বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত পানিতে সর্বোচ্চ মাত্রার সহনীয় আর্সেনিকের মাত্রা ০.০৫ পিপিএম। এই মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রার হলে সেই পানিকে আমরা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলব।
আর্সেনিক দূষণে আক্রান্তের লক্ষণগুলোঃ অতিরিক্ত আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করতে থাকলে মানবদেহে নিম্মোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়ঃ
১) শরীরে কালো কালো ছোপ বা দাগ দেখা দেয়।
২) হাত ও পায়ের সংবেদনশীলতা নষ্ট হয়। হাত ও পায়ের তালু শক্ত ও খসখসে হয়। সর্বোপরি ‘ব্লাক ফুট’ নামক রোগের সৃষ্টি হয়।
৩) পেটের যন্ত্রণা ও মাথার যন্ত্রণা দেখা দেয়।
৪) কিডনির কর্মক্ষমতা লোপ পায়।
৫) বমি, রক্তবমি ও জন্ডিস দেখা দেয়।
৬) অবশেষে কুষ্ঠের মতো ঘা নিয়ে দীর্ঘকাল ভোগার পর রোগী আক্রান্ত হয় ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতে।
আর্সেনিকযুক্ত পানি সম্পর্কে যা জানা প্রয়োজনঃ
১) আর্সেনিক দূষণের প্রতিক্রিয়া সংক্রামক বা ছোঁয়াছে নয়।
২) নদী, পুকুর ও বিলের পানিতে আর্সেনিক থাকে না।
৩) আর্সেনিকযুক্ত পানি ফুটিয়ে পান করলে আর্সেনিক দূর হয় না বরং আর্সেনিকের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৪) আর্সেনিকযুক্ত পানি পান বা রান্নায় ব্যবহার না করলে রোগী এমনিতেই অনেকাংশে ভালো হয়ে যায়।
উপসংহারঃ আপনার এলাকার নলকূপের পানি আর্সেনিকমুক্ত কি না তা পরীক্ষা করে জেনে নিন। প্রয়োজনে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে যোগাযোগ করুন। বলাবাহুল্য হিরোশিমা, নাগাসাকি, চেরনোবিল কিংবা ভূপাল ট্রাজেডির তুলনায় আর্সেনিক দূষণের ঘটনা কোনো অংশে কম নয়। তাই গণমানুষের মুক্তির জন্যই জরুরি ভিত্তিতে আর্সেনিকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সরকার ও সচেতন মহলের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
লেখকঃ ডা. দিদারুল আহসান
দৈনিক নয়াদিগন্ত, ১১ নভেম্বর ২০০৭
Leave a Reply