সমস্যাঃ আমার পায়ে তিন বছর আগে শ্বেতির একটি দাগ পড়ে। পরে সারা গায়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও ছোট দু-একটা দাগ ওঠে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে দিনে ইলিডেল ক্রিম ও রাতে কোলটার অয়েন্টমেন্ট দুই শতাংশ ব্যবহার করছি। খুব আস্তে আস্তে কমছে দাগগুলো। নতুন কোনো দাগ উঠছে না। পত্রিকায় প্রায়ই দেখি ‘লেজার চেইন’-এর বিজ্ঞাপন। এটা কতটুকু ফলপ্রসূ এবং এতে কী পরিমাণ খরচ পড়বে আর কত দিন লাগতে পারে দাগটা নির্মূল করতে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে উপকৃত হব। আমি অবিবাহিত। বয়স ২২ বছর।
টিথি
সিলেট।
পরামর্শঃ শ্বেতি বা ভিটিলিগো রোগের চিকিৎসা বর্তমানে বেশ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তবে শতভাগ ভালো হওয়ার নিশ্চয়তা এখনো দেওয়া সম্ভব নয়। আবার সব শ্বেতি রোগীর চিকিৎসাব্যবস্থাও এক নয়।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা রোগীর বয়স, আক্রান্ত স্থান বিবেচনা করে শ্বেতি রোগীর চিকিৎসা, যেমন ত্বকে লাগানোর বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বা খাওয়ানোর ওষুধ বা ফটোথেরাপি কিংবা বিশেষ ধরনের লেজার-থেরাপির ব্যবস্থা দিয়ে থাকেন। নির্দিষ্ট সময়ের পর উল্লিখিত পদ্ধতিতে কাজ না হলে পরবর্তীকালে গ্রাফট সার্জারি পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যার ফলও ভালো।
বর্তমানে নতুন পদ্ধতি বিশেষ কেন্দ্রে মেলানো সাইট ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমেও চিকিৎসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আপনাকে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, এ ওষুধটি বিশ্বের বিভিন্ন চর্মরোগ বিভাগে শ্বেতির চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ছয় মাস পর্যন্ত আক্রান্ত স্থানে ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায় এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম।
বর্তমানে বিশেষ ধরনের লেজার মেশিনের মাধ্যমেও শ্বেতির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
যদিও এ পদ্ধতি আপনাকে শতভাগ সুস্থ হওয়ার নিশ্চয়তা দেবে না। লেজার চিকিৎসার খরচ নির্ভর করে কোন মেশিন ব্যবহার করা হবে, কতবার দেওয়া লাগবে, এর ওপর। লেজার চিকিৎসাকেন্দ্রে গেলেই যে লেজার দ্বারা চিকিৎসা করা লাগবে, এটাও ঠিক নয়। তবে জেনে রাখা ভালো, ফটোথেরাপি ও লেজারথেরাপি এক নয়।
শ্বেতি রোগের চিকিৎসার ফল ভালো, তবে সময়সাপেক্ষ।
চর্মরোগবিশেষজ্ঞ নির্ধারণ করবেন, কী ধরনের চিকিৎসা ও কত দিন চিকিৎসার প্রয়োজন। শ্বেতি কোনো সংক্রামক রোগ নয় বা এটা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণও নয়। তাই দুশ্চিন্তা করবেন না।
পরামর্শ দিয়েছেন
সৈয়দ আফজালুল করিম
সহযোগী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ
হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২০, ২০০৯
Leave a Reply