আসলে বিপাশার বয়স অনেক দিন হলই ৪০ পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বলিউড নায়িকা বিপাশা বসুর মতোই তিনি ফিট এবং গ্ল্যামারাস। মুখে বলিরেখার চিহ্ন মাত্র নেই। মুখ সবসময় চক চক করছে। বয়স সত্যিই সত্যিই তাঁর কাছে সংখ্যা মাত্র। আর এই রকম তরতাজা চেহারা টিকিয়ে রাখতে তিনি নিয়মিত শরীরচর্চা যেমন করেন তেমনই, খাবার দাবার খান ভীষণ মেপে। অতিরিক্ত ভাজা পোড়া, মশলাদার খাবার থেকে দূরেই থাকেন।
আসলে শরীরকে সুস্থ রাখতে খাবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
বয়সকে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখতে সবাই চায়। প্রকৃতির নিয়মে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বাড়তেই থাকে। তবে অনেকেই আছেন যাদের বয়সের তুলনায় বার্ধক্যের ছাপ বেশি দেখায়। এর অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। মুখে বলিরেখা, চুল উঠে যাওয়া, নানা রকম রোগের উপসর্গ দেখা দেবে সহজেই। তা কোন কোন খাবার খেলে আপনার শরীরে তাড়াতাড়ি বার্ধক্য ধরা দেবে জানেন?
তেল-ঝাল-মশলা
চিকেন স্বাস্থ্যকর খাবার। কিন্তু সেটি যদি রসিয়ে কষিয়ে তেল, শুকনো লঙ্কা এবং অন্যান্য মশলা দিয়ে কষিয়ে খান তাহলে জিভ তুষ্ট হলেও শরীর অসন্তুষ্ট হয়ে উঠবে। অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মশলা দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এর ফলে ত্বকে লালচে বা কালচে ছোপ ছোপ দাগ পড়তে পারে। হজমের সমস্যা থেকে অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রকট হতে পারে। এর ফলে অনিদ্রা রোগ শরীরের বাসা বাঁধতে পারে। সঙ্গে আছে ওজন বৃদ্ধি এবং গ্যাস্ট্রিক গ্ল্যান্ডের সমস্যা। আর এই সব কারণেই দ্রুত বুড়িয়ে যেতে পারেন আপনি।
মদ্যপান এবং ধূমপান
অ্যালকোহল হার্ট কিংবা লিভার তো বটেই ত্বকের পক্ষেও খুব ক্ষতিকর। আজকাল ছোটোখাটো ব্যাপারেই অ্যালকোহল পানের প্রবণতা অত্যাধিক বেড়েছে। ঘরের ছোটো পার্টি হোক কিংবা বিয়ে বাড়ি মদ ছাড়া যেন কারও চলে না। এমনকি বাড়ি ফিরে সন্ধ্যা বেলায় রিল্যাক্স হওয়ার অজুহাতেও অ্যালকোহল সেবন আজকাল ফ্যাশন। আর নেশা ধরে গেলে তো কথাই নেই। কিন্তু অ্যালকোহল যে আপনাকে বুড়ো করে দেওয়ার পিছনে সবচেয়ে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে তা জানেন কি? অ্যালকোহল সেবনের ফলে ত্বকের বলিরেখা বাড়তে থাকে, ত্বক ক্রমশ কুঁচকে যায়। চোখের নীচে কালো কালি জমতে থাকে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ক্রমশ মুখ বুড়িয়ে যায়।
ধূমপান স্বাস্থ্যের যে ক্ষতিকর তা সবাই জানে। কিন্তু কেউ এটি বন্ধ করেন না বা এগুলি বিক্রিও বন্ধ হয় না। অথচ ধূমপান করলে মুখের বলিরেখা ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে। ত্বকের কোষ গঠন বন্ধ হযে গিয়ে ত্বককে নিষ্প্রভ করে তোলে। ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যায়।
এনার্জি ড্রিঙ্কস
এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করলে সাময়িক শক্তি পাওয়া গেলেও বয়সের ছাপ তাড়াতাড়ি চলে আসে। এনার্জি ড্রিঙ্কে উচ্চমাত্রায় সুগার থাকে। এতে থাকা অ্যাসিড দ্রুত দাঁত ক্ষয় করে এবং দাগ ফেলে। এতে থাকা সোডিয়াম উপাদান শরীরের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়।
চিনি
মিষ্টি খেতে অনেকেই ভালোবাসেন। এমনকি চায়ের মধ্যে বেশ কয়েক চামচ চিনি দিয়ে খাওয়ার অভ্যাসও অনেকের আছে। কিন্তু এই চিনি আখেরে ত্বক এবং স্বাস্থ্য উভয়েরই খুব ক্ষতি করে। ত্বককে তারুণ্য এবং গ্ল্যামারাস করে তুলতে কোলোজেন এবং ইলাস্টিনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ চিনির মধ্যে থাকা গ্লুকোজ এই কোলোজেন এবং ইলাস্টিনকে কমিয়ে দেয়। ফলে ত্বক নিষ্প্রভ হয়ে ওঠে। ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়।
নুন
খাবারে অত্যাধিক নুন যেমন স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ তেমনই ত্বকের পক্ষে। অতিরিক্ত নুনও ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। রক্ত চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করে। যার প্রভাব পড়ে মুখের ত্বকে। শুধু রান্না করা খাবারই নয় চিপস্, চানাচুর, দোকানের ভাজাভুজিতেও থাকে প্রচুর পরিমাণে নুন।
ফাস্ট ফুড
সুস্বাদু ফাস্ট ফুড খেতে সকলেরই ভালো লাগে। বিনা পরিশ্রমে ঝটপট দোকান থেকে খাবার তো খেয়ে নিলেন, কিন্তু তাতে যে ত্বক এবং চুলের ক্ষতি করলেন সেই হিসেব কেউ রাখেন না। ফাস্ট ফুডে প্রচুর পরিমাণে নুন এবং তেল থাকে যেগুলি স্বাস্থ্য এবং ত্বক উভয়ের পক্ষে ক্ষতিকর। একই সমস্যা হয় প্রসেসড্ ফুডে খেলেও।
ফ্রোজেন এবং প্রসেসড্ ফুড
আজকাল মানুষের হাতে সময় কম। তাই ফ্রোজেন এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের চাহিদাও বাড়ছে। বিভিন্ন সংস্থা নিত্যদিন তাদের প্রক্রিয়াজাত খাবারের বিজ্ঞাপন দিয়ে চলেছে। প্যাকেট থেকে খাবার বের করে শুধু একবার কড়ািয়ে নাড়া চাড়া করে নিন। ব্যস, খাবার রেডি। কিন্তু এই সব খাবার অভ্যাসে পরিণত করলে পেশির ভয়ানক ক্ষতি হয়। তাছাড়া এগুলিতে অস্বাভাবিক পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এর ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সব খাবার খেলে খুব জল তেষ্টা পায়। আর এর ফলে কিডনির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। মুখ এবং গলা ফোলার সমস্যা দেখা দেয়। প্রক্রিয়াজাত মাংস খেতে সুস্বাদু হলেও, এতে যে নাইট্রেট থাকে তার ফলে খাদ্যনালী, পাকস্থলি, অগ্ন্যাশয় এবং অন্ত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বলা বাহুল্য, এসব রোগে আক্রান্ত হলে বয়স এমনিতেই বেড়ে যায়।
পোড়া মাংস
কাবাব, বারবিকিউ, স্টেক, গ্রিল করা মাংসের ওপরে একটা পোড়া অংশ থাকে। পোড়া মাংস খেলে শরীরে হাইড্রোকার্বনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে শরীরে প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন বেড়ে যায় এবং ত্বকের কোলাজেন ভেঙে ফেলে। কাবাব খাওয়ার আগে পোড়া অংশটি ফেলে দিলে ভালো হয়।
ক্যাফেইন
ক্লান্তি কাটাতে কফি খাওয়ার প্রবণতা আজকাল খুব বেড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক শক্তি পেতে, কাজের সময় ঘুম তাড়াতে অনেকেই ঘন ঘন কফি পান করেন। কিন্তু কফিতে থাকা ক্যাফেইন ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। অতিরিক্ত কফি নির্ভরতায় ত্বক শুকনো খটখটে হয়ে যেতে পারে। ফলে ত্বক সময়ের আগেই বুড়িয়ে যেতে পারে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-11-09 11:47:44
Source link
Leave a Reply