‘বাত’ শব্দটি আমাদের সমাজে বহুল আলোচিত শব্দ। শরীর ব্যথা বিশেষ করে যে কোন জয়েন্ট বা গিরায় ব্যথা হলেই তাকে আমরা বাত বলে থাকি। এছাড়া ঘাড়, কোমরে ব্যথা এবং এই ব্যথা হাত কিংবা পায়ের দিকে ছড়িয়ে গেলেও তার নাম হয়ে যায় বাত। বাতের ব্যথা অমাবস্যায় বাড়ে, পানির জোয়ারে বাড়ে কিংবা শীতে এর প্রকোপ বেশি হয় এমন কথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে সকল ব্যথাই বাত নয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘আথ্রাইটিস’কে বাতের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার সকল আথ্রাইটিসের চরিত্র এক নয়। রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস বা গেঁটে বাত এবং অস্টিওআথ্রাইটিস বা বাতই আথ্রাইটিস-এর প্রধান প্রকারভেদ। এর মধ্যে অস্টিওআথ্রাইটিস-এ ভোগা রোগীর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ক্রমবর্ধমান কাজের চাপ, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ক্যালসিয়াম গ্রহণ না করা, শারীরিক পরিশ্রম না করা এবং সর্বোপরি বংশগত কারণে এই রোগ দেখা দিতে পারে। এখানে সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো, কোন রোগী যদি এই রোগে একবার আক্রান্ত হয়ে যায় তবে তার আক্রান্ত জয়েন্ট বা হাড়টি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে রোগীর ক্ষতিগ্রস্ত হাড়টিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় না। তাই এই সকল ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসার চেয়ে স্থানীয় বা লোকাল ট্রিটমেন্ট যাকে আমরা শারীরিক চিকিৎসা বলি সেটিই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। কোন কোন ক্ষেত্রে যেখানে ক্ষয়জনিত ক্ষতের পরিমাণ সামান্য সেখানে এন্টি ইনফ্লামেটরি বা ব্যথানাশক ওষুধ কাজ করে থাকে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অর্থাৎ যেখানে ক্ষয়জনিত ক্ষতের পরিমাণ বেশি সেখানে ব্যথার ওষুধ তেমন কোন ভ‚মিকাই রাখে না। এক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপির বিকল্প নেই। তদুপরি যারা সামান্য ক্ষয়ের কারণে ব্যথায় ভোগেন তাদের জন্যও প্রতিরোধমূলক বা প্রিভেনটিভ ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন যাতে রোগীর ক্ষয়জনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করতে না পারে। এখানে মজার বিষয় হলো ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরাই এ ধরনের ব্যথায় বেশি ভুগে থাকেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের মতে বাজারে প্রচলিত ব্যথানাশকগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ডায়াবেটিক রোগী এমনকি সাধারণ রোগীদেরও নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অথচ এসব ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
কি ধরনের ফিজিওথেরাপি নেবেনঃ ব্যাপক চাহিদার কারণে ফিজিওথেরাপি এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তাই ফিজিওথেরাপি নেয়ার পূর্বে রোগীকে সচেতন থাকতে হবে। একজন গ্রাজুয়েট ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে নির্ভুল চিকিৎসা দিতে পারবেন। তাই ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া থেরাপি নেবেন না।
কোন কোন ব্যথায় ফিজিওথেরাপি নেবেনঃ
(১) ঘাড় ব্যথাঃ কোন কোন ক্ষেত্রে শুধু ঘাড় ব্যথা হয় আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘাড় থেকে ব্যথা হাতে ছড়িয়ে পড়ে, হাত ঝিঁ ধরে থাকে এমনকি অবশ মনে হয়।
(২) কাঁধের জয়েন্টে ব্যথাঃ কাঁধের ব্যথা বা ফ্রোজেন সোল্ডারে ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকর।
(৩) হাঁটু ব্যথাঃ ক্ষয়জনিত কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে।
(৪) কোমর ব্যথাঃ লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস-এর জন্য কোমরে ব্যথা হতে পারে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে পায়ের দিকে। উপরোক্ত ব্যথাগুলোই সাধারণত বাতের ব্যথা হিসেবে প্রচলিত। এ সকল ব্যথায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকরি এবং কোন কোন ক্ষেত্রে একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।
শেষ কথাঃ
চিকিৎসার পূর্বশর্ত হলো রোগ নির্ণয়। তাই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের পর চিকিৎসা গ্রহণ করুন। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা আপনাকে সুস্থ জীবন উপহার দিতে পারে।
লেখকঃ ডাঃ মোহাম্মদ আলী
২৫শে নভেম্বর ২০০৭, দৈনিক ইত্তেফাক
Showkat
স্যার ফিজিওথেরাপী কিভাবে করে দয়াকরে লিখে দেবেন?
Bangla Health
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শাস্ত্রের একটা অংশ।এখানেও ডাক্তারদের মত রীতিমত পড়াশুনা করে পাস করতে হয়।
বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যথাতে ফিজিওথেরাপি ভালো ফল দেয়। সোজা বাংলায় বলতে এটা এক ধরনের ম্যাসাজ সিস্টেম।
maruf
amar age 34.amar leg ar joint, komor ar joint thaka pain kora and pain leg ar run porjonto colea jai.2 years ago ami tharapi doctor dekia chilam.but akono pain korea.
Bangla Health
ব্যথা কি সেই থেরাপিস্ট দেখানোর পর থেকেই আছে? বাতের ব্যথা নাকি কোন ভাবে আঘাত পেয়েছিলেন? থেরাপি নেয়ার পর থেরাপিস্ট কি কোন ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছিলেন?
আপনার আবার থেরাপিস্টের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।