সমস্যাঃ আমার বয়স ২৪ বছর। আমি অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ি। দেড় মাস আগে আমার মাথা ঘোরা, শরীর দুর্বল, অস্থির ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা, কানে কম শোনা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তখন আমি জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিই। তিনি প্রথমে অ্যাকোরেন-২৫ এবং টেনিল-৩ খাওয়ার পরামর্শ এবং কিছু পরীক্ষা করতে দেন। যেমন রক্ত, মূত্র, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম-এগুলোর রিপোর্ট দেখালে বলেন, ভালো। ওষুধ খেয়ে আমার সব সমস্যা ভালো হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পর মাথা ঘোরাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আমি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আবার চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করি। তিনি তখন আগের ওষুধ বাদ দিয়ে অ্যামডোকাল-৫ খেতে দেন। আমার রক্তচাপ প্রথম থেকেই ১৪০/১০০, ১৩০/৯০, ১৪০/৯০-এ ওঠা-নামা করে। আমি বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে আছি। আমার পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
মো· আসাদুজ্জামান
জয়পুরহাট।
পরামর্শঃ আমার দৃষ্টিতে উচ্চ রক্তচাপের রোগী হওয়াটা হলো মনের একটি দৃষ্টিভঙ্গি মাত্র। কেউ হয়তো হার্টের বাইপাস সার্জারি করেছে, দিনে আটটি করে ওষুধ খায়, অথচ জিজ্ঞেস করলে বলে, ‘আমার বিশেষ কোনো অসুবিধা নেই।’ এরা দুনিয়ার সব কাজকর্ম হাসিমুখে করে বেড়ায় আর সন্ধ্যাবেলায় পরিবার-পরিজনকে নিয়ে দিব্যি বেড়াতে যায়। অসুখ ও ওষুধকে তারা মাথার ওপর উঠতে দেয়নি, পায়ের কাছে দাবিয়ে রেখেছে। আবার অনেকেই আছেন, রোগী হওয়ার জন্য সব সময় প্রস্তুত। আসলে উচ্চ রক্তচাপের রোগী হতে না চাইলে সহজে কেউ আপনাকে রোগী বানাতে পারবে না একগাদা অসুখ দিয়েও। আর রোগী হতে চাইলে ভালো করতে পারবেন না নামকরা বিশেষজ্ঞরাও। শরীরের নাম মহাশয়, যা সহায় তাই সয়। কথাটি কিন্তু খুব ভুল নয়। শুধু প্রয়োজন ইচ্ছা ও তার প্রয়াস। মাত্র ২৪ বছর বয়সে সামান্য উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে ভয় পাওয়াটা আসলে ঠিক নয়। আপনি অ্যামডোকাল-৫ নামের যে ওষুধটি খাচ্ছেন সেটিই ধৈর্য ধরে খেতে থাকলে এবং লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের যে কথাগুলো আগেই বলা হয়েছে, সেটি মেনে চললেই আপনাকে আর রোগী হতে হবে না।
পরামর্শ দিয়েছেন
আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী
সহযোগী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ০৮, ২০০৯
Leave a Reply