গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণে ভরপুর
গোটা হোক কিংবা গুঁড়ো, লবঙ্গ স্বাদ ছাড়াও খাবারে যোগ করে কিছু পুষ্টিগত গুণাগুণ। এক চা চামচ গুঁড়ো লবঙ্গ সাধারণত পরিমাণে ২ গ্রাম হয়। তাতে ক্যালোরি থাকে ৬ গ্রাম, এক গ্রাম করে কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার। এ ছাড়া প্রত্যেক দিনে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজের ৫৫% এবং ভিটামিন কে-টু-এর ২% আসে মাত্র ওই এক চা চামচ লবঙ্গ থেকেই। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাধারণত অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গে ইউজিনল নামে এক ধরনের পদার্থ থাকায় তা কাজ করে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম লবঙ্গ
ইদানীং কালে বহু ঘরে বাড়ছে ক্যানসার। বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, এমন দিন আসতে আর বাকি নেই, যখন প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এক জন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হবেন। একটি টেস্ট টিউব পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, লবঙ্গ যে কোনও ধরনের টিউমরের গ্রোথ বাড়তে দেয় না। এমনকি শরীরে যদি কোনও ক্যানসারাস সেল বা কোষ থাকে, তা হলে সেই কোষগুলি নিষ্ক্রিয় করে মেরে ফেলার কাজেও সাহায্য করে লবঙ্গ। তবে এখানে বলা দরকার, এই ধরনের পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় লবঙ্গে পাওয়া ইউজিনল কিংবা ক্লোভ অয়েলের মতো লবঙ্গের নির্যাস। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ইউজিনল শরীরে প্রবেশ করলে তা লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই ক্যানসারের আশঙ্কা এড়াতে গিয়ে মুঠো মুঠো লবঙ্গ খেলেই চলবে না।
ব্যাকটিরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে লবঙ্গ
লবঙ্গে থাকে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান। ফলে লবঙ্গ খেলে তা শরীরে থাকা বিভিন্ন মাইক্রো অর্গ্যানিজমকে অর্থাৎ নানা ধরনের ব্যাকটিরিয়াকে বাড়তে দেয় না লবঙ্গ। ঠিক এই কারণেই দাঁতে ব্যাকটিরিয়া-জনিত কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকেরা এমন ধরনের ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দেন যার মধ্যে রয়েছে লবঙ্গের তেল। অনেক সময়ে দাঁতের ব্যাকটিরিয়া-জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে ওষুধে লবঙ্গের গুঁড়ো কিংবা নির্যাস ইত্যাদি মেশানো থাকে। আবার আর একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, যদি লবঙ্গ, টি ট্রি অয়েল এবং বেসিল মিশিয়ে কোনও প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার বা ক্লিনার তৈরি করা যায়, তা হলে তা খুব উপকারী। টানা ২১ দিন বা তিন সপ্তাহ এই লিকুইড ব্যবহার করলে মাড়ি শক্ত হবে, ভালো থাকবে দাঁত।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে লবঙ্গ
নিয়মিত লবঙ্গ খেলে, তার সাহায্যে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে রক্তের শর্করা। নানা পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, লবঙ্গের ভেতপরে যে যে পদার্থ আছে, তা আদতে শরীরের ভেতরে ইনসুলিন সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। তার ফলে সহজেই নিয়ন্ত্রণে আসে রক্তে চিনির পরিমাণ।
হাড় মজবুত করে লবঙ্গ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বহু মানুষের শরীরে জাঁকিয়ে বসে অস্টিয়োপোরোসিসের মতো নানা রোগ। এতে হাড় ভঙ্গুর হয়, ক্ষয় পায় সহজে। লবঙ্গের মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজের মতো উপাদান এই ভঙ্গুরতাকেই কমিয়ে দেয় অনেকাংশে। ফলে এ কথা সহজেই বলা যায় যে, যদি রোজ লবঙ্গ খাওয়া হয়, তা হলে হাড় মজবুত হয় এবইং অকালে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
পাকস্থলী ভালো রাখে লবঙ্গ
লবঙ্গের নানা গুণের মধ্যে অন্যতম হল তা পাকস্থলী ভালো রাখতে সক্ষম। ফলে পেপটিক আলসার কিংবা স্টমাক আলসারের মতো যন্ত্রণা থেকে উপশম দিতে পারে লবঙ্গ। স্বাভাবিক ভাবেই নিয়মিত লবঙ্গ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আবার খুসখুসে কাশি এবং গলা ব্যথা উপশমেও সাহায্য করে। সর্দি-কাশি, ভাইরাল ইনফেকশন, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি থেকে সেরে উঠতে লবঙ্গের জুড়ি মেলা ভার। রাতে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়ারিয়া, অম্লতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার হজম বাড়াতেও সাহায্য করে লবঙ্গ।
Lifestyle News in Bengali, লাইফস্টাইল খবর, Health Tips, Fashion Trends and Tips in Bangla
2021-08-31 15:13:29
Source link
Leave a Reply