্পর্ক চলতেই থাকবে, যা আপনার মানসিক বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
অবৈধ সম্পর্ক মানুষকে নানাভাবে পঙ্গু করে দেয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১১, ২০১০
Leave a Reply