সোয়াইন ফ্লু বর্তমান সময়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এক রোগের নাম। অসুখটি নিয়ে শিশুর মা-বাবার মনেও অনেক শঙ্কা থাকার কথা। এটি এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা (ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ) ভাইরাসজনিত অসুখ। প্রায় ৫০ বছর ধরে এ ভাইরাস মূলত শূকরের পরিচর্যাকারীতে উপস্থিত থেকে দুর্বল ধরনের রোগচিহ্ন তৈরি করত। এই ভাইরাস এখন শূকর, পাখি ও আক্রান্ত মানুষের জিনবৈশিষ্ট্য নিয়ে পরিবর্তিত এক ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। এখন মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা পেয়েছে, বেড়েছে সংহারক্ষমতাও। শিশু ও বয়স্করা রয়েছে বেশি ঝুঁকিতে।
রোগ-লক্ষণ ও প্রতিকার
এটি মূলত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত অসুখ। ইনফ্লুয়েঞ্জা অসুখের সাধারণ লক্ষণ নিয়ে এ রোগের প্রকাশ। যেসব স্থানে কোনো রোগীর মধ্যে এ রোগ নিরূপণ করা হয়েছে, সেখানে যদি শিশু সর্দি, কাশি, জ্বর, কখনো বা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় তাহলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা মাথায় রাখতে হবে। শিশু অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মাথাঘোরা, তীব্র শ্বাসকষ্ট এসব আছে কি না, নজর দিতে হবে। শ্বাসতন্ত্রের শ্লে্না, কফ পরীক্ষা করে ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।
মা-বাবা সচেতন হোন শিশু যাতে এ রোগে আক্রান্ত না হয়
— যে অঞ্চলে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়েছে সেখানে মা-বাবা বাচ্চাকে নিয়ে যাবেন না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বেশি ঘিঞ্জি বা জনসমাগম স্থানে শিশুকে নেবেন না।
— শিশু যেন ময়লা হাতে চোখ-মুখ-নাক বারবার স্পর্শ না করে তা খেয়াল রাখুন।
— সাবানজলে দুই হাত ভালোভাবে দিনে কয়েকবার ধুয়ে নিতে হবে।
— শিশুর মধ্যে ফ্লুর কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না, মা-বাবা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
— বয়স্ক কেউ আক্রান্ত হলে সেখানে বাচ্চাকে সঙ্গে যেন নিয়ে না যাওয়া হয়।
— শিশু অসুস্থ হলে তাকে উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাত দিন পর্যন্ত বা উপসর্গ লাঘবের পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘরে অবস্থান করাবেন।
— সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তি যেন যেখানে-সেখানে কফ, থুথু না ছিটান। প্রয়োজনে আক্রান্ত ব্যক্তি ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুকে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করান।
— হাঁচি বা সর্দি ঝাড়ারত ব্যক্তির কাছ থেকে শিশুকে সবসময় নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।
প্রণব কুমার চৌধুরী
সহকারী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ০২, ২০০৯
Leave a Reply