ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে গোটা শরীরের সমূহ ক্ষতি সাধিত হয়। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং এতে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি দাঁত ও মুখগহ্বরেরও সমূহ ক্ষতি হয়।
ডায়াবেটিসের কারণে রক্তবাহ গুলো চিকন ও সরু হতে থাকে। ফলে দেহে রক্তের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং অক্সিজেন ও অন্যান্য উপকরণ দেহের সব অংশে ঠিকমতো পৌঁছায় না। এ অবস্থায় মাড়ি ও দাঁতে স্বাভাবিক রক্তের পরিমাণ ও গতি ব্যাহত হয়। এ সময় মাড়িতে কোনো আঘাত লাগলে প্রদাহ দেখা দেয়। তা ছাড়া মাড়িতে আগের কোনো রোগ থাকলে এর সংক্রমণ আরও বাড়ে।
দেহে ইনসুলিন ঘাটতির ফলে আমিষেরও ঘাটতি হয় বলে কোষ-কলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, সংস্কার ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই কোনো স্থানে ঘা হলে তা শুকাতে দেরি হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ দ্রুত হয়; কারণ মুখের লালার সঙ্গে গ্লুকোজ এক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীবাণুর সঙ্গে মিলে এসিড তৈরি করে, যা দাঁতের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করে এবং ধীরে ধীরে দাঁতে গর্ত তৈরি করে। মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং পরিমাণ কমে যায় বলে মুখে অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশে আহারের কণাগুলো ধুয়েমুছে যেতে পারে না। এই খাদ্যকণা গুলো দীর্ঘদিন দাঁতের গায়ে ও মাড়ির ফাঁকে জমে ডেন্টাল প্লাক তৈরি করে। পরে এ থেকে মাড়ির প্রদাহ ও মাড়িতে পুঁজ হয়, মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং দাঁত নড়তে থাকে।
তাই ডায়াবেটিক রোগীদের উচিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি একজন ডেন্টাল সার্জনের তত্ত্বাবধানে থাকা।
লেখকঃ ডা· এস এম জাকারিয়া
উৎসঃ দৈনিক প্রথম আলো, ১৪ নভেম্বর ২০০৭
Leave a Reply