দুর্বলতা, ক্লান্তি কিংবা অবসাদ বোধ করছেন? সব সময় অরুচি লাগছে, মাথা ঘুরছে খুব? এত দিন যে কাজে কখনো ক্লান্তি আসেনি, আজকাল সেটুকু করতে হাঁপিয়ে উঠছেন? এর অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু সবার আগে দেখা চাই আপনি রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না। কারণ, আমাদের দেশে বিশেষ করে মেয়েদের এ সমস্যা খুবই পরিচিত।
আয়রনের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকলে রক্তস্বল্পতা একটি সহজে নিরাময়যোগ্য রোগ। আয়রনের ঘাটতি হতে পারে খাদ্যতালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার না থাকলে। গরুর মাংস, কলিজা, বেদানা, বিট, খেজুর, কাঁচকলা, লালশাক, কচু বা যেকোনো ফল, যা কাটলে কালো বর্ণ ধারণ করে—এসব আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। সঠিক সময়ে খাদ্য গ্রহণ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস। ছোটবেলা থেকে এর গুরুত্ব বুঝতে হবে। খাদ্য নির্বাচনের সময় খাবারটি স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তার ওপর জোর দিতে হবে। খুব বেশি ঝাল খাবারে খাদ্যনালি ও পাকস্থলীর প্রদাহ হতে পারে। অপরিষ্কার পরিবেশে খাবার খেলে হতে পারে কৃমির সংক্রমণ। অতিরিক্ত ব্যথানাশক বড়ি খেলেও পাকস্থলীতে রক্তপাত হতে পারে। এসব কারণে দেখা দিতে পারে রক্তস্বল্পতা।
কোনো স্থানে রক্তক্ষরণ যেমন পাইলস বা আন্ত্রিক কোনো জটিলতা অথবা মাসিকের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্তপাত বা দীর্ঘ সময় ধরে চলা মাসিক রক্তস্বল্পতার বড় কারণ। রক্তস্বল্পতার সঙ্গে দ্রুত যদি কারও ওজন কমে যাওয়ার ইতিহাস থাকে এবং শরীরে কোথাও কোনো চাকা অনুভূত হয়, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
সঠিক সময়ে রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা করা না হলে দেখা দিতে পারে কার্ডিয়াক অকার্যকরের মতো জটিলতা। সঠিক চিকিৎসার জন্য আগে দরকার সঠিকভাবে রোগনির্ণয়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, শরীরে আয়রনের ঘাটতির পরিমাণ জেনে খুঁজে বের করতে হবে রক্তস্বল্পতার কারণ। সমস্যা শনাক্ত করার জন্য ডাক্তার নিজে রোগীকে দেখবেন, প্রয়োজনে কিছু পরীক্ষা করাবেন। আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য মুখে বা শিরায় আয়রন দেওয়া যায়। তবে কারণটির চিকিৎসাও করতে হবে।
তাই দুর্বল বা ক্লান্তি লাগলে অবহেলা নয়। চিকিৎসাসেবা নিন।
ডা. রোজানা রউফ: সহযোগী কনসালট্যান্ট, মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
সোর্স : প্রথম আলো
Leave a Reply