ট্রিগার ফিঙ্গার হলে কী করবেন
আপনার আঙুল কি সোজা করতে গেলে হঠাৎ বাঁকা হয়ে যায় বা আটকে যায়? আক্রান্ত আঙুল সোজা করতে চাইলে ব্যথা অনুভূত ও শব্দ হয়? চাপ দিলে আঙুলের গোড়ায় শক্ত গোটার মতো অনুভব করেন? এমন হওয়ার কারণ, ট্রিগার ফিঙ্গার যা স্টেনোসিং টেনোসাইনোভাইটিস বা ফ্লেক্সর টেনডোনাইটিস নামেও পরিচিত।
এ রোগে আঙুলের আক্রান্ত অংশটুকু দ্রুত সোজা হয়, অনেকটা বন্দুকের ট্রিগার টান দেওয়া ও ছেড়ে দেওয়ার মতো, তাই এর নাম ট্রিগার ফিঙ্গার। এতে আঙুলের টেন্ডনের চারপাশের স্থানটি স্ফীত হয় বা ফুলে যায়।
ট্রিগার আঙুলের লক্ষণ
- আঙুল শক্ত হওয়া ও ব্যথা করা।
- আঙুল সোজা করতে না পারা।
- আক্রান্ত আঙুলের নিচের তালুতে কোমলতা অনুভব করা।
- বাঁকানো আঙুল হঠাৎ বেরিয়ে আসে ও সোজা হয়ে যায়।
- আঙুল নড়াচড়া করার সময় শব্দ বা সংবেদন সৃষ্টি হয়।
কারণ
ট্রিগার আঙুলের কারণ টেনোসাইনোভিয়ামের প্রদাহ। আঙুল বাঁকানো বা সোজা করার সময় টেনোসাইনোভিয়াম টেন্ডনকে মসৃণভাবে সরাতে সাহায্য করে। যখন প্রদাহ হয়, তখন তা বাধাগ্রস্ত হয়।
কারা ঝুঁকিতে
- যাঁরা কোনো কাজ বা খেলার সময় দীর্ঘক্ষণ হাত ও কবজি নাড়াচাড়া (একই রকমের বা পুনরাবৃত্তিমূলক) করেন, তাঁদের ট্রিগার ফিঙ্গার হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে একই ধরনের কাজ করায় শ্রমিকদের, বিশেষ করে পোশাকশ্রমিকদের এ সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।
- যাঁদের অন্যান্য রোগ যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস মেলাইটাস, বারবার আঘাত বা ট্রমা ও টিবির মতো রোগ রয়েছে, তাঁদের ট্রিগার ফিঙ্গার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কী করবেন
সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য একজন অর্থোপেডিক হ্যান্ড সার্জনের শরণাপন্ন হতে পারেন। তিনি হাত ও কবজি পরীক্ষা করে তীব্রতা অনুসারে সঠিক পরামর্শ দেবেন।
- হ্যান্ড থেরাপিস্টের পরামর্শ ও দেখানো নিয়ম অনুযায়ী থেরাপিগুলো নিয়মিত করুন। কিছু ব্যায়াম নিয়মিত বাড়িতে চালিয়ে যেতে হবে।
- একটি তোয়ালে বা সুতি কাপড়ের ভেতর বরফের কিছু টুকরা নিয়ে তা আক্রান্ত আঙুলের ওপর ৫ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এটা প্রতিদিন তিন–চারবার করুন।
- হাতের পুনরাবৃত্তিমূলক ব্যবহার এড়াতে দুই থেকে চার সপ্তাহ হাতকে বিশ্রাম দেবেন।
- ট্রিগার আঙুল যথেষ্ট গুরুতর হয়ে গেলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
নুপুর বিনতে লিলি, সিনিয়র ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, অকুপেশনাল থেরাপি ডিপার্টমেন্ট, সিআরপি, সাভার
Leave a Reply