প্রতিদিন কি ১০ হাজার কদম হাঁটা উচিত?
সুস্বাস্থ্যবিষয়ক কত কথাই না শুনি আমরা। রোজ আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে, দিনে দুই লিটার পানি খেতে হবে, নিয়মিত ১০ হাজার কদম হাঁটতে হবে। কিন্তু এসবের কতটুকু সত্যি আর কতটুকু ‘মিথ’? ক্রমাগত পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় এখনো ধোপে টিকে আছে কোন মিথগুলো?
দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো সকালের নাশতা
দিনের শুরুতেই শরীরে অতিরিক্ত পুষ্টি কারোর জন্যই খারাপ নয়। কিন্তু সকালের নাশতা যে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার, এর ভিত্তি খুব একটা নেই বললেই চলে। বরং সকালের নাশতা ঠিক কখন করা হচ্ছে, তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট একটা সময়ে যদি নিয়মিত সকালের নাশতা খাওয়া হয়, তা শরীরের জন্য ভালো তো বটেই; পাশাপাশি এর ফলে রোজকার জীবনযাপন একটা শৃঙ্খলার মধ্যেও এসে পড়ে।
তবে কিছু কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে, সকালে ভারী নাশতা ও রাতে হালকা নাশতার তুলনায় সকালে হালকা নাশতা ও রাতে ভারী নাশতার চেয়ে বেশি উপকারী। যারা রাতে ভারী খাবারের পরিবর্তে সকালে ভারী নাশতা করেন, তাদের ওজন যেমন দ্রুত কমতে থাকে, তেমনই রক্তে শর্করার মাত্রা আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এককথায় বলতে গেলে, সকালের নাশতার গুরুত্ব অনেক। কিন্তু দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার নয়। নির্দিষ্ট সময় মেনে প্রতি বেলার খাবারই সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য।
প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটা উচিত
হাঁটাহাঁটির এই লক্ষ্যমাত্রা কিন্তু কোনো বিশেষজ্ঞের দেওয়া নয়। বরং এর পেছনে আছে এক বিজ্ঞাপনী সংস্থা। ষাটের দশকে জাপানি পেডোমিটার (হাঁটা পরিমাপ যন্ত্র) কোম্পানি নিজেদের বাণিজ্যিক প্রচারের জন্য এই লক্ষ্যমাত্রার সূচনা করে। বিজ্ঞাপন থেকে সূচনা হলেও এর বিপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতে পারেনি কেউ–ই। বরং বিজ্ঞানীদের মতে, হাঁটার মতো উপকারী শরীরচর্চা খুব কমই আছে। দিনে যত হাঁটা যায়, তত ভালো। তবে হাঁটার কদম যে ১০ হাজারই হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। কোনো কোন পরীক্ষায় দেখা গেছে এর থেকে অনেক কম হাঁটলেও উপকার পাওয়া সম্ভব। তবে নিয়মিত সকালবেলা খোলা হাওয়ায় হাঁটতে যাওয়া মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক কম। হাঁটলে যেমন হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে, তেমনই শরীরের চর্বিও কমে যায় অনেকাংশে। তবে এ ক্ষেত্রে হাঁটার চেয়ে জগিং বেশি উপকারী।
সূত্র: গার্ডিয়ান
Leave a Reply