ডেকোরেটর ও আলোকসজ্জা ছাড়া বিয়ে হবে এটা কল্পনাই করা যায় না। বিয়ের সময় আত্মীয়স্বজনসহ অনেক মানুষের সমাগম হয়। তাদের খাবারসহ বিভিন্ন আয়োজন থাকে বিয়েতে। একসঙ্গে এত মানুষের আয়োজনের জন্য ডেকোরেটরের সাহায্য প্রয়োজন। বিয়েবাড়িতে বিয়ের আমেজ ফুটিয়ে তোলার জন্য চাই আলোকসজ্জা। জেনে নিন এসবের খোঁজ।
ডেকোরেটর
ঢাকার আজিমপুরের ইডেন কলেজের বিপরীত পাশে থ্রি স্টার ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী শেখ মনজুর কাদের বলেন, ‘বিয়েতে অনেক মানুষের সমাগম হওয়ার কারণে অতিরিক্ত জিনিসের প্রয়োজন হয়। আমরা বিয়ের খাবারের জন্য লবণের বাটি থেকে শুরু করে বিয়ের গেট—সবকিছু করে দিই।’ তিনি জানান, ডেকোরেটরে প্রতিটি জিনিস এক দিনের হিসাবে ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে। বিয়েতে প্লেট প্রতিটি পাঁচ টাকা। এভাবে গ্লাস তিন টাকা, জগ ১০ টাকা, বোল বা রাইস ডিশ ১০ টাকা, হাফ প্লেট তিন টাকা, চামচ দুই টাকা, তামার হাঁড়ি ১০০ টাকা। অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি ৮০ টাকা, হামান দিস্তা ৫০ টাকা, ড্রাম ৫০ টাকা। বেসিন ৩০০ টাকা, চুলা ৫০ টাকা, টেবিল ১০০-১৫০ টাকা, প্যান্ডেল ওয়াটার প্রুফ প্রতি বর্গফুট ছয় টাকা। সাধারণ কাপড় প্রতি বর্গফুট চার টাকা। গেট পাঁচ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। শেখ মনজুর কাদের জানান, অনেক সময় প্যাকেজ আকারে সব একসঙ্গে নিলে সবকিছু মিলিয়ে কিছুটা কম খরচ হয়। বরের স্টেজ সাধারণ তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। অনেকে বিয়েতে শতরঞ্জি ব্যবহার করে থাকে। শতরঞ্জি প্রতি ফুট দুই টাকা। চাদর প্রতিটি ৪০ টাকা। টেবিল কভার ২৫ টাকা। প্লাস্টিক চেয়ার ছয় টাকা। ফোম চেয়ার ২০ টাকা। ভিআইপি চেয়ার ৮০০ টাকা।
আলোকসজ্জা
ঢাকার মগবাজারের সিরাজ ইলেকট্রিকের ব্যবস্থাপক মো. তাজউদ্দিন জানান, ‘বিয়েতে আলোকসজ্জায় ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছে সবাই। দিন হিসাবে নানা রকম বাতি ভাড়া নেওয়া যায়। টিউবলাইট প্রতিটি ২৫ টাকা। হ্যালোজেন ১০০ টাকা। মেটাল লাইট ৫০০ টাকা। এনার্জি লাইট ৫০ টাকা। পারকান ২০০ টাকা। স্ক্যানার ১৮০০ টাকা। মুভিং হেড ৮০০ টাকা। ফগ লাইট ৮০০ টাকা। লেজার ৮০০ টাকা। এসপ্যারো ৩৫০ টাকা। বিয়েতে পুরো বাড়ি সাজানোর জন্য মরিচ বাতির বিকল্প নেই। সাধারণ মরিচ বাতি প্রতি হাজার ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। অটো মরিচ বাতি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। বর্তমানে দেখতে উজ্জ্বল এলইডি মরিচ বাতি প্রতি হাজার ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
যাঁরা ডেকোরেটর বা লাইটের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন তাঁদের প্রতি শিফটে ৪০০ টাকা হিসাবে মজুরি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে নয়টা থেকে পাঁচটা এক শিফট হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। যাঁরা বিয়েবাড়িতে বার্বুচি হিসেবে রান্না করেন তাঁদের প্যাকেজ হিসেবে টাকা দিতে হয়। বিয়েতে ১০০ জনের কম হলে দুই হাজার ৫০০ টাকা। ২০০ জনের কম হলে পাঁচ হাজার টাকা। এই হারে তাঁদের প্রতিদিনের মজুরি দিতে হবে।
তারিকুর রহমান খান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৪, ২০১০
Leave a Reply