সমস্যা: আমার বয়স ২৫ বছর। অবিবাহিত, ওজন ৫২ কেজি। ছয়-সাত মাস আগে আমার পায়ের বাইরের দিকে (ঊরু) একটা ছোট ফোঁড়া হয়। দুই-তিন দিন পর ফোঁড়ার চারপাশ লাল হয়ে যায়। প্রচণ্ড ব্যথায় শরীরে জ্বর ওঠে। পরে ফোঁড়ার চারপাশে চাপ দিলে প্রথমে সাদা পুঁজ ও পরে রক্তসহ পুঁজ বের হতে থাকে।
পুঁজ বের হওয়ার পর মনে হয়, সেই স্থানটা জ্বলে যায়। এভাবে সাত-আট দিন পর পুঁজ পড়া বন্ধ হয়ে ফোঁড়াটা শুকাতে থাকে এবং ফোঁড়ার চারপাশের চামড়া শুকিয়ে উঠে যায়। কিন্তু ফোঁড়ার স্থানটিতে একটা কালো দাগ থেকে যায়। এভাবে ছয়-সাত মাস ধরে পায়ে, পেটে ও পেছনের দিকে একটা ভালো হলে আরেকটা উঠতেই থাকে। তবে বেশ কিছুদিন পর পর ওঠে। এর জন্য আমি কোনো চিকিত্সকের কাছে যাইনি। তবে ব্যথার জন্য নাপা খেয়েছি। এখন আমি এর জন্য কী করতে পারি, জানালে খুশি হব।
সেঁজুতি
কিশোরগঞ্জ।
পরামর্শ: কোনো রোগের কারণ জানা থাকলে চিকিত্সা সহজ হয়। ফোঁড়া হচ্ছে রোমের গোড়ায় হওয়া ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, যা পরে লাল হয়, ব্যথা করে ও পুঁজের সৃষ্টি হয়। ফোঁড়া বেশি দিন থাকলে তা বারবার হয় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত ঠিকমতো চিকিত্সা না নিলে তা অটোইনোকুলেশন বা আক্রান্ত স্থান খোঁটানোর কারণে শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়। ডায়াবেটিস থাকলে বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে এটা বিস্তার লাভ করে।
অ্যান্টিবায়োটিক পরিমাণমতো ও পরিমিত সময়ের জন্য সেবন করলে এটি কালো হয়।
আপনি সেফালসপরিন গ্রুপের ওষুধ পরিমিত ডোজে সাত থেকে ১০ দিন সেবন করতে পারেন এবং আক্রান্ত স্থানে গরম ছ্যাঁক ও মিউপেরোসিন মলম লাগাতে পারেন। আপনার ডায়াবেটিস বা শরীরের অন্য কোথাও ইনফেকশন (যেমন: দাঁতে বা পায়ের আঙুলের ফাঁকে) আছে কি না, দেখা দরকার। আসলে ফোঁড়া হলো ত্বকের একটি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং চিকিত্সার জন্য পরিমাণমতো ও পরিমিত সময়ের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। অল্প পরিমাণ বা অল্প সময়ের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সেবন ক্ষতিকর এবং পরে এই ফোঁড়া থেকে এবসেস বা সেলুলাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পরামর্শ দিয়েছেন
সৈয়দ আফজালুল করিম
চর্ম ও একান্ত গোপন রোগ বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
সূত্র: প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০০৯
Leave a Reply