গ্রুপের অনেক সদস্যই নানা নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রায় সকলেরই দাবি তাঁর প্রস্তাবিত নামটি বেশ অপরিচিত। কিন্তু বাস্তবে এই সব স্থান আজকাল ইন্টারনেটের কল্যাণে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই সব জায়গা ঘুরে আসাই যাই। কিন্তু অচেনা স্থানে ঘোরার আমেজটাই যে আলাদা।
হেমিস (জম্মু ও কাশ্মীর)
জম্মু ও কাশ্মীরের হেমিস জায়গাটির নাম শুনেছেন? অনেকেই হয়তো শোনেননি। এখানকার জাতীয় উদ্যানটি স্নো লেপার্ডের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। অথচ আমাদের দেশে বহু ভ্রমণপ্রেমীই এই স্থানের নাম জানেন না। হেমিস জাতীয় উদ্যানের গভীর অংশে স্নো লেপার্ডের দেখা মেলে। পরিকাঠামোর অভাব এবং যাতায়াতের অসুবিধার কারণে এই স্থানে পর্যটকদের সমাগম হয় না বললেই চলে। এখানে একটু কষ্ট করেই যেতে হয়। তবে প্রকৃত প্রকৃতিপ্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা অনেক কষ্ট স্বীকার করেও সেখানে পৌঁছোনোর চেষ্টা করে। যদিও সেই সংখ্যাটা হাতে গোনা। স্নো লেপার্ড ছাড়াও এই অরণ্যে পাবেন তিব্বতি নেকড়ে, ইউরেশিয়ান বাদামি ভাল্লুক এবং লাল খেঁকশেয়াল। সঙ্গে সেখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তো আছেই এবং সবচেয়ে বড় কথা স্থানটি একেবারে নিরিবিলি।
ধোলাভিরা (গুজরাট)
ভারতের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহ থাকলে গুজরাটের ধোলাভিরা একটি আদর্শ স্থান হতে পারে। এখানে রয়েছে হরপ্পা সভ্যতার স্পষ্ট নিদর্শন। সকালবেলা গাড়ি চেপে হরপ্পা স্থলে কচ্ছের রণের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। আশ্চর্যের বিষয় খুব কম লোকই এই স্থানের কথা জানেন। এখানে গেলে মনে হবে ইতিহাস যেন আপনার সঙ্গে নিজেদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এখানে খনন কাজ এখনও চলছে। হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ দেখতে কোনও গাইডেরও প্রয়োজন হয় না। এলাকা ঘুরে দেখুন পায়ে হেঁটে। দেখতে দেখতে গায়ে কাঁটা দেবে। স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা কর্মরত মজুররাই আপনাকে নানা স্থান দেখিয়ে দেবেন। এর জন্য কোনও খরচও হয় না। হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ দেখার পর ঘুরে নিন সংলগ্ন সংগ্রহশালাটিও। তারপর কচ্ছের রণে চলে যান। রণ উৎসবে সময় কাটাতে চাইলে ডিসেম্বর-জানুয়ারির দিকে ঘুরে আসুন। সন্ধ্যাবেলায় সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তবে সেখান থেকে কেনাকাটা না করাই ভালো। বাইরের থেকে রণ উৎসবে জিনিসের দাম প্রায় ৮-১০ গুণ বেশি। আর মনে রাখবেন এই সব স্থানে খাবার খাওয়ার পর যেখানে সেখানে প্লাস্টিক বা অন্য কিছু ফেলবেন না। আবর্জনা ফেলবেন নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে।
করওয়ার (গোয়ার)
গোয়ার আরেকটি অফবিট স্থান হল করওয়ার। গোয়া এবং কর্ণাটকের দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত করওয়ার স্থানের সংস্কৃতি গোয়ার আর পাঁচটা স্থানের থেকে আলাদা। এখানকার একটি সৈকতের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সি বিচ। এছাড়াও করওয়ার বিচ, কালী নদী এলাকার সৌন্দর্য্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। লোকজন এখানে কমই যান। তাই শান্তিতে অবকাশ যাপনের সেরা ঠিকানা এটি।
পরুলে (মহারাষ্ট্র)
মহারাষ্ট্রে গেলে এলিফ্যান্টা গুহা, জুহু বিচ, অজন্তা-ইলোরা গুহা, মহাবালেশ্বর, লোনাভলা তো সকলেই যান। সেকারণে এসব স্থানে খুব ভিড় থাকে। কিন্তু এই রাজ্যেরই একটি স্থান আছে যেখানে ভিড় হয় না বললেই চলে। অথচ খুব সুন্দর এই স্থান। নাম পরুলে। মুম্বই এবং গোয়া ঠিক মাঝখানে অবস্থিত এবং উপকূলবর্তী শহরটি প্রকৃতপক্ষেই একটি অফবিট স্থান। একানকার মাছলি নামে একটি স্থান আছে সেখানে পর্যটকদের সময় কাটাতে ভালো লাগবে। এখানকার তারকরলি নামক স্থানে স্কুবা ডাইভিং সহ নানা ওয়াটার গেমের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এখানকার সবচেয়ে নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত ভোগবে বিচ ঘুরে আসতে পারেন। লোকজন এর নামই হয়তো শোনেননি।
নাগাপট্টিনম (তামিলনাড়ু)
দক্ষিণী বঙ্গোপসাগরের রূপ দেখতে চেন্নাই, কন্যাকুমারী বা পণ্ডিচেরি তো অনেকেই যান। কিন্তু তামিলনাড়ুর সমুদ্র শহর নাগাপট্টিনমে কজন গেছেন? হলফ করে বলতে পারি সংখ্যাটা হাতে গোনা। অনেকে হয়তো নাগাপট্টিনমের নামই শোনেননি। সমুদ্রের ধারে প্রচণ্ড শান্ত এবং নিরিবিলি শহর নাগাপট্টিনম এবং পিচাভরম। সময় পেলে ঘুরে আসুন সেখান থেকে।
রুশিকুল্লা বিচ (ওড়িশা)
ওড়িশা মানেই পুরী, কোণার্ক, উদয়গিরি, খণ্ডগিরি, দারিংবারি কিংবা সিমলিপাল। জগন্নাথ দেবের মন্দির দর্শন এবং সমুদ্রসৈকতে ছুটি কাটাতে বাঙালির পর্যটকরা প্রায় প্রতিবছরই সেখানে ভিড় জমান। অথচ এই ওড়িশারই আরেকটি নিরিবিলি স্থান রয়েছে সেখানে অবকাশ কাটানো যায় নিশ্চিন্তে। নাম অনেকেই শোনেননি। রুশিকুল্লা বিচ। চিল্কা হ্রদের ধারে রয়েছে এই রুশিকুল্লা তট। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে খুব কম পর্যটকই এই স্থানে ছুটি কাটাতে যান। হোটেলের সংখ্যা হাতে গোনা। তবে খাবার দাবার অসাধারণ। মার্চ-এপ্রিল মাসে এই তট ছোটো ছোটো কচ্ছপে ভরে যায়। তখন তার শোভাই আলাদা।
মকোকচুং (নাগাল্যান্ড)
সমুদ্রতল থেকে প্রায় ১৩২৫ মিটার উপরে রয়েছে নাগাল্যান্ডের মকোকচুং গ্রামটি অবস্থিত। এখানে শুধুমাত্র নাগাপ্রজাতির মানুষরাই বসবাস করেন। তাঁদের মন্তসু পরব বেশ বিখ্যাত। এই পরব দেখতে অনেকেই মকোচুং গ্রামে যান। তবে তার সংখ্যা হাতে গোনা। এই গ্রামের আবহাওয়া সারাবছর মনোরম থাকে। তাই চাইলে যে কোনও সময়ই এখানে যেতে পারেন। এখানেও পর্যটকের ভিড় বিশেষ হয় না।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-11-03 13:20:18
Source link
Leave a Reply