হাইলাইটস
- বিশ্বব্যাপী পুরুষরাও হরমোনজনিত ব্যাধি অর্থাৎ মেল মেনোপজের শিকার।
- এক জন মানুষ ৪০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পরে
- তাঁর টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়
বিশ্বব্যাপী পুরুষরাও হরমোনজনিত ব্যাধি অর্থাৎ মেল মেনোপজের শিকার। এক জন মানুষ ৪০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পরে তাঁর টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। সেই মাত্রা প্রতি বছর গড়ে এক শতাংশ কমে যায়। কিন্তু ভারতের মতো দেশে মহিলাদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মেনোপজে আক্রান্ত পুরুষরা এই মেল মেনোপজকে নিজেদের পুরুষত্বের জন্য কলঙ্ক এবং লজ্জা হিসেবে ভাবে। তাই সেই মেল মেনোপজ কাটিয়ে উঠতে কোনও রকম চিকিৎসার সাহায্যও তারা নেয় না।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশির ভাগ মহিলারাই মেনোপজের ভয় পান। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই মেনোপজ একটি স্বাভাবিক হরমোনের পরিবর্তন হিসেবে ভেবে নেন। বুঝে ফেলেন যে, এই মেনোপজের ফলে ফার্টিলিটি কমবে এবং তা খুবই স্বাভাবিক ভেবে নিয়ে মেনোপজকে মেনে নেন। অথচ পশ্চিমের দেশগুলিতে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় এর উলটোটা। কিছু পশ্চিমি মহিলা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি বা এইচ আর টি বেছে নেন মেনোপজকে মোকাবিলা করতে। তাই পুরুষদের মেনোপজের ক্ষেত্রেও এইচ আর টিকেও একটি চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে দেখা হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা পুরুষদের মেনোপজ কাটিয়ে উঠতে জীবনধারা পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন এবং এইচ আর টি করানোর জন্য তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শই দেন। আই ভি এফ এবং ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ কিশোর পণ্ডিত বলেছেন, ‘নারীদের মতো পুরুষদেরও মেনোপজ হয়, যাকে বলা হয় অ্যান্ড্রোপজ। চিকিৎসাগত ভাবে, আমরা এটিকে পুরুষদের বার্ধক্যজনিত হরমোনের পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করি। যখন এক জন পুরুষের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ৪০ বছর বয়সের পরে গড়ে প্রায় এক শতাংশ হ্রাস পায়, তখন এটি পুরুষদের মধ্যে মেনোপজের দিকে পরিচালিত করে। এটি একটি কলঙ্ক এবং লজ্জাজনক হিসাবে বিবেচিত হয় তাই পুরুষরা চিকিৎসা এড়ায়। তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।’ বিশেষজ্ঞরা নারী ও পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই মেনোপজের চিকিৎসার জন্য আইচ আর টি একটি বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করেন। মেনোপজের কারণে পুরুষদের ফার্টিলিটি রেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কী ভাবে বুঝবেন মেল মেনোপজের দিকে এগোচ্ছেন?
হট ফ্লাশ, অধৈর্য বোধ করা, পেট এবং বুকের চারপাশে চর্বি জমা হওয়া, পেশির ভর কমে যাওয়া, শুষ্ক, পাতলা ত্বক এবং অতিরিক্ত ঘাম সমস্ত সম্ভাব্য লক্ষণ আসলে মেল মেনোপজের আশঙ্কা বাড়ায়। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে (এন ই জে এম) প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, পুরুষদের মেনোপজের সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণগুলি হল কামশক্তি কমে যাওয়া, সকালে ইরেকশনের কম ফ্রিকোয়েন্সি এবং ইরেক্টাইল ডিসফাংশন জাতীয় সমস্যা। মেল হরমোনের মাত্রা হ্রাস হওয়ার ফলে বিষণ্নতা এবং ক্লান্তি বোধ হওয়া খুব স্বাভাবিক লক্ষণ।
স্ত্রীরোগ এবং আই ভি এফ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অর্চনা ধাওয়ান বাজাজের মতে, মেনোপজ হওয়ার কোনও বিশেষ সময় নেই। এটি ৫০ বছর বয়সেও হতে পারে। কোনও ব্যক্তির স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে সেই ব্যক্তির মেনোপজ বা অ্যান্ড্রুপজ নির্ধারিত হয়। তিনি আরও বলছেন, ‘মহিলাদের মধে মেনোপজ যে ভাবে দেখা যায়, পুরুষদের মধ্যে মেল মেনোপজ সেই একই ভাবে প্রকাশ পায় না। কিন্তু দু জনের ক্ষেত্রেই এই মেনোপজ প্রভাব ফেলতে পারে তাঁদের ফার্টিলিটির ওপরে। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে কম হলে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিকে চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে দেখা যেতেই পারে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে পুরুষদের ফার্টিলিটি কম হওয়ার কারণ কিন্তু শুধু টেন্টোস্টেরনের সঙ্গেই জড়িয়ে নেই। নিজের আত্মবিশ্বাস কম হওয়া, যৌন চাহিদার অভাব, অক্ষমতার অনুভূতি বা বয়স্ক বোধ করার কারণগুলিও এর মধ্যে পড়ে। তাই পুরুষদের সচেতন করা খুবই জরুরি।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-11-08 14:37:22
Source link
Leave a Reply