করোনা থেকে সেরে ওঠার পরের কয়েকটা মাস রোগীকে খুব সাবধানে রাখতে বলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফুসফুস কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা পরীক্ষা করে জানার পরে শুরু হয় চিকিৎসা। চিকিৎসা চলাকালীন অতিরিক্ত স্টেরয়েড নেওয়ার কারণে তার ফল রয়ে যায় দীর্ঘ দিন। অতিরিক্ত চুল পড়া ইত্যাদি সমস্যার পাশাপাশি আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানসিক সমস্যা তৈরি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। সম্প্রতি জানা যাচ্ছে যে, করোনা পরবর্তী সময়ে রোগীদের কিডনির সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এমনও দেখা গেছে যে, ইতিমধ্যে করোনায় ভুগেছেন, তেমন মানুষের কিডনির সমস্যা বেড়েছে বহু গুণ।
সম্প্রতি আমেরিকার সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি কী বলছে?
সম্প্রতি আমেরিকার সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হচ্ছে, প্রত্যেক ১০,০০০ রোগীর মধ্যে অন্তত ৮ জন করে রোগীর কিডনির সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে নিয়মিত ডায়ালিসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন করা ছাড়া উপায় থাকছে না কোনও। এবং এই বেশি পরিমাণে রৈর হারের সংখ্যা করোনা থেকে সুস্থ রোগীর ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে। ১০,০০০ রোগীর মধ্যে ৮ জনের এ রকম গুরুতর অবস্থা হওয়াকে মোটেও ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না। গবেষকদের বক্তব্য, এই সংখ্যাটা খুব কম নয়। করোনা যে ভাবে গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে এবং এই হারে যদি কিডনির সমস্যাও রোগীদে মধ্যে দেখা যায়, তা হলে এক সময় কিডনির সমস্যা নিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যাটা বেশ বেড়ে যাবে।
কিডনির কাজই হল রক্তকে পরিশোধন করা
করোনার সময়ে চিকিৎসা চলাকালীন প্রচুর ওষুধ খাওয়াকেও একটা কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা। কিডনির কাজই হল রক্তকে পরিশোধন করে শরীরের অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেওয়া। বর্জ্য এবং টক্সিন বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রেই যদি গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে শরীরে আরও নানা ক্ষতির সৃষ্টি হয়।
ছবি সৌজন্য: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
কিডনি ভালো থাকবে কী ভাবে?
কিডনির রোগ নিঃশব্দে শরীরের ক্ষতি করে। কিন্তু সচেতন থাকলে কিছুটা হলেও এড়ানো যায় সমস্যা।
- প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়া বাঞ্ছনীয়। জল, ফলের রস, লস্যি ইত্যাদি খেয়ে শরীরকে যতটা সম্ভব হাইড্রেটেড রাখতে হবে।ব্লাড প্রেশার মনিটরিং জরুরি। রক্তচাপের সমস্যা থাক বা না থাক, প্রত্যেক সপ্তাহে বা ১৫ দিন অন্তর ব্লাড প্রেশার চেক আপ করাতে হবে।
- রোজকার খাদ্যতালিকায় থাক প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। বেশি তেল, মশলা দেওয়া খাবার না খেয়ে, বাড়ির হালকা রান্নাই শরীরের ওজন যত বেশি হবে, তা অনেক সময়ে ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দেয়।
- ফলে শারীরচর্চা এবং ঠিক মতো খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যিক। শরীরের ওজন যত বেশি হবে, তা অনেক সময়ে ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দেয়। ফলে শারীরচর্চা এবং ঠিক মতো খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যিক।
ছবি সৌজন্য: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
কী ভাবে করোনা রোগীরা নিজেদের খেয়াল রাখবেন?
করোনা থেকে সেরে উঠলেই নিশ্চিন্ত হওয়ার দরকার নেই। বরং আরও বেশি করে নিজের যত্ন নিন। করোনা শরীরের ভেতরে কী কী গভির প্রভাব ফেলে রেখে গেছে, তা বুঝতে সময় লাগে। যেমন প্রাথমিক ভাবে চরম দুর্বলতা একটা লক্ষণ। সেই দুর্বলতা যদি বা ধীরে ধীরে কাটীয়ে ওঠা যায়। কিন্তু তার পরেও নিয়মিত চেক আপ করতে হবে। ব্লাড প্রেশার, সুগার, লাং টেস্ট তো জরুরিই, পাশাপাশি যদি গোটা শরীরের চেক আপ করা যায়, তা হলে ভালো। এবং অন্তত শুরুর দিকে প্রতি ৬ মাস অন্তর তা করা জরুরি। করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব শরীরে এমন রোগের সৃষ্টি করছে, রোগীর শরীরে হয়তো যার কোনও বালাই ছিল না কখনও। তাই করোনা সারলেও সচেতন হোন।
ছবি সৌজন্য: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-09-06 16:43:22
Source link
Leave a Reply