হাইলাইটস
- বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়।
- নাক বন্ধভাব, সর্দি, চোখে চুলকানি ও চোখ থেকে জল পড়া, বুকে চাপ চাপ বোধ, কাশি, হাঁচি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি উপসর্গ শ্বাসকষ্টের উপসর্গ হিসেবে বলা হয়।
- শ্বাসকষ্ট বাড়ার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে, এমনিতে নভেম্বর মাসে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে।
এই সময় বায়ুদূষণের পরিমাণও অনেক বেড়ে যায় যা শ্বাসকষ্টের সবচেয়ে বড় কারণ। শ্বাসকষ্ট সাধারণত দুই রকমের। অ্যাকিউট বা তীব্র ধরনের, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তীব্র শ্বাসকষ্টে রূপান্তরিত হয়। এতে অতি দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। দ্বিতীয়টি ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট, যার তীব্রতা প্রথমে কম থাকে, পরে বাড়তে থাকে।
শীতে কেন বাড়ে শ্বাসকষ্ট?
বিশেষজ্ঞদের মতে শীতকালে দু’টি কারণে আক্রান্ত হয় বেশি। তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পরিবেশের শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে জীবাণু সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর থেকে তা সহজে বের হয় না। তখন জীবাণুরা বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণভাবে ফুসফুসের অভ্যন্তরের এক রকমের তরল নিঃসৃত হয়, যা ব্রঙ্কিয়াল নিঃসরণ বলা হয়। এই তরলের সাহায্যে শ্বাসতন্ত্রের অভ্যন্তরে থাকা সিলিয়ারি কোষ শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে পড়া ধুলাবালি ও জীবাণুকে বের করে দেয়। কিন্তু বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শ্বাসতন্ত্রেও শুষ্কভাব তৈরি হয়। আবার এই সময় জল কম খাওয়া হয় তাই বঙ্কিয়াল নিঃসরণ কমে যায়। শ্বাসতন্ত্রে শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রকমের রোগের সৃষ্টি হয়। আবার যাঁদের আগে থেকেই শ্বাককষ্টের সমস্যা আছে তাদের ঠিক একই কারণে রোগের প্রকোপ বাড়ে। দেখা যায়, এমনিতে যারা সারা বছর শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগে না, তাদেরও কাউকে কাউকে শীতকাল ও শুষ্ক মরসুমে ইনহেলার নিতে হয়।
শ্বাসকষ্ট হলে খেয়াল রাখুন
* শ্বাসকষ্ট যদি দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকে, তা সাধারণত ব্রঙ্কাইটিস, টিবি বা যক্ষ্মা, অ্যাজমা, অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার কারণে হয়। তাই দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট যদি থাকে, তা যদি অল্প পরিমাণেও হয়, তবু ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
* শৈশবে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে থেকে যদি শ্বাসকষ্টের ইতিহাস থাকে, তা সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য হয়। এ ধরনের রোগীরা বয়স বেশি হলে তীব্র ধরনের অ্যাজমায় আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে।
* সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্ট রাতে বা ভোরে বেশি হয়। আবার কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের কিছু অসুখের প্রকোপও রাতে বাড়ে।
* শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যদি জ্বর থাকে, বুকে ব্যথা হয়, শ্বাস নিতে শোঁ শোঁ শব্দ হয়, তা সাধারণত ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতা, যেমন-নিউমোনিয়ার জন্য হয়। এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
* যাদের এমনিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নেই, কিন্তু কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতা আছে, তাদের হঠাৎ যদি শ্বাসকষ্ট হয়, অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কিডনি জটিলতায় অনেকের রক্তে এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্টসহ প্রাণঘাতি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
* বা়ড়ির বাইরে বেরোতে হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। বিশেষ করে যাঁদের শ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই সময়ে মাস্ক ব্যবহার করলে এই সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
* এই সময় ঘরের ভিতরও পরিষ্কার রাখা উচিত। না হলে ঘরের ধুলোও শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
* শীতকালে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার মাখলে ত্বকের শুষ্কতা কমবে। ফলে ধুলোর পরিমাণও কিছুটা কমবে। শ্বাসকষ্টও বাড়বে না।
* এই সময় অবশ্যই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাঁরা যদি শীতে ধূমপান করেন, তাঁদের ফুসফুসের উপর চাপ পড়ে। তাই ধূমপানের অভ্যাস এই সময়ে ছাড়তে হবেই।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-11-04 09:22:37
Source link
Leave a Reply