মন–মেজাজ ভালো রাখারও ভালো দাওয়াই শরীরচর্চা। শরীরচর্চা আমাদের দেহে এন্ডোরফিনস উৎপন্ন করে, দুশ্চিন্তা আর বিষণ্নতা কাটাতে সহায়তা করে এই হরমোন। শরীরচর্চায় আরও কিছু হরমোন উৎপন্ন করে, যা আমাদের মেজাজ ভালো রাখে। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ফ্রেজার হেলথ অথরিটির গবেষণা সমন্বয়ক ও পুষ্টিবিদ বেনজীর শামস বলেন, ‘ব্যায়ামে যে শুধু শরীরই ফিট হয়, বিষয়টি এমন নয়। নিয়মিত ব্যায়াম অল্প করে হলেও মনকে উদ্দীপ্ত করে। নিজেকে প্রাণবন্ত করে তুলতে, মেজাজ ভালো রাখতে সপ্তাহে একটু হাঁটাচলা বা দৌড়ানোর মতো ছোটখাটো ব্যায়ামের অভ্যাস করুন।’
শুধু যে আমাদের আবেগেই ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, তা না, শরীরচর্চা নেতিবাচকতা কাটিয়ে উঠতেও সহায়তা করে। বিষয়টি এভাবে বলা যায়, এক চিমটি শরীরচর্চায় কয়েক ঘণ্টা মেজাজ ভালো থাকে।
কী বলছে গবেষণা
যাঁদের ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন আর গভীর মাত্রার মানবিক বিকার আছে, তাদের ওপরেও শরীরচর্চার ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করেছেন গবেষকেরা। তাই চিকিৎসকেরাও এ ধরনের রোগীদের শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাই আপনার যদি প্রাথমিক লক্ষ্য থাকে মেজাজ ঠিক রাখা, তাহলে টুকটাক ব্যায়াম দিয়েই শুরু করতে পারেন। তবে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি, সেটা হলো নিয়মিত অনুশীলন। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হবে না, উল্টো আরও বেশি মন খারাপ হবে।
হালকা ব্যায়ামে শুরু হোক
সপ্তাহে তিন দিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়ামের চর্চা করলে শরীরের পরিবর্তন যেমন টের পাবেন, তেমনি মনেরও উন্নতি হবে। শুধু পাঁচ মিনিট হেঁটে আসার অভ্যাসও মন ভালো রাখার বটিকা হিসেবে কাজ করে। শরীরের উন্নয়নে ভারী ও নিয়মিত ব্যায়াম করুন, আর মন ভালো রাখতে টুকটাক ব্যায়ামই যথেষ্ট। ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদালয়ের সহকারী অধ্যাপক জুলিয়া ব্যাসো বলেন, ‘হাঁটাচলার মতো সহজ ব্যায়ামে মুড ভালো হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুটা সময় হাঁটলে মেজাজ ভালো থাকে।’
দিনের শুরুতে কিংবা সন্ধ্যায় নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন। যাঁদের অফিসের ব্যস্ততা বেশি, তাঁরা ছোট একটা বুদ্ধি খাটাতে পারেন; অফিসের আশপাশে লেক, পার্ক বা খোলামেলা পরিবেশে দুপুরের খাবার বা বিকেলের নাশতার বিরতিতে ২০ মিনিট ঘুরে আসতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রিকশা পরিহার করে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। লিফটের বদলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার অভ্যাসও কিন্তু মেজাজ ভালো করতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
সোর্স : প্রথম আলো
Leave a Reply