সমস্যাঃ আমার বয়স ৪৮ বছর। ওজন ৯০ কেজি। চিকিৎসকের পরামর্শে কয়েক বছর ধরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তিন বেলা তিনটি নিডিপিন, বিটানল সকালে একটি ও এমিজাইড অর্ধেক ট্যাবলেট নিয়মিত সেবন করি।
এর পরও প্রেশার ওঠানামা করে। চিকিৎসকের কাছে সেবা নিতে গিয়ে অপেক্ষায় থাকার সময় রক্তচাপ বেড়ে ১১০/১৬০ পর্যন্ত উঠে যায়। খুব অস্থির লাগে, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। মনে হয় জ্ঞান হারিয়ে ফেলব। বেশির ভাগ ঘটনায় মনকে নেতিবাচক প্রভাব আচ্ছন্ন করে ফেলে। কীভাবে মুক্তি পেতে পারি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
কিশোরগঞ্জ।
পরামর্শঃ আপনার বয়স ৪৮ বছর এবং ওজন ৯০ কেজি। যদি বয়সের কথায় আসি, তবে এ বয়স হলো মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মেনোপজের কাছাকাছি বয়স।
এ সময় রক্তে ফিমেল হরমোনের মাত্রায় একটা বড় পরিবর্তন আসতে থাকে। এতে শারীরিক নানা উপসর্গ তৈরি হয়, যার একটি হলো রক্তচাপের বাড়াবাড়ি রকম ওঠানামা, হঠাৎ কান-মাথা গরম হয়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া, বুক ধড়ফড় করা, হাত-পা অস্বাভাবিক জ্বালাপোড়া করা বা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, আচমকা অকারণে মনমেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়া-এ সবই হলো মেনোপজকালীন অনেক উপসর্গের কয়েকটি। কাজেই এ ক্ষেত্রে রক্তচাপের ওঠানামা নিয়ে বেশি ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
দ্বিতীয় বিষয় হলো আপনার ওজন। বাঙালির স্বাভাবিক উচ্চতা যদি ধরি, তবে আপনার উচ্চতা পাঁচ ফুট দুই বা তিন ইঞ্চির বেশি নয়।
সে ক্ষেত্রে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন হওয়া উচিত ৬০ থেকে বড়জোর ৬৫ কেজি। অর্থাৎ আপনি ২৫-৩০ কেজি ‘অভার ওয়েট’ বা অতিরিক্ত ওজনধারী।
আপনার উচিত, নিজের ডায়াবেটিস আছে কি না তা দেখার জন্য গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা জিটিটি করা, খাওয়ার বিষয়ে দারুণ সতর্ক হওয়া এবং নিয়মিত হেঁটে ওজন কমানো।
ওষুধের বিষয়ে আমার উপদেশ হলো, আপনি সকালে একটি ডাইসিস প্লাস (৮০ মি·গ্রা·) এবং রাতে একটি অ্যামডোক্যাল প্লাস (৫০ মি·গ্রা·) খেতে পারেন। তাহলেই কাজ হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন
আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী
সহযোগী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১২, ২০০৯
Leave a Reply