ভালো বন্ধু পাওয়া কিন্তু বেশ কঠিন
একজন ভালো বন্ধু পাওয়া বেশ কঠিন কাজ। এটা যে কোনও বয়সেরই সমস্যা। আর বয়স্কদের জন্য এই সমস্যা আরও বেশি। আসলে জীবনের শেষের অংশে কারও সঙ্গে নতুন করে মানিয়ে নেওয়া বেশ কঠিন কাজ। তার উপর সেই সময়টায় পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সময়, লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেও ইচ্ছে করে না। অনেক সময় হয় যে প্রথম থেকেই অন্তর্মুখী মানুষদের বন্ধুর সংখ্যা এমনিতেই কম হয়। স্কুল কলেজে বন্ধুর অভাব, বাড়ির লোকের সঙ্গে থাকতে থাকতে বিরক্তি এসে যাওয়ার কারণে শেষ বয়সে অনেকেই বেজায় খিটখিটে হয়ে যান। ইচ্ছে থাকলেও নতুন বন্ধু জোটানো সম্ভব হয় না তাঁদের।
নিজের পুরোনো হবিগুলিকে ফের চাঙ্গা করুন
বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা, বাগান তৈরি একেক জনের একেক রকম হবি থাকে। একাকীত্ব কাটাতে সেই সব ফের শুরু করুন। এই কারণে বাইরে বেরোতে হতে পারে। আর তখনই দেখবেন নিজের পছন্দমতো অনেক মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়ে যাচ্ছে। হোক না অসমবয়সী। দুজনের আগ্রহ তো একই রকম। দেখবেন ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
আলাপ করতে ভয় পাবেন না
পাঁচ হোক বা পঁচিশ কাউকে পছন্দ হলে তাঁর সঙ্গে কথা বলুন। পার্কে কোনও ছোট্টো বাচ্চার সঙ্গে আলাপ হলে তার সঙ্গে খোলা মনে কথা বলুন। রেস্তোরাঁ বা সিনেমা হলে গিয়েও যদি কারও সঙ্গে আলাপ হয় কথা বলুন। উলটো দিকের মানুষটিও যদি আগ্রহ দেখান তাহলে তো কেল্লাফতে। দেখবেন পার্কে দেখা হওয়া ছোট্টো শিশুটি রোজই প্রায় আপনার সঙ্গে এসে কথা বলবে। সিনেমা হলে কোনও কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে আলাপ হলে তিনিও আপনাকে সম্মান দিয়ে বন্ধুত্ব করবে। দুজনের মনের মিল থাকলে বন্ধুত্বও এগোবে। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি আপনাকে এড়িয়ে যেতে চান তাহলে তাঁর পিছনে সময় নষ্ট না করাই ভালো।
খোলা মনে থাকুন
সময় বদলেছে। চেষ্টা করুন সময়ের দাবি মেনে চলতে। আজকালকার ছেলেমেয়েরা কী ভাবছে কেন ভাবছে এসব জানার চেষ্টা করুন দেখবেন বেশ আগ্রহ বাড়ছে। কারও চেহারা দেখে মানুষকে বিচার করার সময় কিন্তু চলে গেছে। আজকালকার প্রজন্ম কিন্তু বেশ খোলা মনের হয়। তাঁদের সঙ্গে মিশতে শুরু করলে আপনিও দেখবেন খোলা মনের হয়ে গেছেন। প্রথম প্রথম অস্বস্তি লাগলেও পরে দেখবেন নিজেই বদলে গেছেন। এবং সেই পরিবর্তন অবশ্যই ইতিবাচক।
আত্মসম্মানের সঙ্গে কাজ করুন
যে কোনও কাজ করুন আত্মসম্মানের সঙ্গে। মনকে সবসময় ইতিবাচক রাখুন। আর মনে রাখবেন আত্মসম্মান মানে কিন্তু একগুঁয়েমি নয়। আর কিছু না হোক কবিগুরুর ‘একলা চল রে’ গানটি সবসময় মাথায় রাখবেন। যদি সঙ্গে কাউকে না পান তবেই নিজেই নিজের বন্ধু হন। একা একা বেড়াতে যান, সিনেমা-থিয়েটার দেখুন, ডাক্তারের কাছে একাই চেকআপের জন্য যান। এতে অনেক সময়ই আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
সাহায্যকারীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকুন
আপনার বয়স হয়েছে বলে অনেকেই হয়তো সাহায্যে জন্য এগিয়ে আসবেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। দেখবেন সাহায্যকারীর সঙ্গে সহজেই আপনার বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। সম্মান দিলেই সম্মান পাওয়া যায়। একতরফা কিছুই হয় না।
নতুন বন্ধুকে সময় দিন
নতুন বন্ধু পেলে তাঁকে সময় দিন। তা সে সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক, ফোনে বা সামনা সামনি। গল্প করুন আড্ডা দিন। তাঁর সম্পর্কে নানা কথা শুনুন। নিজের কথা তাঁকে বলুন। বন্ধু আপনার দায়িত্ব নিয়ে বেড়াতে যেতে চাইলে তাঁর সঙ্গে যান। আজকালকার ছেলেমেয়েরা কিন্তু যথেষ্ট দায়িত্বশীল হয়। নিজের মন ভালো থাকবে।
পুরোনো বন্ধুদের ভুলবেন না
নতুন বন্ধু পেয়ে আবার পুরোনো বন্ধুদের ভুলবেন না যেন। দেখবেন নতুন বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানোর পর পুরোনো বন্ধুদের কাঁচে তাঁর গল্প করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে তাঁরাও আগ্রহ পাচ্ছেন। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আশেপাশে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করুন।
অনলাইনে অভ্যস্ত হন
সময়ের সঙ্গে চলুন। স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের অভ্যাস বাড়ান। নিজের রুচি মতো ভার্চুয়াল বন্ধু তৈরি করতে পারেন। কোভিড 19 মহামারির সময় বয়স্কদের মধ্যে ভার্চুয়াল বন্ধু করার প্রবণতা বেড়েছে। বলছে সমীক্ষা।
সাহায্য চাইতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না
নতুন বন্ধু সঙ্গে সাবলীল সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেলে তাঁর কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারেন অনায়াসেই। এতে তিনিও খুশি হবেন। আপনিও উপকৃত হবেন। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত মানুষে মনের দুঃখ শেয়ার করেন। অসমবয়সী বন্ধু বুঝদার হলে আপনাকে মানসিকভাবে সমর্থন করবেন। এতে নিজের ভীতি, উদ্বেগ, হতাশা ইত্যাদি সহজে দূর হয়।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-11-10 15:10:47
Source link
Leave a Reply