সোরিয়াসিসের সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেননি। যাদের সোরিয়াসিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাদের যেকোনো ধরনের আঘাত এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ আঘাত থেকেই সোরিয়াসিস শুরু হতে পারে। একটা জায়গা চুলকাতে চুলকাতে সোরিয়াসিস শুরু হয়ে যেতে পারে। ঘর্ষণ বেশি লাগে এমন জায়গাতে যেমন কনুই (পড়ার টেবিলে), হাঁটু, কপাল, পায়ের গিড়ায় (শক্ত জায়গায় নামজা পড়া) সোরিয়াসিস দেখা দিতে পারে। অরিক্তি মানসিক দুশ্চিন্তা সোরিয়াসিসের তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে। যেহেতু এ রোগ কোনো ধরনের জীবাণু দ্বারা হয় না তাই এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়।
সোরিয়াসিস নিরাময়যোগ্য ব্যাধি
চিকিৎসার মাধ্যমে বা নিজে নিজেই এ রোগ সেরে যেতে পারে। কয়েকদিন, কাস, বছর এমনকি ১০ বছর পর্যন্ত ভাল থাকা যায়। তবে আবারো হতে পারে। চিকিৎসা নিলে কমে যাবে। পরবর্তীকালে একই জায়গায় অথবা অন্য জায়গায় দেখা দিতে পারে। তবে যেকোনো জায়গাতেই অসুখটি যদি বিরক্তিকর হয় তবে চিকিৎসা নিতে হবে।
খাবারে বিধি নিষেধ
এটিকে অনেকে অ্যালার্জি মনে করে বেগুন, চিংড়ি, ডিম, মিষ্টি কুমড়া, পুঁটি, বোয়াল ইত্যাদি খাওয়া বন্ধ করে দেন। এ ধারণাটি ঠিক নয়। তবে রেডমিট অর্থাৎ লাল মাংস যেমন গরু, মহিষ, হাঁস খাওয়াতে সোরিয়াসিসের তীব্রতা বেড়ে যায়। খাসি, মুরগি খেতে পারবেন।
সোরিয়াসিস যাদের থাকে তাদের আর্থা্রাইটিস বা জয়েন্ট পেইন বা বাত জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে দেয়। সে ক্ষেত্রে পেইন কিলার খেলে ত্বকের সোরিয়াসিস বেড়ে যাবে। ব্যথা সাময়িক কমে থাকবে, কিন্তু ভাল হবে না। ওষুধ বন্ধ তো আবার ব্যথা- তা হলে ব্যথার ওষুধ চলবে তো গ্যাস্ট্রিক আলসার হবে এবং একটা পর্যায়ে কিডনি তার কার্যকারিতা হারাবে। তাই যখন চর্ম রোগ সোরিয়াসিস সাথে বাতের ব্যথা থাকবে তখন এমটিএক্স নামক ওষুধ প্রযোজ্য। এ ওষুধটি ক্যান্সারের অন্যান্য ওষুদের সাথে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই অনেকে এটাকে ক্যান্সারের ওষুধ মনে করে থাকেন- ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথায় এটিই বর্তমানে সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ এবং পাশাপাশি ত্বকের সোরিয়াসিসের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ। বিশেষজ্ঞের অধীনে নিতে হয় এ জাতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা।
ডা. ওয়ানাইজা
চেম্বার : জেনারেল মেডিক্যাল হাসপাতাল (প্রা:) লি.,
১০৩, এলিফ্যান্ট রোড (তৃতীয় তলা), বাটা সিগন্যালের পশ্চিম দিকে, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১৫৬৬৮৪২।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুন ২০, ২০০৯
Leave a Reply