হাইলাইটস
- ডিমেনশিয়া রোগটা আর নতুন নয়। এবং ভালো করে খেয়াল করলেই দেখা যাবে যে, এখন ঘরে ঘরে ছড়াচ্ছে ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সের মতো নানা রোগ।
- বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যজনিত রোগ আসবে স্বাভাবিক ভাবেই। কিন্তু ডিমেনশিয়া যে ভাবে মানুষের মধ্যে জাঁকিয়ে বসছে, যে ভাবে প্রভাব ফেলছে মানুষের মস্তিষ্কে, মননে, ব্যবহারে এবং সার্বিক জীবনযাত্রায়, তা নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়।
- তবে এখন আর ডিমেনশিয়ার জন্য ধিকি ধিকি অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই, এ কথা ভুল। কারণ সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা জানাচ্ছে যে, আগে থেকে ডিমেনশিয়া আঁচ করা যায়।
বিজ্ঞানীরা মানুষের রক্তে এমন মলিকিউলার বা অণু শনাক্ত করেছেন যা ডিমেনশিয়া শুরু হওয়ার প্রায় দুই থেকে পাঁচ বছর আগে শনাক্ত করতে পারে। এবং তা জানা যায় একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে। ডি জেড এন ই এবং ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টার গটিংজেন (ইউ এম জি) -এর গবেষকদের দ্বারা আবিষ্কৃত বায়োমার্কারটি মাইক্রো আর এন এ-র পরিমাপের মাত্রার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন যে, যেহেতু কৌশলটি এখনও ব্যবহারিক ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়, তাই বিজ্ঞানীরা একটি সাধারণ, কম খরচে রক্ত পরীক্ষা তৈরি করার লক্ষ্য রেখেছেন। এবং এখানে উল্লেখ্য যে, সার্স কোভিড টু-র অনুরূপ র্যাপিড একটি পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যম্ভব হচ্ছে। ফলে কোনও মানুষের শরীরে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি আছে কি না, তা মূল্যায়ন করার জন্য রুটিন মেডিক্যাল কেয়ারে এই পরীক্ষা করা যেতেই পারে।
বৈজ্ঞানিক জার্নাল এমবো বা ই এম বি ও মলিকুলার মেডিসিনে উপস্থাপিত গবেষণার তথ্য অনুসারে, মাইক্রো আর এন এ-গুলি ডিমেনশিয়া থেরাপির জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে ইউ এম জি-তে সাইকায়াট্রি এবং সাইকোথেরাপি বিভাগের অধ্যাপক আন্দ্রে ফিশার বলেছেন, যখন ডিমেনশিয়ার মতো রোগের লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, তত দিনে মস্তিষ্ক ইতিমধ্যেই ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। বর্তমানে, রোগ নির্ণয় এমনকি তার কার্যকরী চিকিৎসার সুযোগ পেতেও স্বাভাবিক ভাবে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। যদি ডিমেনশিয়া প্রাথমিক স্তরে বা পদ্ধতিতে শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তা হলে রোগের কোর্সকে ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় অনেকাংশেই। তা ডিমেওনশিয়াকে খানিক হলেও আটকাতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ‘আমাদের এমন পরীক্ষা দরকার যা ডিমেনশিয়া শুরু হওয়ার আগে আদর্শ ভাবে সাড়া দেয়। এবং পরবর্তী রোগের ঝুঁকি নির্ভরযোগ্য ভাবে অনুমান করতে সক্ষম। আমরা নিশ্চিত যে আমাদের এই বর্তমান গবেষণার ফলাফল এই ধরনের পরীক্ষার জন্য পথ প্রশস্ত করছে।’
মানুষ এবং ইঁদুরের কোষে গবেষণার মাধ্যমে গবেষকরা তিনটি মাইক্রো আর এন এ শনাক্ত করেছেন যার মাত্রা মানসিক কর্মক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত ছিল। এর জন্য, গবেষকরা তরুণ, সুস্থ স্বাভাবিক জ্ঞানী ব্যক্তি এবং অল্প জ্ঞান সম্পন্ন বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে মাইক্রো আর এন এ-র মাত্রা মানসিক সুস্থতার সঙ্গে বেশ সম্পর্কযুক্ত।
এই গবেষণায় আরও জানা গেছে যে, রক্তের স্তর যত কম হবে, কগনিশন পরীক্ষায় সঞ্চালিত বিষয়গুলি তত ভাল। ইঁদুরের ওপরে হওয়া পরীক্ষায় পালাক্রমে ইঁদুরের মানসিক অবনতি দেখাতে শুরু করার আগেই এই স্কোর বৃদ্ধি পেয়েছে। তা সে বয়সের কারণে হোক বা অ্যালঝাইমার্স কিংবা ডিমেনশিয়ার মতো লক্ষণগুলির কারণেই হোক না কেন।
স্পষ্ট কথায় বললে, এই ডিমেনশিয়া রোগ একেবারে প্রতিহত করা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু রোগ জাঁকিয়ে বসার দুই থেকে পাঁচ বছর আগে যদি ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়, তা হলে ডিমেনশিয়া আসার সময়কে পিছিয়ে দেওয়া যায় অনেকটাই। বেশ কিছু পদ্ধতি, পরীক্ষানিরীক্ষা এবং প্রয়োজনে জীবনযাত্রার পরিবর্তন এতে সহায়ক হবে বলেই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-11-09 12:57:36
Source link
Leave a Reply