‘যখন চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন দাদি আচার বানাতেন আর আমরা চুরি করে খেতাম। পরে তাঁর কাছেই আচার বানানো শিখি। তখন আমাদের বাড়িতে আম আসত ভাঁড় দিয়ে। এখন তো আর অত আম পাওয়া যায় না। বাড়িতে আমের গাছ লাগিয়েছি। নিজের গাছের আম দিয়েই আচার বানাই।’ বললেন গওহর আফজা। প্রাণ-প্রথম আলো জাতীয় আচার প্রতিযোগিতা ২০০৯-এর ‘বর্ষসেরা আচার’ পুরস্কার জিতে এক লাখ টাকা পেয়েছেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই আচার বানানো শখ তাঁর। জানালেন প্রথমবার আচার বানানোর কথা—‘একবার ঝড়ে বাড়ির গাছের সব আম পড়ে যায়। পাড়া-পড়শিদের দিয়েও দুই বালতি আম রয়ে গেল। সে আম দিয়েই আচার বানানো শুরু আমার।’
পুরস্কার পাওয়া এক লাখ টাকা দিয়ে কী করলেন প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘এই টাকা ব্যাংকে জমা আছে, খরচ করিনি, এ বছর শীত মৌসুমে পরিবারের সবাই মিলে নেপাল বেড়াতে যাব।’ আরও বললেন, ‘আমার তিন মেয়ে আর এক ছেলে। এর মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ে সোহানা ভালো আঁচার বানায়। মেয়ে এবং ছেলের বউয়ের উৎসাহেই প্রাণ-প্রথম আলো আচার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম।’
প্রাণ-প্রথম আলো জাতীয় আচার প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মজার এক অভিজ্ঞতার কথা বললেন। ‘অনুষ্ঠানের দিন বেশ কয়েকবার আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি অনুষ্ঠানে আসছেন তো? এরপর আমি ধরেই নিয়েছিলাম, কোনো পুরস্কার হয়তো পাব। কিন্তু পুরস্কার বিতরণী প্রায় শেষ। তখনো আমার নাম বলল না। আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। দেখি পাশে বসা ছেলের বউয়ের হাতও ঠান্ডা। এমন সময়ই ঘোষণা হলো, বর্ষসেরা আচারের পুরষ্কার …।’
খালেদ সরকার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ১১, ২০১০
Leave a Reply