যোগাসনের সময় পোশাকে যেসব বিষয় প্রাধান্য দেওয়া জরুরি
নিয়মিত ইয়োগা বা যোগচর্চা শরীর ও মনে ইতিবাচক প্রভাব আনে। যোগের বিভিন্ন আসন ও অঙ্গভঙ্গি অতি প্রাচীন। ধারণা করা হয়, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা থেকে এর প্রচলন। তবে মানসিক প্রশান্তি বাড়াতে এবং সুস্থ থাকতে ভারত উপমহাদেশ থেকে শুরু হওয়া এই যোগ বর্তমানে সারা বিশ্ব লুফে নিয়েছে। বর্তমানের ব্যস্ত ও চাপযুক্ত জীবনের ভেতরেও দৈনিক রুটিনের অংশ হিসেবে একে বেছে নিচ্ছেন অনেকে।
তবে যেকোনো ব্যায়াম বা আসনের ক্ষেত্রেই কিছু বিধিবিধান থাকে। পোশাকের বেলায় সেটি মেনে চলতে হয় শতভাগ। একটা ভীষণ ঢোলা জামা যেমন ব্যায়ামে স্বস্তি দেবে না, তেমনি অতিরিক্ত আঁটসাঁট পোশাকও রক্ত চলাচলে বাধা দেবে।
তাহলে ইয়োগার সময় কেমন পোশাক পরবেন? উত্তরে ইয়োগানিকার কর্ণধার ও যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক আনিকা রাব্বানী বলেন, ‘যোগব্যায়ামের জন্য দেহের অ্যালাইনমেন্ট দেখে পোশাক নির্বাচন করতে হবে। ব্যায়ামের সময় আঁটসাঁট পোশাক পরাই ভালো। নিচের দিকে দেহের সঙ্গে লেগে থাকে এমন টাইস বা প্যান্ট পরতে হবে। আর ওপরে আঁটসাঁট ট্যাংক টপ, টি-শার্ট পরা যেতে পারে। তবে যে পোশাকই পরবেন, সেটা যেন টাইট হয়। না হলে আসনের সময় পোশাক মুখের কাছে চলে আসবে। এতে অস্বস্তি হবে। বারবার কাপড় ঠিক করতে সময় চলে যাবে। এ ছাড়া ইয়োগার সময় চুল বেঁধে রাখাটা জরুরি। হাতে ঘড়ি থাকলে বা অনেক বড় কানের দুল পরে থাকলে সেগুলো খুলে নিতে হবে।’
দুটো বিষয় রয়েছে। একটি হলো যোগব্যায়াম। অপরটি যোগাভ্যাস। যোগাভ্যাসের শুরুটা যোগব্যায়াম দিয়ে হয়। দেহ টানা কোনো কাজে যুক্ত থাকলে আর সেটা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে তাকে ব্যায়াম বলি। অর্থাৎ দেহ ভীষণভাবে অ্যাকটিভ থাকাই ব্যায়াম। আর যোগাভ্যাস হলো শান্ত, ধীরস্থির। যেমন: ধ্যান, প্রাণায়াম, যেকোনো ধীর আসন।
যোগব্যায়ামের সময় আঁটসাঁট পোশাক পরাই ভালো। তবে যোগাভ্যাসের ক্ষেত্রে অতটা আঁটসাঁট পোশাক না পরলেও চলে। এ সময় সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। এ ক্ষেত্রে ফতুয়া, টি-শার্ট, সুতির পায়জামা, ট্রাউজার এমনকি ধুতিও পরা যেতে পারে। যোগাভ্যাস দিনের যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় করা যায়—এমনই পরামর্শ দিলেন জয়সান ইয়োগা অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারের কর্ণধার ও ইয়োগা ট্রেইনার কুশল রায় জয়।
মূলত যোগব্যায়ামের পর যোগাভ্যাস করা হয়। তবে যোগব্যায়ামে যেহেতু খুব আঁটসাঁট পোশাক পরতে হয়, আর যোগাভ্যাসের ক্ষেত্রে একটু ঢিলে, তাই মাঝখানের সময় পোশাকটা একটু পরিবর্তন করে নিলেই ভালো। এতে রক্ত চলাচল সঠিকভাবে হবে—এমনটাই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
লেখা: শাশ্বতী মাথিন
সূত্র : প্রথম আলো
Leave a Reply