এমন অনেক সমস্যা আছে, যা কাউকে বলা যায় না। এ রকম প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন সারা যাকের। ১৫ দিন অন্তর সুবন্ধু সমীপেষু কলামে চিঠি লিখুন সাদা কাগজের এক পিঠে সংক্ষেপে, ঠিকানাসহ। চিঠি পাঠানোর ঠিকানা :
সুবন্ধু সমীপেষু, নকশা, প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
আমি দশম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত প্রথম স্থান অধিকার করে আসছি। কিন্তু এর পর থেকে ফলাফল আমার ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। এর পেছনে কিছু কারণও রয়েছে। আমাকে অনেকেই প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু পড়াশোনাকে মুখ্য করে দেখার কারণে রাজি হই না। তাই অনেকেই আমার ব্যাপারে নানা কুৎসা রটায়। আমার মা-বাবা ও বড় ভাই অত্যন্ত সন্দেহপ্রবণ। তাঁরা মানুষের কাছ থেকে নানা কথা শুনে থাকেন। যার মধ্যে বিন্দুমাত্র কোনো সত্যতার ছাপ নেই। কিন্তু তার পরও তাঁরা আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে থাকেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এ পর্যন্ত মা-বাবার মনে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারিনি। এটাই আমার এই ছোট জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এসব চিন্তা, মা-বাবার ভালোবাসা না পাওয়া ইত্যাদি কারণে আমি পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যে মনে হয়, মৃত্যুর মধ্য দিয়েই হয়তো এ জীবনে শান্তি আসবে। কিন্তু আমি অনেক বড় হতে চাই। আমি কি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না?
শামীমা আক্তার
নরসিংদী।
কী কুৎসা রটানো হচ্ছে এবং সেই কুৎসা কেন তোমার মা-বাবা বিশ্বাস করছেন তা পরিষ্কার নয়। চিঠিটা খুব স্পষ্টভাবে সমস্যাকে তুলে ধরেনি। তাই সমাধানের কথা বলা যাচ্ছে না।
তবে একটা উপায় বলা যেতে পারে। পড়াশোনায় মনোযোগী হও, আবার সেই প্রথম স্থানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করো।
আমি উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ছি। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ি। আমার এক সহপাঠী ছাত্রীকে নিয়ে। তার সঙ্গে আমার ছোটবেলা থেকেই পরিচয়। সে আমার এক ক্লাস নিচে পড়ত, আমাকে ‘ভাইয়া’ ডাকত। ছোটবেলায় আমি তাদের বাসায় মাঝেমধ্যেই বেড়াতে যেতাম। সে যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে, তখন তারা বিদেশ চলে যায় এবং এক বছর পর ফিরে এসে সে আমার সঙ্গে ক্লাস এইটে ভর্তি হয়। সে সুবাদে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। আমি এখনো মাঝেমধ্যে তাদের বাসায় বেড়াতে যাই। আমরা একজন আরেকজনকে বন্ধু হিসেবে খুব পছন্দ করি। মাধ্যমিক পরীক্ষা পাসের পরে আমরা একই কলেজে ভর্তি হই এবং এক মাস যেতে না যেতেই আমি অনুভব করি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি। কেমন করে তা হলো আমি বুঝতে পারিনি। হঠাৎ দেখি ক্লাসের এক ছেলের সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব। ক্লাস এইট, নাইন, টেনে তারা একে অন্যকে দেখতেই পারত না। কিন্তু এর পরের তিন মাসে তারা কেমন করে জানি খুব কাছের বন্ধু হয়ে গেল। তাদের সম্বন্ধে নানা কথা শুনে ঈর্ষায় আমার গা জ্বলে যেত। তাই আমি একদিন তাকে এসএমএস করে জিজ্ঞেস করলাম, সে আমাকে পছন্দ করে কি না, এর পরের দিন থেকে সে আমার সঙ্গে আর কথা বলে না। সে অন্য আরেকজনের মাধ্যমে আমাকে জানায়, সে আমাকে ‘ভাই’ ভাবত, আমার এই কাণ্ডে সে কষ্ট পেয়েছে, আমার সঙ্গে সে আর কথা বলবে না। আমি পুরোপুরি মুষড়ে পড়লাম, এত দিন তার ভাব দেখে মনে হয়েছিল সে আমাকে পছন্দ করে, কিন্তু আমি মেয়েদের বুঝতে পারিনি। পরের ছয় মাস আমাকে মানসিক কষ্টের ভেতর দিয়ে চলতে হয়েছে। সে আমাকে নানাভাবে বিব্রত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারিনি, কারণ আমি তাকে খুব ভালোবাসি। ছয় মাস পর তার জন্মদিনে আমি তাকে একটি ‘শুভ জন্ম দিন’ এসএমএস পাঠাই, সে আমাকে ধন্যবাদ জানায়। তার পর থেকে আস্তে আস্তে আমাদের মধ্যে আগের বন্ধুত্বটা ফিরে এসেছে। এখন আমি তাকে আগের চেয়ে বেশি ভালোবাসি, এখনো ওই ছেলের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখলে আমার গা জ্বলে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ওই ছেলের সঙ্গেও আমার ভালো বন্ধুত্ব, তাকে আমি ঘৃণা করি না। কিন্তু আমার যন্ত্রণার শেষ নেই। সে কি আমাকে ভালোবাসে, আমি কীভাবে বুঝব? এমন না যে আমি তার প্রেমিক হতে চাই, আমি শুধু তার বিশেষ বন্ধু হয়ে থাকতে চাই, আর বড় হওয়ার পর পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে করতে চাই। আমি শুধু এর নিশ্চয়তা চাই। আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
আজকাল তো দেখি ছেলেমেয়েরা সম্পর্কের ব্যাপারে খুব খোলামেলা। যদি সে রকম সম্পর্ক হয়, তাহলে (আমার যদি ভুল না হয়) তারা বলে ‘গো আউট’ করা হচ্ছে। তো আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনার বন্ধুর সঙ্গে ‘গো আউট’ করছে কি না জেনে নিন। তাহলে সম্পর্কের অবস্থাটা পরিষ্কার হবে।
আপনার যেকোনো কিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকা উচিত। সম্পর্কের কথা শুনে মনে হচ্ছে, এই মেয়েটি আপনাকে বন্ধু হিসেবে পেতে চায়। পরবর্তী সময়ে প্রেম হতেও পারে। তবে মাঝে একটা বিরতি থাকা ভালো। মেয়েরা ভালোবাসায়, ছেলেদের দিক থেকে ‘স্থায়িত্ব’কে খুব সম্মান করে।
আমার বিয়ে হয়েছে দুই বছর। ভালোবেসে বিয়ে করেছি আমরা। আমাদের একটি মেয়ে আছে। সংসারে মানুষ বলতে শাশুড়ি, দুই ননদ, ননদের একটি ছেলে এবং আমরা। এক ননদ স্বামীর সঙ্গে রাগারাগি করে ছেলেকে নিয়ে আমাদের সঙ্গেই থাকে। আমি চাকরি করি বলে আমার মেয়ে ওদের কাছেই থাকে। কিন্তু বিবাহিত ননদটি কিছু দিন পরপর বিভিন্ন বিষয়ে অযথা আমার সঙ্গে ঝগড়া করে। আমার স্বামীকে কিছু বললে তিনি চুপচাপ থাকেন এবং যে দিন বলি, সেদিন আমার সঙ্গে কোনো কথা বলেন না। এর আগেও অনেকবার এ রকম হয়েছে। এখন কিছু হলেও আমার স্বামীকে বলতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু মন খারাপ দেখলে জোর করে শুনতে চান এবং বললে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। মনে হচ্ছে, এতে আমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও আমি বুঝতে পারি আমার স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসেন তবু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আমার বাবার বাড়ি চলে যাব। আমি কি ভুল করছি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা।
আপনি একজন চাকরিজীবী। আপনার সঙ্গে আপনার ননদের ঝগড়া হচ্ছে। তাই নিয়ে স্বামীর কাছে নালিশ দেওয়া আপনাকে মানায় না। আপনি বরং আপনার ননদের সঙ্গে কথা বলুন। একটা একান্নবর্তী পরিবারে যেমন অসুবিধা, তেমনি সুবিধাও আছে। আপনি আপনার মেয়েকে ননদদের কাছে রেখে চাকরি করতে পারছেন।
যদি দেখেন কথাবার্তায় তেমন লাভ হচ্ছে না, আপনি একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এখন সেই বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে আলাপ করতে পারেন। নালিশ নিয়ে গেলে বিষয়টা অন্য রকম রূপ নেয়।
চার বছর আগে একটা মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, তার পর থেকেই আমাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের দিক থেকে প্রেমে গড়ায়। সে বিবাহিতা, তার দুটি মেয়ে আছে, স্বামী দেশের বাইরে থাকে।
সে খুব দুখী, খুব অল্প বয়সে তার বিয়ে হয়ে যায়। পড়াশোনা তেমন করতে পারেনি। ছোটবেলা থেকেই মা-বাবার আদর, ভালোবাসা, ন্যায্য অধিকার সবকিছু থেকেই সে বঞ্চিত। স্বামীর কাছেও তার কোনো দাম নেই। স্বামী তাকে সন্দেহ করে এবং চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলে।
অথচ মেয়েটি সৎ, চরিত্রবান, তার এসব দুঃখের কথা শুনে আমাদের সম্পর্ক ধীরে ধীরে গভীর হয়ে যায়। আমি তাকে আমার জীবনের চেয়ে ভালোবাসি। তার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয় এবং সে একবার আমার সন্তান ধারণ করে। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে গর্ভপাত করাতে বাধ্য হই। এখন আমার বয়স ৩১, আর তার বয়স ২৯। তার বড় মেয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ে। পরিবার থেকে আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে কিন্তু তা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। এ জন্য তার কথায় আমি বদলি হয়ে পরিবার থেকে দূরে চলে আসি। এখন আমি কী করব? একদিকে আমার মা ও পরিবার, অন্যদিকে আমার ভালোবাসা ও তার দুটি মেয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
আজকাল উন্নত যোগাযোগের কারণে এ ধরনের সম্পর্ক হচ্ছে। অতীতে যে হতো না, তা নয়, তবে মুঠোফোন সম্পর্কটা চালিয়ে নিতে সাহায্য করছে।
হালকা কথা থেকে গভীর কথায় আসি। আপনারা দুটি পথ বেছে নিতে পারেন।
প্রথমত, যখন দুজনেরই শক্ত পিছুটান আছে, সে ক্ষেত্রে দুজন দুজনের থেকে দূরে সরে আসুন।
দ্বিতীয়ত, যদি আপনাদের সম্পর্ক এত দূর এগিয়ে যায়, তাহলে সাহস করে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হোন। আপনার
সঙ্গিনী যে মিথ্যাচারে তার মেয়েদের বড় করছেন, তাতে ভবিষ্যতে ক্ষতিই হবে। বিয়ে করলে প্রথম প্রথম সামাজিকভাবে আপনাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু পরে তা ঠিক হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
আমার বয়স ২৫। আট বছর ধরে একটি ছেলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আমরা পরস্পরকে অত্যন্ত ভালোবাসি। আমরা দুজন দুই ধর্মের। আমার মা-বাবা প্রথম থেকেই আমাদের এ সম্পর্কের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে আমার এবং আমার প্রেমিকের ওপর বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এমনকি তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও চেষ্টা চালিয়েছেন। এর পরও আমরা দুজন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখেছি। কিন্তু আরেকটি সমস্যা হলো, আমার প্রেমিক অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং রক্ষণশীল মানুষ। মাঝেমধ্যে সে খানিকটা বাতিকগ্রস্তের মতো আচরণ করে। সে আমাকে কারও সঙ্গে মিশতে দেয় না, কথা বলতে দেয় না এবং আমি বাসা থেকে বের হলে সে খুব অস্থির হয়ে যায়। সে বলে, আমাকে অন্য কোনো পুরুষ দেখুক, এটা নাকি তার সহ্য হয় না। তার এসব আচরণকে আমি ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে মেনে নিয়েছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে সে আমাকে অহেতুক সন্দেহ করে, আমার আশপাশের বিভিন্ন পুরুষকে, আমাকে জড়িয়ে কাল্পনিক এবং নোংরা অপবাদ দেয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে করতে আমি কেমন খিটখিটে মেজাজের হয়ে গেছি। আমাদের দুজনের মধ্যে এসব উদ্ভট বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড গণ্ডগোল হয় এবং একপর্যায়ে ধৈর্য হারিয়ে আমরা পরস্পরকে প্রচণ্ড গালাগাল করি। কিছুক্ষণ পর আবার আমাদের মধ্যে মিলও হয়ে যায়, এভাবেই চলছে। কিন্তু মাসখানেক আগে আমার প্রেমিক আমাকে সম্পূর্ণ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে একটা নোংরা অপবাদ দেয় এবং আমি রেগে গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করি। কিন্তু রাগ কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে করা অভিযোগ প্রত্যাহার করি। এ ঘটনার পর থেকে আমি অত্যন্ত কষ্ট এবং অপরাধবোধে ভুগছি। আমার প্রেমিকও আমার এ ধরনের আচরণে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছে। গত আট বছরের সম্পর্কে এই প্রথমবারের মতো সে আমার সঙ্গে খুব শীতল আচরণ করছে এবং আমার কাছ থেকে কেমন দূরে দূরে থাকছে। তার এসব আচরণে আমার অপরাধবোধ আরও প্রবল হচ্ছে এবং আমি ঠিকমতো খেতে, ঘুমাতে ও পড়তে পারছি না। ও যদি এখন থেকে আমাকে ঘৃণা করে অথবা আমাকে ছেড়ে চলে যায়, তাহলে অমি মারা যাব।
তরু
রাজশাহী।
আপনি আপনার মা-বাবাকে দিয়ে সমস্যার আখ্যান শুরু করেছেন। তবে সমস্যা বেশি আপনাদের মধ্যে। প্রেম প্রকাশের ও আবেগের অনেক রূপ আছে, তার মধ্যে অধিকারবোধ বা পসেসিভনেস একটা বাজে আবেগ। আপনার প্রেমিকের দিক থেকে বিষয়টা বেশি মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। আমি খুব অবাক হচ্ছি না, আপনি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেছেন। আবার সেটা প্রত্যাখ্যানও করেছেন।
এ ঘটনা থেকে আপনি অপরাধবোধে ভুগছেন। আসলে উল্টোটা হওয়া উচিত ছিল। তাই না? আপনার প্রেমিকের বোধ হওয়া উচিত ছিল, সে কোন পর্যায়ে যায় যে এ রকম অঘটন ঘটতে পারে?
আপনার প্রেমিকের পরিবর্তন হওয়া উচিত।
প্রেমের সম্পর্কে এ ধরনের রূপ নিলে বা তা সম্পর্কের ক্ষতিই করে। আপনাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে এ রকম সন্দেহ, সন্দেহ থেকে কটুকথা, গালাগাল—এ চক্র থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলুন।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১০
Ariful Islam
Everyone wants happiness,
No one needs pain,
But its not possible to get a rainbow.
Without a little rain.
So, everyone should take a right way to get a rainbow.