হাইলাইটস
- ভোরবেলা শরীরচর্চা করা কমলবাবুর বহুদিনের অভ্যাস। যোগাসন, খালি পায়ে ঘাসে হাঁটা। গরম জলে গার্গল করা।
- চ্যবনপ্রাস খাওয়া। হালকা লিকার চা এবং সঙ্গে টোস্ট বিস্কুট ইত্যাদি ইত্যাদি। নিয়মিত প্রেশার, অক্সিজেনের মাত্রা মাপেন তিনি।
- তিন চার মাস অন্তর ইসিজি করেন এবং ব্লাড সুগারও মাপেন।
কিন্তু বয়স তো কারও কথা শোনে না। শরীরও কারও মন বুঝে চলে না। কিছুদিন থেকেই কমলবাবু খেয়াল করছেন যে তাঁর চোখের দৃষ্টিটা ঝাপসা হচ্ছে। চোখের ডাক্তার দেখালেন। পাওয়ারে বিশেষ কোনও হেরফের নেই। সহজে অসুস্থ হন না বলে কমলবাবু নিজেকে বেশ বিজ্ঞ বলে মনে করেন। বাড়ির কারও কথার বিশেষ তোয়াক্কা করেন না। তাই ভাবলেন চোখের ডাক্তার পালটাতে হবে। হয়তো ছানি পড়েছে। যাচ্ছি যাব করে নতুন ডাক্তারের কাছে যাওয়া হল না। তার উপর করোনার হামলার জেরে চারদিকে লকডাউন শুরু হয়। ডাক্তার দেখাতেও লোকে ভয় পাচ্ছে। কমলবাবু সাহস করে নতুন ডাক্তারের কাছে যেতে ভরসা পেলেন না। যদি রোগ হয়ে যায়। খবরের কাগজ নেওয়া বন্ধ হলেও মোবাইল ফোনে নিয়মিত খবর পড়েন তিনি। কিন্তু দিন দিন ঝাপসা ব্যাপারটা বাড়তে থাকে। আতস কাঁচ দিয়ে স্মার্টফোনের খবর দেখেন তিনি। তাতেও যে বিশেষ লাভ হয় তা নয়। কিন্তু মাস খানেকের মধ্যে তাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। তারপর একদিন শরীরে জুড়ে এল ক্লান্তি। সবসময় ঝিমুনি ভাব থাকে আর ঘুম পায়। অন লাইনে ডাক্তারের সঙ্গে কথা হওয়ার পর কমলবাবুর মেয়ে জানালেন বাবাকে ব্লাড সুগার পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাবতীয় সুরক্ষা নিয়ে তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হল। এবং রিপোর্ট এল পজিটিভ। কমলবাবু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্লাড সুগারের (Blood Sugar) মাত্রা বৃদ্ধি অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজকাল যুবক-যুবতিদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে অল্প বয়সেই ব্লাড সুগারে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। এবং তাঁদের অনেকেরই প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া। তাছাড়া বর্তমানে কোভিড 19 থেকে যাঁরা সেরে উঠেছেন তাঁদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ডায়াবিটিসের হার বেড়েছে। এবং তার লক্ষণও হতে পারে ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি। এবং সমস্যা ডায়াবিটিস (Diabetes) থাকাকালীনও থাকে। ঝাপসা দৃষ্টি জটিল ডায়াবিটিসের লক্ষণ। এটি দুই রকম হয়, দীর্ঘকালীন এবং স্বল্পকালীন।
- দীর্ঘদিন ধরে চোখের দৃষ্টির ঝাপসাভাব (Diabetes And Your Eyes) থাকার অর্থ ডায়াবিটিস বেশ জটিল। ব্লাড সুগারের মাত্রা অনেকটাই বেশি। এর ফলে অনেক সময়ই ধমনীর ক্ষতি হতে পারে। আবার এর ফলে চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্তও হয়ে থাকে। ফলে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে ওঠে। স্বল্পকালীন ঝাপসা ভাব অবশ্য আলাদা।
- ব্লাড সুগারের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে চোখে জলীয় পদার্থআনাগোনার কারণে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।এর জেরে চোখে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলে চোখের ঝাপসা ভাবও কমতে থাকে।
- আবার অনেক সময় ব্লাড সুগারের মাত্রা নেমে গেলেও চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকলে চোখের ডাক্তার দেখানো যেমন জরুরি তেমনই প্রয়োজন রক্ত পরীক্ষা।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও যদি ঝাপসাভাব থাকে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দৃষ্টিশক্তি হঠাৎ ঝাপসা হতে শুরু করা ডায়াবাটিসের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ। দিন দিন তা আরও খারাপ হতে থাকে। নতুন বা ভুক্তভোগী উভয় প্রকার ডায়াবিটিসের রোগীই ঝাপসা দৃষ্টির শিকার হতে পারেন।
- ডায়াবিটিস রোগীদের বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা প্রয়োজন। এবং সেই পরীক্ষা করাতে হবে চোখের ডাক্তার দিয়ে। মানে অপ্টোমেট্রিস্ট নন ডায়াবিটিক রোগীর চোখের সমস্যার চিকিৎসা করতে পারেন অফথালমোলজিস্ট (ophthalmologists)।
- চোখের ঝাপসা ভাবের কারণে ডাক্তারের কথা মতো খাবার এবং ওষুধ নিয়মিত খেতে হবে।নির্দিষ্ট সময় অন্ত ব্লাড সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যা থাকলে আরও সাবধান হতে হবে।
- ওষুধ, খাবার, যোগাসন এবং জীবনযাত্রার নিয়ম শৃঙ্খলা চোখের ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যা মেটাতে পারে।
- ডায়াবিটিক রোগীদের গ্লুকোমা হলেও চিন্তার কারণ থাকে। তাই চোখের ঝাপসা দৃষ্টিশক্তিকে অবহেলা করবেন না। মনে রাখবেন সচেতনতাই রোগকে দূরে সরিয়ে রাখে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-10-31 12:15:41
Source link
Leave a Reply