একজন রোগী মোঃ রহমান কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সমুদ্রে স্নান করার কয়েক দিন পর তার গলার স্বর পরিবর্তন হয়। তারপর তিনি আমাদের কাছে আসেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখলাম, তার জ্বর আছে, বিশেষ করে কণ্ঠনালিতে প্রদাহ আছে এবং লাল হয়ে গেছে, যাকে বলা হয় একিউট ল্যারিনজাইটিস। আমরা কিছু ওষুধ ব্যবস্থাপত্র দিলাম এবং কয়েক দিন কথা কম বলার উপদেশ দিলাম। সাতদিন পর পরবর্তী ভিজিটে দেখা গেল তিনি অনেক ভালো হয়ে গেছেন। কণ্ঠনালীর প্রদাহ অনেক কমে গেছে এবং কথা বলতে পারছেন।
স্বর পরিবর্তনের অন্যান্য কারণ
ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে কণ্ঠনালীর প্রদাহ হতে পারে যা রহমানের হয়েছে। আরো অন্য অনেক কারণে কণ্ঠনালীর স্বর পরিবর্তন হয়। যেমন ভোকাল কর্ড পলিপ, ভোকাল কর্ড নডিউল, ভোকাল কর্ড টিউমার বা ক্যান্সার, থাইরয়েড হরমোন যদি কমে যায় (হাইপোথাইরয়ডিজম), কণ্ঠনালীর নার্ভ (রিকারেন্ট ল্যারিনজিয়াল নার্ভ) প্যারালাইসিস হলে এবং আরো অন্য কারণে স্বর পরিবর্তন হয়।
অনেকদিন ধরে উচ্চস্বরে কথা বলা বা যাদের বেশি কথা বলতে হয় যেমন হকার, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, অনেক সন্তানের মা এবং শিল্পীদেরও স্বর পরিবর্তন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি মানসিক কারণেও কথা বলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
গলার স্বর যদি বসে যায় এবং তা যদি ১৫ দিনের চিকিৎসায় ভালো না হয়, তাহলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গলার স্বর পরিবর্তন হলে নিকটবর্তী নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা নিলে ভোকাল কর্ড ক্যান্সার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।
লেখকঃ প্রফেসর ডা. এম আলমগীর চৌধুরী
উৎসঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত, ০৯ ডিসেম্বর ২০০৭
Leave a Reply