শীত এলে কত আয়োজনই না থাকে। পোশাক-পরিচ্ছদে তো বটেই, ঘরের সাজসজ্জায়ও আসে নানা পরিবর্তন। অনেকে সারা বছর হয়তো মেঝে খোলা রাখেন, শীত এলেই পাতেন নানা নকশার বর্ণিল সব কার্পেট আর ম্যাট। শীত থেকে রক্ষা আর সৌন্দর্য—দুই দিকে লক্ষ রেখেই কার্পেট পাতা হয়। ঘর বা অফিসের অন্দরসাজ করে দেয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটোর স্বত্বাধিকারী রাশিদ খান বলেন, শীতে কার্পেটের ব্যবহার একটু বেশিই হয়। আর কার্পেট তো কেবল বিছালেই হয় না, কোনো ঘরের জন্য সেই ঘরের আসবাব, পর্দার রং ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে কার্পেট নির্বাচন করতে হয়। রাশিদ খান আরও বলেন, ধরা যাক, কার্পেটটা বসার ঘরে বিছানো হলো। সে ক্ষেত্রে ঘরের পর্দা, বিছানার চাদরের সঙ্গে মিল রেখে কিংবা সম্পূর্ণ বিপরীত রঙের কার্পেট ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাশন ঘুরে ঘুরে আসে। কার্পেটের ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। এখন পুরোনো আমলের মোটিফ আর ধাতবের কাজ খুব বেশি চলছে। মোটা ভারী আর কারুকার্যময় কার্পেটগুলো এখন আবার বসার ঘরে জায়গা করে নিয়েছে। কার্পেটের আকার সব সময় যে চার কোনাকার হবে এমনটা নয়। হয়তো বসার ঘরের কোনো একটা টেবিল বা চার কোনার যেকোনো একটা কোনার আকারের সঙ্গে মিলিয়ে নির্বাচন করা হচ্ছে কার্পেট। এ ছাড়া কুশন কভারের নকশা বা কুশনের আকারের অপেক্ষাকৃত বড় কার্পেটও ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঘরজোড়া কার্পেটের চেয়ে ছোট কার্পেটের ব্যবহার বর্তমানে বেড়েছে। ছোট কয়েকটা কার্পেট দিয়ে বসার ঘর সাজানো যায়। আর চারদিকে ফাঁকা জায়গাটা ম্যাট দিয়ে মুড়ে দেওয়া যেতে পারে। খাবার ঘরে কার্পেটের ব্যবহার কম হয়। তবে খাবারটেবিলের কাচটা যদি স্বচ্ছ হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে টেবিলের অংশটায় কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বচ্ছ কাচের মাঝে নকশা করা কার্পেট দেখা যায়। আর চারপাশে চিকন করে ম্যাট বিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। শোবারঘরে বিছানা থেকে নেমেই পা রাখার জায়গাটা অর্থাৎ ফুট ল্যান্ডিং স্পেসে চিকন নকশা করা কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। আর পুরো ঘরে পাতলা বা হালকা কাজ করা কার্পেট ব্যবহার করলে মন্দ হয় না। ছোট্ট সোনামণির ঘরের জন্য অপেক্ষাকৃত বর্ণিল আর কার্টুন আঁকা কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। সেগুলো একটু ভারী হলেই ভালো।
বাহারি নকশা আর আকারের কার্পেটের দামটাও একটু বেশি। এলিফ্যান্ট রোডের দোকান কন্টিনেন্টাল কার্পেট লিমিটেডের কর্মী মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, পিস কার্পেটের চলটা এখন বেশি। তুরস্ক, চীন, বেলজিয়াম আর দুবাই থেকে আসা কার্পেট এখন প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। তবে তুরস্কের কার্পেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এই কার্পেটের বুনন অনেক বেশি মজবুত আর এর দামটাও একটু বেশি। এই কার্পেট বিভিন্ন আকারের কেনা যাবে ১১ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকায়। একেবারে ছোট আকারের চার বাই ছয় ফিট কার্পেট কেনা যাবে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। চীনা বিভিন্ন আকারের কার্পেট কেনা যাবে ছয় হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়। বেলজিয়ামের কার্পেট কেনা যাবে আড়াই থেকে সাত হাজার টাকায়। দেশীয় পাটের ম্যাট কেনা যাবে প্রতি গজ ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।
কার্পেট কিনতে পারবেন রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, বায়তুল মোকাররম, গুলশান-২ থেকে।
চাইলে পুরোনো কার্পেট রং করে ব্যবহার করতে পারেন। খরচ পড়বে ফুট হিসাবে। ঢাকার পল্টন, মতিঝিল আর মোহাম্মদপুর থেকে পুরোনো কার্পেট রং করা যাবে।
কৃতজ্ঞতা: কন্টিনেন্টাল কার্পেট লিমিটেড
শারমিন নাহার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১১, ২০১০
Leave a Reply