হাইলাইটস
- উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন রীতিমতো ঘরে ঘরে। নানা রকম সাবধানতা অবলম্বন করেও কমছে না রক্তচাপ।
- অগত্যা ভরসা করতে হচ্ছে ওষুধের ওপর। প্রেশার মাপতে গিয়েই অনেক সময়ে বুক ঢিপ ঢিপ। রক্তচাপ ঠিক আছে তো? শরীরের রক্তচাপ ঠিক থাকুক না থাকুক, মনের চাপ নিঃসন্দেহে লঘু করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
- কারণ সম্প্রতি রক্তচাপের মাত্রা বদলেছে WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
নতুন জারি করা WHO-র নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, সাধারণ রক্তচাপের উচ্চ মাত্রা ১৪০। এবং নিম্ন মাত্রা ৯০। অর্থাৎ ১৪০/৯০-এর বেশি হলে তা এ বার থেকে উচ্চ রক্তচাপ বলে ধরা হবে। তবে কারও যদি হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকে বা রিস্ক ফ্যাক্টর থাকে, তা হলে তাঁর ক্ষেত্রে সাধারণ রক্তচাপের মাত্রা ১৩০ ধরাই ভালো। এর বেশি হলেই ওষুধ ও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে, কখন চিকিৎসা করা উচিত, কেমন ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত এবং কত দিন অন্তর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ-ও জানিয়েছে, হাই প্রেশারের ওষুধ হিসেবে একটি মাত্র ড্রাগ না নিয়ে বরং দু’ধরনের ওষুধের কম্বিনেশন খেলে ভালো হবে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক ২০১৬ সালে হাইপারটেনশনের চিকিৎসা সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা জারি করেছিল, নতুন গাইডলাইন যে তার চেয়ে বেশ আলাদা এবং গুরুত্বপূর্ণও, এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই। পুরনো নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল যাঁদের রক্তচাপের উচ্চ মাত্রা ১৩০-১৩৯ এবং নিম্ন মাত্রা ৮০-৮৯, তাঁদের অন্তত এক বছর অন্তর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। আর কার্ডিয়োভাসকুলার সমস্যা থাকলে এক বছর পর পর ডাক্তার না দেখিয়ে আরও তাড়াতাড়ি দেখাতে হবে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ভারতে যাঁরা হাই প্রেশারের সমস্যায় ভোগেন, হয় তাঁরা ঠিক্টহাক চিকিৎসা পান না, নয়তো তা পেলেও চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলতে পারেন না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় না। এমনও দেখা গিয়েছে যে, মাত্র এক তৃতীয়াংশ রোগীই হাই ব্লাদ প্রেশার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
আরও পড়ুন
কী বলছে WHO-এর নির্দেশিকা?
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু নিয়মে এসেছে বদল। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী।
- যে সমস্ত রোগীর ইতিমধ্যেই হৃদযন্ত্রের কোনও সমস্যা আছে বা ডায়াবিটিস কিংবা কিডনির সমস্যা আছে, তাঁদের সিস্টোলিক লেভেল ১৩০ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- টু ড্রাগ কম্বিনেশন থেরাপি নেওয়াই ভালো। এর জন্য যে দুটো ওষুধ আলাদা আলাদা করে নিতে হবে, তা নয়। বরং একটা পিলেই দুটো ড্রাগের কম্বিনেশন আছে, এ রকম ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
- যাঁদের ইতিমধ্যেই শরীরে নানা রোগের ইতিহাস আছে এবং বর্তমানেও নানা সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সিস্টোলিক প্রেশার ১৩০-এ নামিয়ে আনা লক্ষ্য হওয়া উচিত। যাঁদের তেমন কোনও সমস্যা নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে আদর্শ রক্তচাপের মাত্রা হবে ১৪০/৯০।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসা শুরু হলে এবং ওষুধের পরিবর্তন হলে প্রথম দিকে প্রত্যেক মাসে চেক আপ করা শ্রেয়। তার পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে এলে তিন থেকে চার মাস অন্তর চেপ আপ করানো, ডাক্তারকে দেখানো ইত্যাদি করলেই হবে।
রক্তচাপ বাড়ার সমস্যা বা ইতিহাস যদি কারও না-ও থাকে, তা হলেও অনেক সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাড়তে পারে রক্তচাপ। তেমন হলেও তা ফেলে রাখা উচিত নয়। ১২০/৮০-র মাত্রাকে এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাড়িয়ে ১৪০/৯০ করায় হয়তো অনেকের কাছে তা স্বস্তির বাতাস এনেছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, রক্তচাপ সামান্য বাড়লে বা ক্রমাগত বাড়তে-কমতে থাকলে তাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে, বরং সময় থাকতে সচেতন হওয়াই সুস্থ থাকার একমাত্র উপায় হতে পারে।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-09-01 12:38:17
Source link
Leave a Reply