হাইলাইটস
- সে সময় সিডি, ডিভিডি, ইন্টারনেটের কোনও চলই ছিল না।
- গুপী গাইন বাঘা বাইন ছবিটি মিঠাই প্রথম দেখেছিল দূরদর্শনের ছুটি ছুটি অনুষ্ঠানে।
- গরমের ছুটিতে হাঁ করে চোখ দিয়ে গিলেছিল ছবিটি সে।
তার সবচেয়ে প্রিয় দৃশ্য ছিল গুপী-বাঘার খাবার। এত খাবার, এত মিষ্টি দেখলেই জিভে জল চলে আসত। ছোটো থেকে তার ইচ্ছে ছিল এরকমভাবে থালা সাজিয়ে যদি কেউ তাকে খেতে দিত তাহলে দারুণ হত। বিশেষ করে মিষ্টির থালা দেখে তো পাগল হয়ে যেত সে। মিষ্টির থালার বিশাল বড় রাজভোগটি ছিল তার কাছে প্রধান আকর্ষণ। আর ভালো লাগত একেবারে শেষে দিকের দৃশ্য। যেখানে যুদ্ধ থামানোর জন্য গুপী গান গেয়ে আকাশ থেকে মিষ্টি নামাচ্ছে।
মিঠাই একা নয়, ছোটোবেলায় এধরনের ইচ্ছে কমবেশি অনেকেরই হয়েছে। ভূতের রাজার বর তো নেই অগত্যা মিষ্টির দোকানে গিয়ে রসগোল্লা, রাজভোগ, রসমালাই, চমচম, ল্যাংচা, কালাকাঁদ খেয়েই মন ভালো রাখতে হয়েছে। এখনও তাই করতে হয়। কিন্তু এরকম অসাধারণ সাবেকি বাঙালি মিষ্টিগুলি যদি বাড়িতে তৈরি করা যেত? করাই যায়। ঝামেলাও বিশেষ নেই। উপকরণগুলিও একদম সাধারণ।
রাজভোগ
উপকরণ
ছানা- ২০০ গ্রাম,সুজি- ১ টেবিল চামচ, জল- ২ কাপ, চিনি- ৫০০ গ্রাম, কেশর রং- এক চিমটি, কেশর- এক চিমটি, এলাচ গুঁড়ো- এক চিমটি, আমন্ড, পেস্তা গুঁড়ো
প্রণালী
খুব ভালো করে ছানার জল ঝরিয়ে নিন। একফোঁটা জলও যেন ছানায় না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবার একটি পাত্রে ছানাটি ময়ান দিন। অন্তত পাঁচ মিনিট ছানা ময়ান দিতে হবে। দেখবেন ছানা একেবারে মিহি হয়ে যাবে। এবার এতে দিন এক চামচ সুজি, এক চিমটি কেশর রং, এক চিমটি এলাচ গুঁড়ো। খুব ভালো করে মাখুন। মিশ্রণটি একেবারে স্মুদ হয়ে যাবে। হাতে এবং পাত্রে একটুও ছানার মিশ্রণ লেগে না থাকলে বুঝবেন মাখাটি সঠিক হয়েছে।
এবার ডো-টি থেকে লেচি কেটে নিন। হাতে লেচিগুলি গোল করে দুই হাতে তেলো দিয়ে সেটি চেপটে দিন। ভিতরে দিয়ে দিন আমন্ড, পেস্তার গুঁড়ো।বাদামের পুর ভরা হয়ে গেলে গোল করে লেচি করে নিন। সব কটি গোল তৈরি হয়ে গেলে এক পাশে রেখে দিন। এবার রসের পালা। একটি পাত্রে চিনি দিয়ে তাতে জল দিয়ে দিন। সঙ্গে মিশিয়ে দিন কেশর।
শিরার জল ফুটতে শুরু করলে কাঁচা রাজভোগ মানে গোলাকারা ছানার লেচিগুলি সাবধানে একটা একটা করে ওই গরম জলে ছেড়ে দিন। পাত্র ঢাকা দিয়ে মিনিট ১৫ ফোটান। পনেরো মিনিট পরে ঢাকনা খুলে দেখে নিন। রাজভোগ তৈরি। গরম ঠান্ডা যেভাবে খুশি খান।
রস মালাই
উপকরণ
ছানা,দুধ,জল,চিনি,কেশর,এলাচ গুঁড়ো, পেস্তা, আমন্ড, কাজু গুঁড়ো
প্রণালী
পাতলা কাপড়ে চিপে ছানার জল খুব ভালো করে ঝরিয়ে নিন। এবার ছানা দশ মিনিট ধরে ভালো করে ময়ান দিন। দেখবেন ছানা একেবারে মিহি হয়ে গেছে। এবার তা থেকে নিজের পছন্দ মতো আকারের লেচি কেটে রাখুন। পাত্রে জল এবং চিনি নিয়ে রস তৈরি করুন। মিনিট দশেক পর জল ফুটতে শুরু করলে ধীরে ধীরে তাতে ছানার লেচি গুলি ছাড়তে থাকুন। খুব সাবধানে ছাড়বেন। খেয়াল রাখবেন যাবে ভেঙে না যায়। পাত্রের ঢাকনা বন্ধ করে দিয়ে পনেরো মিনিট ধরে ছানার বলগুলি ফোটান। পনেরো মিনিট পর সেগুলি জল ঝরিয়ে নামিয়ে নিন। এবার রাবড়ির পালা। রাবড়ি তৈরি করা খুব সহজ কিন্তু এতে খুব ধৈর্য্য লাগে। দুধ গরম করতে থাকুন। পাঁচ মিনিট অন্ত দেখবেন তাতে ঘন সর পড়ছে। কাঠের খুন্তি দিয়ে সেই সরগুলি ওই পাত্রেরই সাইডে সরিয়ে দিন। দুধের পাত্রের কানায় সর জমতে থাকবে। এভাবে অনেকটা সর জমাতে থাকুন। পাশাপাশি দেখবেন দুধও খুব ঘন হয়ে যাচ্ছে। এতে আগে থেকে দুধে গোলা কেশর দিয়ে দিন। ফের দুধ নাড়াচাড়া করুন এবং সর জমাতে থাকুন। পরিমাণ মতো রাবড়ি হয়ে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। রাবড়ি ঠান্ডা করে নিন। এবার পাত্রে ছানার বলগুলি রেখে তার উপরে রাবড়ি ছড়িয়ে দিন।
তার উপর ছড়িয়ে দিন ভাঙা কাজু, পেস্তা, আমন্ড। তৈরি হয়ে গেল রসমালাই। তবে তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রসমালাই খাবেন না। রাবড়ির দুধ রসগোল্লার মধ্যে ঢুকে গেলে তার স্বাদ সবচেয়ে ভালো লাগে। এর জন্য রসমালাই তৈরির পর সেটিকে বেশ কয়েক ঘণ্টা মজানোর জন্য রেখে দিন।
কালাকাঁদ
উপকরণ
ছানা- ২ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক- এক টিন, গুঁড়ো দুধ- ২ টেবিল স্পুন, আমন্ড, কাজু, পেস্তার গুঁড়ো
প্রণালী
খুব ভালো করে ছানার জল ঝরিয়ে নিন। পাত্রে ছানা, কনডেন্সড মিল্ক এবং গুঁড়ো দুধ দিয়ে মিডিয়াম আঁচে মেশাতে থাকুন। ক্রমশ দেখবেন মিশ্রণটি ঘন হয়ে যাচ্ছে। মিশ্রণটি ফুটতে শুরু করলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এবার মিশ্রণটিকে একটি চৌকো পাত্রে রাখুন। খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন চৌকো হয়। খুন্তি দিয়ে চেপে চেপে আকার গড়ে নিন। উপরে ছড়িয়ে দিন কাজু, পেস্তা, আমন্ডের গুঁড়ো। উপর দিয়ে সেগুলি হালকা করে চেপে দিন। এবার সম্পূর্ণ জিনিসটি ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। ঠান্ডা হযে গেলে ছুরি দিয়ে কালাকাঁদের আকারে মিষ্টি কেটে নিন।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-09-09 11:24:11
Source link
Leave a Reply