সম্প্রতি কার্ডিয়োলজিস্ট ডা. নারায়ণ গাড়কর বলছেন, কোনও মানুষের যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে, তা হলে তা ডেকে আনে নানা বিপদ। সেখান থেকেই হার্ট ফেলিয়োর, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হওয়া অস্বাভাবিক নয়। প্রত্যেক বছর বিশ্বে ৮.৫ মিলিয়ন মানুষ শুধু মাত্র হাই ব্লাড প্রেশার থেকে জন্ম নেওয়া নানা রকম সমস্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে।
Hypertension-এর সময়েও বাড়ে রক্তচাপ। সেই সময়ে সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার ১৪০ এবং ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেশার যদি ৯০-এর ওপরে যায়, তা হলে অবশ্যই ওষুধ খাওয়া বাঞ্ছনীয়। যে কোনও ধরনের চাপই কার্ডিয়োভাসকুলার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
Hypertension-এর মাথা চাড়া দেওয়ার কারণ
Hypertension-এর মতো সমস্যা শিকড় ছাড়িয়ে ওঠার পেছনেও আছে নানা বৈজ্ঞানিক কারণ। এমন ছোট ছোট নানা কারণ এবং রোজকার জীবনে বিভিন্ন অভ্যেস আছে, যা কিন্তু পরোক্ষে হাইপার টেনশনকেই আমন্ত্রণ জানায়। যেমন রোজ ততিরিক্ত পরিমাণে নুন খাওয়া, তামাক খাওয়ার অভ্যেস এবং খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে পটাশিয়াম না থাকা। এ ছাড়া পারিবারিক ইতিহাস, অত্যধিক ওজন বেড়ে যাওয়া, ওবেসিটির প্রবণতা কিংবা একেবারে শারীরচর্চাহীন জীবনযাপনও হাইপারটেনশনকে ডেকে আনতে পারে।
Hypertension-এর লক্ষণ
- কেউ যদি লক্ষ করেন, অল্পতেই তিনি হাঁপিয়ে যাচ্ছেন কিংবা নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে, তখনই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি মাথা ধরা, ক্লান্ত বোধ করা, মাথা ঘোরা, বুকে চাপ ধরা, শ্বাসকষ্ট, বাঁ কাঁধে যন্ত্রণা হলেও তা ফেলে রাখা উচিত নয়।
- হাইপার টেনশনই আদতে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়য়ে দেয়। ভারতে বেশির ভাগ মানুষ এটাই বুঝতে পারেন না যে তাঁরা হাইপার টেনশনের শিকার। ফলে রোগ ধরা পড়ে দেরিতে। এমনকি তা প্রাণ সংশয়ের দিকেও এগিয়ে যায় সহজে।
- হাইপার টেনশনের মাধ্যমে বাড়তে থাকা কো-মর্বিডিটি রেট কমাতে প্রয়োজন স্ক্রিনিং। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দরকারি।
হাইপার টেনশন থেকে বাঁচতে কী করা বাঞ্ছনীয়?
- সবচেয়ে আগে নিজেকে লক্ষ করুন। হাঁপ ধরা, প্রায়শই মাথা যন্ত্রণা, বুকে অল্প অল্প চাপ ধরে, কাঁধে ব্যথা জাতীয় সমস্যা মানেই তা সাময়িক এটা ভাববেন না। এ রকম কোনও লক্ষণ বুঝতে পারলে এক মুহূর্ত দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- হাইপার টেনশনের ইতিহাস থাকুক বা না থাকুক, প্রত্যেক মানুষেরই নিয়মিত ব্লাড প্রেশার চেক করা উচিত। এমনিতে শারীরিক কোনও সমস্যা না থাকলে বা ধরা না দিলে শরীর নিয়ে কারওরই মাথা ব্যথা থাকে না। ফলে সবচেয়ে অবহেলিত হয় শরীর। তাই নিয়ম মাফিক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা জরুরি। নুন খাওয়া কমানো জরুরি। রোজকার রান্নায় নুন থাকেই। তার পাশাপাশি খেতে বসে পাতে যদি অনেকটা নুন থাকে, তা হলে বিপদ বাড়বেই।
- এ ছাড়াও সময় এসেছে নিজের নুন বেছে নেওয়ার। নুনেরও নানা ধরন হয়। সাধারণ আয়োডিন যুক্ত নুন রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কাঁচা খেতে হলে পিঙ্ক সল্ট জাতীয় নুন রাখুন পাতে। এই নুন এমনিতেই লাগে কম, তুলনায় কম ক্ষতিকারক। খেয়াল রাখুন, প্রত্যেক দিনের নুন খাওয়ার পরিমাণ যেন ৬ মিলিগ্রামের বেশি না হয়। গ্রাম মেপে নুন খাওয়া হয়তো অনেক সময়ে হয় না। সে ক্ষেত্রে ২ চা চামচের বেশি নুন না খাওয়াই শ্রেয়।রান্না বা পাতে নুন বেশি না খাওয়া হলেও নিজের অজান্তে বিপুল পরিমাণে নুন ঢোকে ফাস্ট ফুডের মাধ্যমে।
- চিপস, আচার জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়া ভালো। কারণ এই ধরনের খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে নুন। আবার কোনও খাবার ভালো রাখার সময়সীমা বাড়াতে প্যাকেটজাত করার সময়ে প্রচুর নুন ব্যবহার করা হয়। সেই ধরনের খাবারও এড়িয়ে যেতে হবে।
- খাবারে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। যতটা সম্ভব তরতাজা ফল, কম মশলা দেওয়া হালকা রান্না খাওয়া দরকার।
- ডায়েটের সঙ্গে নজর থাকুক শারীরচর্চায়। অল্প যোগব্যায়াম দিয়ে শুরু করা যায়। ধীরে ধীরে রোজ নিয়ম করে এক্সারসাইজ করতে হবে। ব্যায়াম করার অসুবিধে থাকলে অন্তত রোজ নিয়ম করে হাঁটতে হবে।
- হাইপার টেনশনকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় রোজকার কিছু অভ্যেসে বদল আনলে। তার সঙ্গে চলতে থাকুক নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা। তা হলেই রোগ নির্ণয় হবে সহজে।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-09-03 10:04:29
Source link
Leave a Reply